ফরিদপুরের সালথা উপজেলার যদুন্দী নবকাম পল্লী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ ওবায়দুর রহমানকে হাতুড়িপেটা করে পদত্যাপত্রে সই নেওয়ার ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে ভুক্তভোগী অধ্যক্ষ বাদী হয়ে সালথা থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে কলেজের পাশের বাসিন্দা যদুনন্দী এলাকার কাইয়ুম মোল্লাকে। এ ছাড়া স্থানীয় কামরুল গাজী, লালন, মনির ও মিয়াসহ নয় জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে কলেজের কোনো শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়নি। গতকাল শুক্রবার অধ্যক্ষ ওবায়দুর রহমান বলেন, আমাকে হাতুড়িপেটা করে আমার কাছ থেকে পদত্যাগপত্রে সই নেয় কিছু বহিরাগত সন্ত্রাসী। এতে নেতৃত্ব দেয় কাইয়ুম মোল্লা, কামরুল গাজী ও তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী। আমি স্বেচ্ছায় পদত্যাগপত্রে সই করিনি। তাই আমি আইনের আশ্রয় নিতে তাদের নামে মামলা করেছি। আশা করি ন্যায়বিচার পাবো। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছাত্রদের দোষ নেই এখানে। ছাত্রদের ব্যবহার করেছে ওই নেতারা। তাই ছাত্রদের আমি হয়রানি করতে চাই না। অভিযোগের বিষয়ে মামলার প্রধান আসামি কাইয়ুম মোল্লা বলেন, এলাকায় আমি একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিই। আরেকটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেন যদুনন্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রব মোল্লা। দেখা যায়, আমার গ্রুপের ছাত্রছাত্রীরা কলেজে অবহেলিত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশ দিয়ে আমাদের শিক্ষার্থীদের নানাভাবে হয়রানি করেছেন অধ্যক্ষ ওবায়দুর রহমান। যে কারণে তার পদত্যাগের জন্য শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছে, মানববন্ধন করেছে। শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে তিনি পদত্যাগ করেছেন। এখানে আমি কোনোভাবেই জড়িত না। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার ওসি মোহাম্মাদ ফায়েজুর রহমান বলেন, অধ্যক্ষ ওবায়দুর রহমানের ওপর হামলার ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফরিদপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল-নগরকান্দা) আসাদুজ্জামান শাকিল বলেন, ঘটনার পর আমি কলেজে গিয়েছিলাম। সব বিষয় খোঁজখবর নিয়েছি। অধ্যক্ষের ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হবে। জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সকালে নবকাম পল্লী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ মো. ওবায়দুর রহমান এবং তার ছেলে কলেজে ঢুকছিলেন। সে সময় তাদের জোর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে একটি বাগানের ভেতর নিয়ে যায় কয়েকজন দুষ্কৃতকারী ও ছাত্র। তারা বাবা-ছেলেকে হাতুড়ি গিয়ে পিটিয়ে আহত করে। পরে অধ্যক্ষের কাছ থেকে জোর করে পদত্যাপত্রে সেই নেওয়া হয়।