
বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টর ধ্বংস করার জন্য দেশি এবং আর্ন্তজাতিক চক্রান্ত রয়েছে বলে মনে করেন ২০ গার্মেন্টস শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। তারা বলেন, বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টর ধ্বংসের আভাস আমারা পেয়েছি। এজন্য একটি চক্র বিভিন্ন গুজব ছড়ানোসহ শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন করছে। যাতে করে গার্মেন্টস সেক্টরে কোনো উৎপাদন না হয়। তবে যে কোনো চক্রান্ত রুখে দিয়ে গার্মেন্টস সেক্টরকে রক্ষা করার অঙ্গিকার করেছেন গার্মেন্টস শ্রমিক সংগঠনগুলো নেতারা। গতকাল রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। সংবাদ লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি অ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের ফলে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হওয়ার পর মালিকদের নেতৃত্বেরও পরিবর্তন হয়। ফলে এক ধরনের অস্থিরতা দেখা দেয়। শ্রমিকরা তাদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন। তবে সেগুলোর পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। সেকারণে বাধ্য হয়ে শ্রমিকরা আন্দোলনে নামে। এ সময় শ্রমিকদের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবিও জানান তিনি। কেউ যেন গুজব ছড়িয়ে অস্থিরতা তৈরি করতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক হওয়ার কথাও বলেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ২৪ সেপ্টেম্বর ত্রিপক্ষীয় সভায় ১৮ দফা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির পরদিন অর্থাৎ ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে সব কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম চালু হয়। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় সেই ১৮ দফা বাস্তবায়ন হয়নি। দ্রুত ১৮ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানান তিনি। আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, ঝুট সন্ত্রাসী ও মালিকদের ভাড়াটিয়া গুন্ডাবাহিনী নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে মো. কাউসার হোসেন খান নামক একজন শ্রমিককে নির্মমভাবে হত্যা করে। শতাধিক শ্রমিক আহত হয়ে এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এই হত্যাকাণ্ডের দায়ে মালিকসহ দোষীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শান্তি দিতে হবে। এই হত্যাকাণ্ডের দায় সরকার ও মালিকদেরই নিতে হবে। নিহতদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ, আহতদের সুচিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। চাকুরিচ্যুত বন্ধ করতে হবে। সকল প্রকার বকেয়া পাওনা পরিশোধ করতে হবে। এছাড়া, আন্তর্জাতিক বাজার প্রতিযোগীতা ও জাতীয় অর্থনৈতিক বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ এই শিল্পের শ্রমিকদের উপর দমননীতির পথ পরিহার করে শ্রমিক শিল্প ও জাতীয় স্বার্থে সংশ্লিষ্ট সকলকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। বিভিন্ন সময় গুজব ছড়িয়ে ও নানারকম অপপ্রচার করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে মালিকরা বিশেষ ফায়দা লুটতে চায়, তা বন্ধ করতে হবে বলেও জানান তারা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি অ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ, গার্মেন্ট শ্রমিক এক্য ফোরামের সভাপতি সাবেক ছাত্র নেত্রী মোশরেফা মিশু, জাতীয় গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন, বাংলাদেশ গার্মেন্ট এণ্ড ইন্ডাসট্রিয়াল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আকতার বাংলাদেশ পোশাক শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি তৌহিদুর রহমান, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সহ-সভাপতি জলি তালুকদারসহ সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর মঈণ।