আপনারা খেয়াল রাখবেন যে কোথাও কোনো গোলযোগ যেন না হয়, কেউ ধর্ম নিয়ে কথাবার্তা না বলে, কারণ আমরা এ মাটিরই সন্তান

আবু সাঈদ এখন ঘরে ঘরে : মুহাম্মদ ইউনূস

আপলোড সময় : ১০-০৮-২০২৪ ১০:৪৪:৪১ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ১০-০৮-২০২৪ ১০:৪৪:৪১ অপরাহ্ন
চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গুলিতে নিহত শিক্ষার্থী আবু সাঈদ এখন বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরের সন্তান বলে মন্তব্য করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেছেন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি সন্তানকে আগলে রাখার দায়িত্ব এখন সবার। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেয়ার দুদিন পরেই গতকাল শনিবার রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিহত ছাত্র আবু সাঈদের বাড়িতে গিয়ে এ কথা বলেন মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, আবু সাঈদ এখন ঘরে ঘরে। প্রত্যেক ঘরে আবু সাঈদ এবং বাংলাদেশে যত পরিবার আছে সব পরিবারের সন্তান সে। বাংলাদেশে জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে সবারই সন্তান সে। এখানে হিন্দু পরিবার হোক, মুসলমান পরিবার হোক, বৌদ্ধ পরিবার হোক সবার ঘরের সন্তান এই আবু সাঈদ।
কাজেই আপনারা খেয়াল রাখবেন যে কোথাও কোনো গোলযোগ যেন না হয়, কেউ ধর্ম নিয়ে কথাবার্তা না বলে, কারণ আমরা এ মাটিরই সন্তান। সবাই আবু সাঈদ। কাজেই সন্তানদের রক্ষা করা জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে এটা এখন আমাদের কর্তব্য। আমরা যেন এটা নিশ্চিত করি। আমরা এখন সামনের পথে দাঁড়াই, আবু সাঈদ যেমন দাঁড়িয়েছিল, আমাদেরকেও এমন দাঁড়াতে হবে।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মুহাম্মদ ইউনূস ও উপদেষ্টা পরিষদে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুজন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি পীরগঞ্জের মেরিন একাডেমিতে অবতরণ করে।
বেলা ১১টার পরে পীরগঞ্জ উপজেলার জাফরপাড়া গ্রামে সাঈদের বাড়িতে পা রাখেন ইউনূস।
সাঈদের কবর জিয়ারত করে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন প্রধান উপদেষ্টা। ওই সময় সাঈদের মা তাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
২৫ বছর বয়সী সাঈদ রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বাদশ ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। সাঈদ ছিলেন কোটা আন্দোলনে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সমন্বয়ক।
রংপুরে শিক্ষার্থীরা গত ১৬ জুলাই দুপুরে দুপুর ১টার দিকে জেলা স্কুল মোড়ে থেকে মিছিল নিয়ে বের হলে লালবাগ খামার মোড়ে শিক্ষার্থীদের আরেকটি মিছিল তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। পরে মিছিলটি রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর ফটক দিয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকার চেষ্টা করে।
সেসময় সেখানে থাকা ছাত্রলীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলার সময় পুলিশের সঙ্গেও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাধে। এতে আবু সাঈদসহ পুলিশ ও বেশ কয়েক শিক্ষার্থী আহত হন।
আহতদের রংপুর মেডিকেল কলেজে নেয়া হলে হাসপাতালে আনার আগেই গুলিবিদ্ধ আবু সাঈদের মৃত্যু হয় বলে জানান চিকিৎসকরা।
পুলিশের বন্দুকের সামনে দুহাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে থাকা সাঈদকে গুলি করার ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর সারা দেশে আন্দোলন জোরদার করা হয়। একপর্যায়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলনে নামে।
ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা যখন বড় হবে, তারা স্কুলে পড়বে আবু সাঈদের কথা। তারাও বলবে- ‘আমিও ন্যায়ের জন্য লড়ব’।
আবু সাইদের মা আমাদের সবার মা। কাজেই তাকে এবং সাঈদের বোনদের রক্ষা করতে হবে। তাদের ভাইদের রক্ষা করতে হবে। সবাইকে রক্ষা করতে হবে। আবু সাঈদের এই বাংলাদেশে কোনো ভেদাভেদ নেই। কাজেই আপনাদের কাছে অনুরোধ, যে যেখানেই আছেন এই আবু সাঈদের বাবা, মা এবং তার পরিবারকে রক্ষা করুন। কোনোরকম গোলযোগ হতে দিবেন না।
মুহাম্মদ ইউনূস নতুন বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্ব বাস্তবায়নে আবু সাঈদকে স্মরণের কথাও বলেন।
স্বাধীন এই নতুন বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্ব এখন আমাদের। তার (আবু সাঈদ) কথা স্মরণ হবে এই কাজটা বাস্তবায়ন করার মধ্যে। কাজেই সে কাজটা যেন আমরা করি।
 

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net