দেশের অধিকাংশ মানুষের আমিষের প্রধান উৎস ডিম ও ব্রয়লার মুরগির যে দাম সরকার বেঁধে দিয়েছে সেই দামে ঢাকার কোথাও তা বিক্রি হচ্ছে না। পোল্ট্রি ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার দাম নির্ধারণের সময় চাহিদা-সরবরাহের অসামঞ্জস্যতা এড়িয়ে গেছে। পশুর খাবারের ক্রমবর্ধমান দামও উপেক্ষা করা হয়েছে। সরকার নির্ধারিত দাম ও বাজারে খুচরা দামের মধ্যে ব্যবধান প্রতি কেজিতে প্রায় ১০ টাকা, প্রতি ডিমের ক্ষেত্রে তা তিন টাকা।
পোল্ট্রি পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় সরকার এখন বাড়তি দামের জন্য ব্যবসায়ীদের দায়ী করছে। তারা বলছেন, বাজার পর্যবেক্ষণ জোরদার করা হবে এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা হবে। অন্যদিকে সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যে ব্যবধান মূল্যায়ন না করে এবং পশুর খাবারের দাম না কমিয়ে পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়ায় বাজার আরও অস্থির হবে বলে আশঙ্কা করছেন খামারিরা। এর আগেও পণ্যের দামের লাগাম টানতে বেঁধে দেওয়া দাম প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই ব্যর্থ হয়েছে।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে বেশ কিছু নিত্যপণ্যের বেঁধে দেওয়া দাম কার্যকরে ব্যর্থ হওয়ার পরও সরকার গত মার্চে উৎপাদক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে ২৯ পণ্যের দাম বেঁধে দেয়। তবে এতে কোনো সুফল আসেনি। রাজধানীর মিরপুরের দুয়ারিপাড়া এলাকার খুচরা বিক্রেতা মোহাম্মদ ফিরোজ বলেন, এ ধরনের পোল্ট্রি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না।
গতকাল বুধবার প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৯০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে, যা সরকার নির্ধারিত দাম থেকে যথাক্রমে প্রতি কেজিতে প্রায় ১১ টাকা বেশি। বাজার স্থিতিশীল করতে হলে সরবরাহ বাড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। একই এলাকার ডিমের খুচরা বিক্রেতা মুজাহিদুল ইসলাম জানান, তিনি প্রতি ডজন ডিম ১৬৫ টাকায় বিক্রি করেছেন। ফলে প্রতি ডিমের দাম পড়েছে ১৩ টাকা ৭৫ পয়সা, যা সরকারের নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি খন্দকার মনির আহমেদ বলেন, দেশের পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যায় কয়েক হাজার পোল্ট্রি খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার কারণে সরবরাহ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। তার মতে, বন্যায় সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ায় পোল্ট্রির দাম বেঁধে দিতে বাধ্য হয়েছে সরকার।
রাজধানীর অন্যতম বৃহৎ কাঁচাবাজার কারওয়ান বাজারের খুচরা বিক্রেতা মোহাম্মদ আশিকুর রহমান প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা থেকে ১৮৫ টাকা এবং সোনালি মুরগি ২৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছেন। তিনি জানান, সোনালি মুরগির দাম আগের দিনের তুলনায় কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। একই বাজারের আরেক খুচরা বিক্রেতা শেখ রাসেল এক পাইকারের কাছ থেকে প্রতি পিস ডিম ১২ টাকা ৬০ পয়সায় কিনে খুচরা বিক্রি করেছেন ১৩ টাকা ৩৩ পয়সায়।
সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি করা কীভাবে সম্ভব, সেই প্রশ্ন রেখে রাসেল বলেন, উৎপাদন থেকে পাইকারি বাজার পর্যন্ত যথাযথ পর্যবেক্ষণ করা হলে বেঁধে দেওয়া দাম বাস্তবায়ন সম্ভব।
দেশের অন্যতম শীর্ষ করপোরেট পোল্ট্রি খামার কাজী ফার্মস গ্রুপ বলছে, তারা ডিম ও মুরগি বিক্রির ক্ষেত্রে সরকারি দাম মেনে চলছে। তবে তাদের দাবি, বাজারে ঘাটতি থাকার কারণে খুচরা দামে প্রভাব পড়ছে।
প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, মুরগির খাবার ও একদিনের বাচ্চার দাম নির্ধারণ না করে ডিম ও মুরগির দাম নির্ধারণ করলে বাজারে অস্থিরতা বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, পোল্ট্রি পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে উৎপাদন খরচ কমানো ও সরবরাহ বাড়ানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
সরকার নির্ধারিত দাম যৌক্তিক দাবি করে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক রিয়াজুল হক বলেন, পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন, ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন, ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ও অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে তার ভাষ্য, উৎপাদন ও চাহিদার মধ্যে ব্যবধানের কারণে দাম বেশি হওয়ার দাবি সঠিক নয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক কাজী মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, নির্ধারিত দাম বাস্তবায়নে পর্যবেক্ষক দল সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম না মানলে ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা হচ্ছে।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান মো. আফতাবুজ্জামান বলেন, বাজারে একটি মুরগির যে দাম তার ৭০ শতাংশ খাবারে খরচ হয়। সরবরাহ-চাহিদা ঠিক থাকলে সরকার নির্ধারিত দামেই বিক্রি হতো। কিন্তু তা হচ্ছে না।
