পুলিশের প্রতিক্রিয়া : আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার
আহত ও উত্তেজনা : পুলিশের শেল নিক্ষেপে বেশ কয়েকজন আহত হন, সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি
আন্দোলনকারীদের ঘোষণা : * কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা * প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ, পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে * সরকারি চাকরিতে প্রবেশের যৌক্তিক বয়স নির্ধারণে কমিটি গঠন করে প্রজ্ঞাপন * প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি, সন্তুষ্ট নন আন্দোলনকারীরা
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছরে উন্নীত করার দাবিতে রাজধানীতে আন্দোলনরত চাকরিপ্রত্যাশীদের ওপর পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার দুপুরে ঢাকার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারি বাসভবন যমুনার সামনে এ ঘটনা ঘটে। চাকরিপ্রত্যাশীদের দাবি, বর্তমান ৩০ বছর বয়সসীমা বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খায় না, কারণ শিক্ষাজীবন দীর্ঘ হওয়ায় অনেকেই চাকরির জন্য যথেষ্ট সময় পান না। এ কারণে বয়সসীমা ৩৫ বছর করার জন্য তারা আন্দোলন করছেন।
তবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বাসভবনে কর্মকর্তাদের সঙ্গে চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করা নিয়ে কয়েকজন আন্দোলনকারী দেখা করেছেন। কিন্তু আলোচনায় কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আলোচনা নিয়ে আন্দোলনকারীরা সন্তুষ্টও নন। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা থেকে বের হয়ে আন্দোলনকারীরা গণমাধ্যমকে এ কথা জানান।
গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে যমুনা থেকে বের হয়ে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন ৩৫ চাকরি প্রত্যাশী রাসেল আল মাহমুদ। তিনি বলেন, ভেতরে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। পরে তিনি মাইকে ঘোষণা দেন-আমাদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনার পর বলা হয়েছে, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীর সঙ্গে সেখানকার লোকজন কথা বলছেন। কিন্তু আমরা যখন বললাম, তার সঙ্গে আমরা কথা বলব, তখন তারা সময়ক্ষেপণ করছেন। তারা বলছেন, এখন তাকে পাওয়া যাবে কিনা, তিনি দফতরে আছেন কিনা, ইত্যাদি। মাহমুদের মাইকে ঘোষণার সময় আন্দোলনকারীরা ‘বয়স না মেধা, মেধা মেধা, ৩০ না ৩৫, ৩৫, ৩৫, আর নয় কালক্ষেপণ, আজই প্রজ্ঞাপন’ বলে সেøাগান দিতে থাকেন। অবস্থান ছাড়ার বিষয়ে রাসেল আল মাহমুদ বলেন, আমাদের কার্যক্রম চলমান থাকবে। সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত আমরা অবস্থান ছাড়ব না।
আন্দোলনকারীরা দাবি করেন, বর্তমান বয়সসীমা চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বাধা সৃষ্টি করে, বিশেষত যারা উচ্চশিক্ষা শেষ করতে দেরি করেন। তাই তারা চাচ্ছেন, বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে ৩৫ বছরে উন্নীত করা হোক।
আন্দোলনকারীরা জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে এই দাবি জানিয়ে আসছেন, তবে এখনো সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিশ্রুতি মেলেনি।
সকাল থেকে রাজধানীর শাহবাগে চাকরিপ্রত্যাশীরা একত্রিত হতে শুরু করেন। সকাল ১১টার দিকে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে মিছিল সহকারে অগ্রসর হন। বেলা দেড়টার দিকে যমুনার সামনে পৌঁছানোর পর পুলিশ তাদের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয়। আন্দোলনকারীরা তখন সেখানে অবস্থান নেন এবং বিভিন্ন সেøাগান দিতে থাকেন। তাদের দাবি আদায়ের জন্য তারা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা চাচ্ছিলেন।
আন্দোলনকারীদের দাবি আদায়ের জন্য তারা এক ঘণ্টার মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা না পেলে অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এই সময়ের মধ্যে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী আহত হন, যদিও তাদের মধ্যে কেউ গুরুতর আহত হয়নি বলে জানা গেছে।
আন্দোলনকারী রনি জোয়ার্দার জানান, আমরা শাহবাগ থেকে মিছিল করে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে এসেছি। আমাদের দাবি হচ্ছে, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করা হোক। কিন্তু এখানে এসে পুলিশ আমাদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে আমাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করছে।
এদিকে, পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে কোনো ধরনের সভা-সমাবেশ করার বিষয়ে আগে থেকেই নিষেধাজ্ঞা ছিল।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) মো. ইসরাইল হাওলাদার বলেন, আন্দোলনকারীরা পুলিশের নিষেধ অমান্য করে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয়। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছি। তবে খুব বেশি বল প্রয়োগ করা হয়নি।
