বর্তমানে স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার হওয়ায় আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো আবার ফিরে আসছে বলে জানিয়েছে বিজিএমইএ
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পোশাক খাতে যে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে, তাতে অন্তত ৪০ কোটি ডলারের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিএমইএ।
পোশাক রফতানিকারকদের সংগঠনটি শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানানোর পাশাপাশি কিছু দাবি তুলে ধরেছে।
বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে আয়োজিত এ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, শ্রমিক অসন্তোষের ফলে ৪০০ মিলিয়ন ডলারের পোশাক উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। প্রতিনিয়ত ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে বলে জানতে পারছি। এটি আরও বাড়বে।
দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজীপুর; ঢাকার সাভার, আশুলিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে পোশাক শ্রমিকরা নানা দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। কোথাও কোথাও সড়ক অবরোধের পাশাপাশি সহিংসতার ঘটনাও ঘটেছে।
এই পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটিয়ে পোশাক খাত বর্তমানে ‘স্থিতিশীলতা অর্জন করেছে’ মন্তব্য করে রফিকুল বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং শ্রমিক অসন্তোষের কারণে কিছু কার্যাদেশ প্রতিযোগী দেশগুলোতে স্থানান্তরিত হয়েছে।
তবে বর্তমানে স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার হওয়ায় আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো আবার ফিরে আসছে বলে জানান তিনি।
বিজিএমইএ সভাপতি রফিকুল বলেন, বিজিএমইএ বোর্ডের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সরকারের নির্দেশনায় পোশাক কারখানাগুলোর নিরাপত্তায় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথবাহিনী গঠন হয়েছে এবং যৌথবাহিনী গার্মেন্টস অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিয়মিতভাবে টহল পরিচালনা করেছে। বিজিএমইএ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় কমিউনিটি পুলিশিং চালু করেছে।
পোশাক কারখানাগুলোতে অগাস্ট মাসের বেতন পরিশোধে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়ায় বিজিএমইএ থেকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা চেয়ে অর্থ উপদেষ্টাকে চিঠি দেওয়া হয় ও বিজিএমইএ বোর্ড বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে দেখা করেন। বিজিএমইএ’র অনুরোধের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক অগাস্ট মাসের বেতনভাতা পরিশোধের জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে।
শ্রম অসন্তোষে আশুলিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩৯টি পোশাক কারখানার সেপ্টেম্বর মাসের বেতনভাতা পরিশোধের ক্ষমতা ছিল না জানিয়ে তিনি বলেন, ওই সব কারখানা যাতে বিপদে না পড়ে, সেজন্য তাদেরকে সুদহীন সহজ শর্তের ঋণ দিতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
রফিকুল বলেন, পোশাক শিল্পের ৪০ লাখ শ্রমিক যাতে ন্যায্য মূল্যে পণ্য পান, সেজন্য তাদেরকে টিসিবির কর্মসূচিতে নেওয়া হয়েছে।
শ্রমিক অসন্তোষের কারণে অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তিন মাস যাতে কোনো কারখানায় গ্যাস-বিদ্যুতের লাইনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করা হয়, সেজন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে ব্যাংক সুদের হার একক অংকে নামিয়ে আনারও আহ্বান জানান।