সাবেক সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (বরখাস্ত) আবদুল্লাহিল আমান আযমী জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের দাবি করলে এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উদীচী শিল্প গোষ্ঠীর শিল্পীসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা এই সাবেক সেনা কর্মকর্তার গ্রেফতার দাবি করে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চইতে বললেন। গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টার ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পৌর মার্কেটের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন চলাকালে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। মানববন্ধনে উদীচী শিল্প গোষ্ঠী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংসদের সভাপতি জহিরুল ইসলাম চৌধুরী স্বপন বলেন, আমাদের সংবিধানের স্পষ্ট বলা আছে, জাতীয় সংগীত পরিবর্তন করা যাবে না। এই গানের মধ্যে আবেগ আছে ভালোবাসা আছে, দরদ আছে, দেশপ্রেম আছে। এই গানের জন্ম হয়েছে পূর্ব বাংলার শিলাইদহে। এই জাতীয় সংগীতের প্রতি সুরে-সুরে আকাশ, বাতাস, প্রকৃতিকে নিয়ে কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ দেশ প্রেমের সংগীতটি রচনা করেছেন। এই গান শুনলে আমাদের চোখে জল চলে আসে। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের আগেও এই গান গেয়েছি আমরা। এই গানের মধ্য দিয়ে আমাদের একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। আজকে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে বৈষম্যবিরোধী যে ছাত্র আন্দোলন ২০২৪ পর্যন্ত সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আমাদের শ্রদ্ধা আছে। ভালোবাসা আছে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস রহমান বলেন, বায়ান্ন ও একাত্তর নিয়ে কোনো ধরনের মীমাংসা হবে না। কারণ একাত্তরে আমরা যাদেরকে পরাজিত করেছি তাদেরকে আমরা সেটা একাত্তরেই প্রমাণ করে দিয়েছি। আমরা গোলাম আজমের ছেলের (আবদুল্লাহিল আমান আযমী) গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি তিনি যে জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের যে দাবি জানিয়েছেন, সে দাবিটি দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি জাতির কাছে যেন তিনি ক্ষমা চান, সেই দাবি জানাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, আমাদের যে সংবিধানের ধারাগুলো আছে, সেগুলো যেন অক্ষুণ্ন থাকে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরশাসকের যে পতন হয়েছে সেটি জেলা উদীচী সমর্থন জানায়। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক আব্দুন নূর, সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি দীপক চৌধুরী বাপ্পি, জেলা জজ কোর্টের আইনজীবী নাসির মিয়াসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।