আন্দোলনকারীদের দাবি, তারা কোনো ধরনের সহিংসতা করেননি এবং তাদের শান্তিপূর্ণভাবে নিজেদের দাবি জানানোই ছিল উদ্দেশ্য। তাদের মতে, এই আন্দোলন তাদের দীর্ঘদিনের সংগ্রামের ফল এবং তারা চাইছেন, সরকারের পক্ষ থেকে একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা তাদের সঙ্গে এসে আলোচনা করুন বা দাবি মেনে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে প্রচুর পুলিশ এবং সেনা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের এই পদক্ষেপের ফলে রাজধানীর বেইলি রোডসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। অফিসগামী মানুষ এই যানজটের কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েন।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তাদের দাবি মেনে নেয়া না হলে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন এবং আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, প্রজ্ঞাপন না পাওয়া পর্যন্ত তারা যমুনার সামনে তাদের অবস্থান বজায় রাখবেন।
অপরদিকে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের যৌক্তিক বয়সসীমা নির্ধারণের বিষয়ে সার্বিক বিষয়াদি পর্যালোচনা করে সুনির্দিষ্ট সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কমিটি গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। গতকাল সোমবার বিকেলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবার দাবি এবং চলমান আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের যৌক্তিক বয়সসীমা নির্ধারণের বিষয়ে সার্বিক বিষয়াদি পর্যালোচনা করে সুনির্দিষ্ট সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হলো। সাবেক সচিব ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে এ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে সদস্য সচিব হিসেবে থাকবেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব। প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, কমিটির আহ্বায়ক প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্য কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন। কমিটি আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে সরকার বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করবে।
সরকারি চাকরিতে বয়স বাড়ানোর আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এদিন প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার সামনে গেলে চাকরিপ্রার্থীদের টিয়ারশেল ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। পরে তারা যমুনার সামনে অবস্থান নেন। এ নিয়ে বিকেলে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান কমিটি গঠনের কথা জানান। এক প্রশ্নে জনপ্রশাসন সচিব বলেন, সরকারি চাকরিতে বয়স বাড়ানোর বিষয়ে যারা আন্দোলন করছেন, তাদের কোন আশ্বাস দিচ্ছি না, এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
আহত ও উত্তেজনা : পুলিশের শেল নিক্ষেপে বেশ কয়েকজন আহত হন, সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি
আন্দোলনকারীদের ঘোষণা : * কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা * প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ, পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে * সরকারি চাকরিতে প্রবেশের যৌক্তিক বয়স নির্ধারণে কমিটি গঠন করে প্রজ্ঞাপন * প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি, সন্তুষ্ট নন আন্দোলনকারীরা
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছরে উন্নীত করার দাবিতে রাজধানীতে আন্দোলনরত চাকরিপ্রত্যাশীদের ওপর পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার দুপুরে ঢাকার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারি বাসভবন যমুনার সামনে এ ঘটনা ঘটে। চাকরিপ্রত্যাশীদের দাবি, বর্তমান ৩০ বছর বয়সসীমা বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খায় না, কারণ শিক্ষাজীবন দীর্ঘ হওয়ায় অনেকেই চাকরির জন্য যথেষ্ট সময় পান না। এ কারণে বয়সসীমা ৩৫ বছর করার জন্য তারা আন্দোলন করছেন।
তবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বাসভবনে কর্মকর্তাদের সঙ্গে চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করা নিয়ে কয়েকজন আন্দোলনকারী দেখা করেছেন। কিন্তু আলোচনায় কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আলোচনা নিয়ে আন্দোলনকারীরা সন্তুষ্টও নন। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা থেকে বের হয়ে আন্দোলনকারীরা গণমাধ্যমকে এ কথা জানান।
গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে যমুনা থেকে বের হয়ে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন ৩৫ চাকরি প্রত্যাশী রাসেল আল মাহমুদ। তিনি বলেন, ভেতরে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। পরে তিনি মাইকে ঘোষণা দেন-আমাদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনার পর বলা হয়েছে, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীর সঙ্গে সেখানকার লোকজন কথা বলছেন। কিন্তু আমরা যখন বললাম, তার সঙ্গে আমরা কথা বলব, তখন তারা সময়ক্ষেপণ করছেন। তারা বলছেন, এখন তাকে পাওয়া যাবে কিনা, তিনি দফতরে আছেন কিনা, ইত্যাদি। মাহমুদের মাইকে ঘোষণার সময় আন্দোলনকারীরা ‘বয়স না মেধা, মেধা মেধা, ৩০ না ৩৫, ৩৫, ৩৫, আর নয় কালক্ষেপণ, আজই প্রজ্ঞাপন’ বলে সেøাগান দিতে থাকেন। অবস্থান ছাড়ার বিষয়ে রাসেল আল মাহমুদ বলেন, আমাদের কার্যক্রম চলমান থাকবে। সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত আমরা অবস্থান ছাড়ব না।