পোল্ট্রি পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় সরকার এখন বাড়তি দামের জন্য ব্যবসায়ীদের দায়ী করছে। তারা বলছেন, বাজার পর্যবেক্ষণ জোরদার করা হবে এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা হবে। অন্যদিকে সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যে ব্যবধান মূল্যায়ন না করে এবং পশুর খাবারের দাম না কমিয়ে পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়ায় বাজার আরও অস্থির হবে বলে আশঙ্কা করছেন খামারিরা। এর আগেও পণ্যের দামের লাগাম টানতে বেঁধে দেওয়া দাম প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই ব্যর্থ হয়েছে।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে বেশ কিছু নিত্যপণ্যের বেঁধে দেওয়া দাম কার্যকরে ব্যর্থ হওয়ার পরও সরকার গত মার্চে উৎপাদক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে ২৯ পণ্যের দাম বেঁধে দেয়। তবে এতে কোনো সুফল আসেনি। রাজধানীর মিরপুরের দুয়ারিপাড়া এলাকার খুচরা বিক্রেতা মোহাম্মদ ফিরোজ বলেন, এ ধরনের পোল্ট্রি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না।
গতকাল বুধবার প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৯০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে, যা সরকার নির্ধারিত দাম থেকে যথাক্রমে প্রতি কেজিতে প্রায় ১১ টাকা বেশি। বাজার স্থিতিশীল করতে হলে সরবরাহ বাড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। একই এলাকার ডিমের খুচরা বিক্রেতা মুজাহিদুল ইসলাম জানান, তিনি প্রতি ডজন ডিম ১৬৫ টাকায় বিক্রি করেছেন। ফলে প্রতি ডিমের দাম পড়েছে ১৩ টাকা ৭৫ পয়সা, যা সরকারের নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি খন্দকার মনির আহমেদ বলেন, দেশের পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যায় কয়েক হাজার পোল্ট্রি খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার কারণে সরবরাহ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। তার মতে, বন্যায় সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ায় পোল্ট্রির দাম বেঁধে দিতে বাধ্য হয়েছে সরকার।
রাজধানীর অন্যতম বৃহৎ কাঁচাবাজার কারওয়ান বাজারের খুচরা বিক্রেতা মোহাম্মদ আশিকুর রহমান প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা থেকে ১৮৫ টাকা এবং সোনালি মুরগি ২৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছেন। তিনি জানান, সোনালি মুরগির দাম আগের দিনের তুলনায় কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। একই বাজারের আরেক খুচরা বিক্রেতা শেখ রাসেল এক পাইকারের কাছ থেকে প্রতি পিস ডিম ১২ টাকা ৬০ পয়সায় কিনে খুচরা বিক্রি করেছেন ১৩ টাকা ৩৩ পয়সায়।
সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি করা কীভাবে সম্ভব, সেই প্রশ্ন রেখে রাসেল বলেন, উৎপাদন থেকে পাইকারি বাজার পর্যন্ত যথাযথ পর্যবেক্ষণ করা হলে বেঁধে দেওয়া দাম বাস্তবায়ন সম্ভব।
দেশের অন্যতম শীর্ষ করপোরেট পোল্ট্রি খামার কাজী ফার্মস গ্রুপ বলছে, তারা ডিম ও মুরগি বিক্রির ক্ষেত্রে সরকারি দাম মেনে চলছে। তবে তাদের দাবি, বাজারে ঘাটতি থাকার কারণে খুচরা দামে প্রভাব পড়ছে।
প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, মুরগির খাবার ও একদিনের বাচ্চার দাম নির্ধারণ না করে ডিম ও মুরগির দাম নির্ধারণ করলে বাজারে অস্থিরতা বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, পোল্ট্রি পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে উৎপাদন খরচ কমানো ও সরবরাহ বাড়ানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
সরকার নির্ধারিত দাম যৌক্তিক দাবি করে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক রিয়াজুল হক বলেন, পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন, ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন, ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ও অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে তার ভাষ্য, উৎপাদন ও চাহিদার মধ্যে ব্যবধানের কারণে দাম বেশি হওয়ার দাবি সঠিক নয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক কাজী মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, নির্ধারিত দাম বাস্তবায়নে পর্যবেক্ষক দল সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম না মানলে ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা হচ্ছে।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান মো. আফতাবুজ্জামান বলেন, বাজারে একটি মুরগির যে দাম তার ৭০ শতাংশ খাবারে খরচ হয়। সরবরাহ-চাহিদা ঠিক থাকলে সরকার নির্ধারিত দামেই বিক্রি হতো। কিন্তু তা হচ্ছে না।