
গেট খুলে দেওয়ায় কমতে শুরু করেছে কাপ্তাই হ্রদের পানি। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১৬টি গেট পাঁচ ফুট খুলে দিয়ে পানি ছাড়া হচ্ছে। এ ছাড়াও বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হচ্ছে। সব মিলে হ্রদ থেকে এক লাখ ৩০ হাজার কিউসেক পানি প্রতি সেকেন্ডে কর্ণফুলিতে যাচ্ছে। পানি ছাড়ার ফলে তীব্র স্রোত ও জোয়ারের কারণে বন্ধ রাখা হয় চন্দ্রঘোনা ফেরি চলাচল। এতে রাঙামাটি-রাজস্থলী ও বান্দরবান সড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা পড়েছেন দুর্ভোগে। এদিকে, সকালে শহরের শান্তিনগর, রসুলপুর ও রিজার্ভ বাজারসহ আশেপাশের এলাকার সড়ক এবং বাসাবাড়ি থেকে নামতে শুরু করেছে বন্যার পানি। তবে এখনও অনেক এলাকা ও বাসাবাড়িতে পানি রয়েছে। অনেকে ত্রাণ না পাওয়া নিয়ে করছেন অভিযোগ। আবার কেউ বলছেন, ত্রাণ চাই না, দ্রুত কমিয়ে দেওয়া হোক হ্রদের পানি। পানিবান্দি থাকায় দুর্ভোগে আছেন কয়েক হাজার মানুষ। প্লাবিত এলাকায় দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির সংকট। শহরের রসুলপুরের বাসিন্দা মো. শাহ পরান বলেন, গত সোমবার সন্ধ্যায় বাসায় এক ফুটের বেশি পানি ছিল। তবে সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি ৫-৬ ইঞ্চি পানি কমে আসছে। এভাবে পানি ছাড়া হলে আশা করি দ্রুত ঘরের সব পানি সরে যাবে। লংগদু উপজেলার বগাবচর ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. মমিন মিয়া জানান, গত কয়েকদিন দ্রুত পানি বাড়ছিল। তবে গত সোমবার থেকে পানি বাড়া বন্ধ হলেও অনেক বাসাবাড়ি ও সড়ক এখনও ডুবে আছে। এমন পানি ২০০৭ সালের পরে আর হয়নি। এলাকার লোকজন গরু-ছাগল নিয়ে কষ্টে পড়েছেন। টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে জেলার লংগদু, বাঘাইছড়ি, নানিয়ারচর, বরকলসহ কয়েক উপজেলার প্রায় ১৭টি গ্রামের মানুষ এখনও পানিবন্দি রয়েছেন। জেলা প্রশাসন থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানরতদের রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে। যারা বাসাবাড়িতে আছেন তাদের ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে। কর্ণফুলি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুরজ্জাহের জানান, বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসার পানির কারণে বাঁধের জলকপাট আড়াই ফুট থেকে বাড়িয়ে ধাপে ধাপে ৫ ফুট খোলা হয়েছে। এখন ১৬টি গেট দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ৯৮ হাজার কিউসেক পানি নিষ্কাশন হচ্ছে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হচ্ছে। সব মিলে এক লাখ ৩০ হাজার কিউসেক পানি প্রতি সেকেন্ডে কর্ণফুলিতে যাচ্ছে।