তীব্র তাপপ্রবাহ : কমেছে দুধ ডিম মাংস উৎপাদন

আপলোড সময় : ০৩-০৫-২০২৪ ০৫:৪৮:০৭ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০৩-০৫-২০২৪ ০৫:৪৮:০৭ অপরাহ্ন

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জের ওপর দিয়ে বয়ে চলছে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ। প্রচণ্ড গরমে মানুষের পাশাপাশি গবাদিপশুরও ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। স্বাভাবিকভাবে খেতে পারছে না খাবার। ঘরে বাইরে কোথাও কুলাতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। আবার হিটস্ট্রোকে মারাও যাচ্ছে গবাদিপশুগুলো। ফলে কমে যাচ্ছে ডিম, দুধ ও মাংসের উৎপাদন। তবে কৃত্রিম উপায়ে এসব খামার শীতল রাখার চেষ্টা করছেন খামারিরা।  
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশের দুগ্ধ ভাণ্ডার বলে খ্যাত সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ি, রেশমবাড়ি, রাউতারা, পোতাজিয়াসহ মিল্কভিটার আওতাভুক্ত বিভিন্ন খামারের গাভি স্বাভাবিক খাবার খেতে পারছে না। ফলে দুধ উৎপাদন ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ কমে গেছে। 
রেশমবাড়ী এলাকার খামারি মিজানুর রহমান ফকির বলেন, আমার খামারে ৯০টি গরুর রয়েছে। গরমে একটি গাভি মারা গেছে। প্রায় সবগুলোর পা জড়িয়ে গেছে (ঘা হয়েছে)। দুধের উৎপাদন কমেছে প্রায় ৪০ শতাংশ। আগে যেখানে ১০০ লিটার দুধ পেতাম সেখানে ৬০ লিটার হচ্ছে। হোসেন আলী ফকির ও বাদশাসহ একাধিক খামারির সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, প্রচণ্ড গরমে খামারে বা বাথানে কোথাও ঠিকমতো থাকতে পারছে না গরুগুলো। জ্বর, ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ঠিকমতো খাবারও খাচ্ছে না। ফলে দুধের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। এদিকে উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাঘাবাড়ি দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাত কারখানা মিল্কভিটায় দুধ সরবরাহও কমে গেছে। গরমে উৎপাদন অনেক কমে গেছে। বেড়েছে গোখাদ্যের দাম। গো-খাদ্যের চেয়ে দুধের দাম কম। খামারিরা বাধ্য হয়ে গরু বিক্রি করে দিচ্ছেন। 
মিল্কভিটার উপ-মহাব্যবস্থাপক সাইদুল ইসলাম বলেন, প্রচণ্ড গরমের কারণে দুধের উৎপাদন কমেছে। নদীর পাশে যেসব খামার আছে, তারা সহজেই পানি পাচ্ছেন। যারা বাড়িতে খামার করেছেন, তারা বেশি বেকায়দায় পড়েছেন। মিল্ক ভিটার টার্গেট প্রতিদিন গড়ে ৯০ হাজার লিটার দুধ। তবে এখন খামারিরা ৫০ হাজার লিটারের বেশি দুধ সরবরাহ দিতে পারছেন না। এদিকে কোরবানির জন্য জেলায় ছয় লাখের মতো গরু তৈরি করছে খামারিরা। গরমে ষাঁড়গুলোর নাভিশ্বাস উঠে গেছে। ঠিকমতো খাবার খেতে পারছে না। 
সিরাজগঞ্জের বেশ কয়েকটি উপজেলায় ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগি উৎপাদন করা হয়। এসব খামারিরা বলেন, ২০ থেকে ২৫ শতাংশ ডিম উৎপাদন কমেছে। হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে মুরগি। হাঁসগুলো পুকুরের পানিতেও কুলাতে পারছে না।
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. ওমর ফারুক বলেন, প্রায় ৬ লাখ গরু কোরবানির জন্য তৈরি করা হচ্ছে। চাহিদা দুই লাখ ২০ হাজারের মতো। বাকি গরুগুলো বাইরে সরবরাহ করা হবে। বর্তমানে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। এটা একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
প্রাণিসম্পদের সব কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে মাঠে থাকার জন্য। আমি নিজেও মাঠে রয়েছি। মুরগির খামার একটি সেনসেটিভ বিষয়। সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর, ও রায়গঞ্জ পোল্ট্রি জোন। এখানে একটু ঝুঁকি আছে। যেহেতু প্রচণ্ড তাপ চলছে ব্রয়লারের ক্ষেত্রে ঝুঁকিটা বেশি। মাংস ও ডিমের উৎপাদন কিছুটা কমে গেছে। খামারিদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে দিনের বেলায় বেশি তাপমাত্রায় খাবার কম দিয়ে রাতে বেশি খাবার দিতে হবে। টিনের শেডে চট ভিজিয়ে রাখতে বলা হয়েছে। ভিটামিন সি জাতীয় খাবার বেশি দিতে হবে। এদিকে তাড়াশ কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, গত দু-দিন ধরে এ অঞ্চলে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এ সপ্তাহ জুড়েই এমন অবস্থা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
 

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net