কারচুপির প্রশ্ন থাকা বিতর্কিত ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে জয়ী আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ২৩টি পদের চেয়ার দখলে নিয়েছেন পরাজিত বিএনপি-জামায়াতপন্থি আইনজীবীরা। গত মঙ্গলবার তারা পদগুলোর কার্যালয় দখলে নেন। চলতি বছরের ২৭ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে সমিতির ২৩ পদের সবকটিতে জয়ী হন আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা। এ নির্বাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগে ফলাফল ঘোষণার আগেই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছিলেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিএনপি-জামায়াতপন্থি আইনজীবীরা প্রথম ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুরসহ অফিস রুম থেকে বঙ্গবন্ধু ও সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি নামিয়ে ভাঙচুর করেন। এ ছাড়া সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কক্ষে থাকা বঙ্গবন্ধুর ওপর লেখা বই তারা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন। তারা আওয়ামীপন্থি আইনজীবী নেতাদের চেম্বার কক্ষও ভাঙচুর করেন। এর মধ্যে রয়েছে, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক কাজী নজিব উল্ল্যাহ হিরু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফিরোজুর রহমান মন্টু, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস ও দুদকের আইনজীবী মো. মোশারফ হোসেন কাজলের চেম্বারও। তারা অফিস কক্ষের দেয়ালে টাঙানো আওয়ামী লীগ নেতাদের ছবিও ভাঙচুর করেন। এ ছাড়া আইনজীবী সমিতির বঙ্গবন্ধু ভবনের নাম ফলক ভেঙে সেখানে শহীদ আবু সাঈদ ও মীর মুগ্ধ ভবন লিখে দেন তারা। এরপর বেলা ১২টার দিকে গত নির্বাচনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ২৩টি পদের পরাজিত প্রার্থীরা সমিতি দখল করে নেন। তারা যে যে পদে নির্বাচন করেছিলেন, সে সে পদের অফিসকক্ষ দখল করে নেন। যেহেতু এদিন আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা আদালতেই আসেননি তাই এ নিয়ে কোনো সংঘাতও হয়নি। গতকাল বুধবার দুপুরে সরেজমিনে সমিতির সভাপতির কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, সমিতির সভাপতির চেয়ারে বসে আছেন গত নির্বাচনে পরাজিত বিএনপি দলীয় সভাপতি প্রার্থী অ্যাডভোকেট খোরশেদ মিয়া আলম। এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট খোরশেদ মিয়া আলম বলেন, গত মঙ্গলবার থেকে আমিই ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা ঢাকা আইনজীবী সমিতির সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছেন। এখানে কোনো দিন ভোট কাচুপির প্রশ্ন না উঠলেও গত তিনটি নির্বাচনে তারা ভোট কারচুপির মাধ্যমে নিজেদের জয়ী ঘোষণা করেছেন। তাই আমরা আমাদের প্রাপ্য বুঝে নিয়েছি। এ বিষয়ে বর্তমান সমিতির সভাপতি আবদুর রহমান হাওলাদার জানান, সারা দেশই তারা দখল করে নিয়েছেন। ঢাকা বারও তারা বেআইনীভাবে দখল করেছেন।