আন্দোলনকারীরা দাবি করেন, বর্তমান বয়সসীমা চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বাধা সৃষ্টি করে, বিশেষত যারা উচ্চশিক্ষা শেষ করতে দেরি করেন। তাই তারা চাচ্ছেন, বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে ৩৫ বছরে উন্নীত করা হোক।
আন্দোলনকারীরা জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে এই দাবি জানিয়ে আসছেন, তবে এখনো সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিশ্রুতি মেলেনি।
সকাল থেকে রাজধানীর শাহবাগে চাকরিপ্রত্যাশীরা একত্রিত হতে শুরু করেন। সকাল ১১টার দিকে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে মিছিল সহকারে অগ্রসর হন। বেলা দেড়টার দিকে যমুনার সামনে পৌঁছানোর পর পুলিশ তাদের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয়। আন্দোলনকারীরা তখন সেখানে অবস্থান নেন এবং বিভিন্ন সেøাগান দিতে থাকেন। তাদের দাবি আদায়ের জন্য তারা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা চাচ্ছিলেন।
আন্দোলনকারীদের দাবি আদায়ের জন্য তারা এক ঘণ্টার মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা না পেলে অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এই সময়ের মধ্যে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী আহত হন, যদিও তাদের মধ্যে কেউ গুরুতর আহত হয়নি বলে জানা গেছে।
আন্দোলনকারী রনি জোয়ার্দার জানান, আমরা শাহবাগ থেকে মিছিল করে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে এসেছি। আমাদের দাবি হচ্ছে, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করা হোক। কিন্তু এখানে এসে পুলিশ আমাদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে আমাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করছে।
এদিকে, পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে কোনো ধরনের সভা-সমাবেশ করার বিষয়ে আগে থেকেই নিষেধাজ্ঞা ছিল।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) মো. ইসরাইল হাওলাদার বলেন, আন্দোলনকারীরা পুলিশের নিষেধ অমান্য করে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয়। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছি। তবে খুব বেশি বল প্রয়োগ করা হয়নি।
আন্দোলনকারীদের দাবি, তারা কোনো ধরনের সহিংসতা করেননি এবং তাদের শান্তিপূর্ণভাবে নিজেদের দাবি জানানোই ছিল উদ্দেশ্য। তাদের মতে, এই আন্দোলন তাদের দীর্ঘদিনের সংগ্রামের ফল এবং তারা চাইছেন, সরকারের পক্ষ থেকে একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা তাদের সঙ্গে এসে আলোচনা করুন বা দাবি মেনে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে প্রচুর পুলিশ এবং সেনা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের এই পদক্ষেপের ফলে রাজধানীর বেইলি রোডসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। অফিসগামী মানুষ এই যানজটের কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েন।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তাদের দাবি মেনে নেয়া না হলে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন এবং আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, প্রজ্ঞাপন না পাওয়া পর্যন্ত তারা যমুনার সামনে তাদের অবস্থান বজায় রাখবেন।
অপরদিকে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের যৌক্তিক বয়সসীমা নির্ধারণের বিষয়ে সার্বিক বিষয়াদি পর্যালোচনা করে সুনির্দিষ্ট সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কমিটি গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। গতকাল সোমবার বিকেলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবার দাবি এবং চলমান আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের যৌক্তিক বয়সসীমা নির্ধারণের বিষয়ে সার্বিক বিষয়াদি পর্যালোচনা করে সুনির্দিষ্ট সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হলো। সাবেক সচিব ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে এ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে সদস্য সচিব হিসেবে থাকবেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব। প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, কমিটির আহ্বায়ক প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্য কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন। কমিটি আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে সরকার বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করবে।
সরকারি চাকরিতে বয়স বাড়ানোর আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এদিন প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার সামনে গেলে চাকরিপ্রার্থীদের টিয়ারশেল ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। পরে তারা যমুনার সামনে অবস্থান নেন। এ নিয়ে বিকেলে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান কমিটি গঠনের কথা জানান। এক প্রশ্নে জনপ্রশাসন সচিব বলেন, সরকারি চাকরিতে বয়স বাড়ানোর বিষয়ে যারা আন্দোলন করছেন, তাদের কোন আশ্বাস দিচ্ছি না, এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।