![](https://dainikjanata.net/public/postimages/66a3e9c38b6e6.jpg)
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
টানা পাঁচদিন অচলাবস্থার পর স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে রাজধানী ঢাকা। গত বুধবার থেকে খুলতে শুরু করেছে রাজধানীর বেশিরভাগ দোকান ও বিপণিবিতান। তবে ক্রেতাশূন্য অবস্থায় দিন কাটছে নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ীদের। এ এলাকার প্রায় প্রতিটি মার্কেটের বিক্রেতারা পার করছেন অলস সময়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃষ্টি, অবরোধ ও কারফিউয়ের ধাক্কায় বেচাবিক্রি কমে ৫ শতাংশে নেমেছে। এ অবস্থায় চলতি মাসে দোকান ভাড়া পরিশোধের অর্থ জোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। ওই এলাকার গাউছিয়া মার্কেট, নূর ম্যানশন মার্কেট, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট, ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট, চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট, নুরজাহান সুপার মার্কেট, গ্লোব শপিং সেন্টারসহ সবগুলো মার্কেটই ক্রেতাশূন্য অবস্থায় দেখা গেছে। গত ৭ জুলাই থেকে ‘বাংলা ব্লকেড’ অবরোধ কর্মসূচি শুরু হলে এর প্রভাব পড়ে নিউমার্কেট এলাকার মার্কেটগুলোতে।
নিউমার্কেট থানার আওতাধীন সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় অবরোধ করার ফলে এই এলাকায় স্থবির পরিস্থিতি তৈরি হয়। আন্দোলনের কারণে ক্রেতারা আতঙ্কে এই এলাকার মার্কেটে কম এসেছেন। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই ১১ জুলাই টানা বৃষ্টিতে কোমরপানির নিচে চলে যায় ঢাকার নিউমার্কেট এলাকা। এ পানি সরতে দুইদিন সময় লেগে যায়। পানিতে ডুবে লাখ লাখ টাকার মালামাল নষ্ট হয় ব্যবসায়ীদের। গত ১৭ জুলাই বুধবার থেকে হামলা, ভাঙচুর ও সংঘর্ষের কারণে এ এলাকায় বেচাকেনায় বিঘ্ন ঘটে। এতে সেখানকার সব বিপণিবিতান বন্ধ হয়ে যায়। যার রেশ এখনও কাটেনি। কারফিউ চলমান থাকায় খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া বের হচ্ছেন না কেউ। যে কারণে ক্রেতার খরা চলছে বিপণিবিতানগুলোতে। টানা তিনদিন সরকারি ছুটির পর বুধবার (২৪ জুলাই) সকাল থেকে ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত অফিস-আদালত খোলার নির্দেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি সকাল ১০টা থেকে ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল রাখা হয়। সরকারি নির্দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি এই সময় দোকানপাট খোলা রাখার সিদ্ধান্ত জানায়।সরকারি নির্দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি এই সময় দোকানপাট খোলা রাখার সিদ্ধান্ত জানায়। সরেজমিন দেখা যায়, অনেক দোকানে সারা দিনে এক টাকার পণ্যও বিক্রি হয়নি। কেউ কেউ সামান্য বিক্রি করে যাওয়া-আসার ভাড়াটা তুলেছেন।
নুরজাহান মার্কেটে মেয়েদের পোশাকের দোকান এফএম পয়েন্টের স্বত্বাধিকারি মো: পলাশ বলেন, দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ব্যবসায় মন্দা যাচ্ছে। দোকানের খরচ তো উঠছেই না, পকেট খরচও তুলতে পারছি না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কতদিন লাগবে সেটাও জানি না। দোকানের ভাড়া কীভাবে দেবো জানি না। পুরো মাসজুড়েই আমাদের বড় ক্ষতি টানতে হবে। তিনি বলেন, দোকান ভাড়া ৫০ হাজার টাকা। গতকাল দুই পিস জামা ৮০০ টাকায় বিক্রি করেছি। আজ এক টাকাও বিক্রি হয়নি। এমনকি কেনা দাম হাঁকিয়েও ক্রেতা পাচ্ছি না। বেচাবিক্রি ৯৫ শতাংশ কমে গেছে। গ্লোব শপিং সেন্টারে ছেলেদের পোশাক বিক্রেতা পলিন ফ্যাশনের বিক্রয়কর্মী মো. আরিফ বলেন, সাধারণ সময়ে দিনে বিক্রি হয় ৩০-৪০ হাজার টাকা। গতকাল ৩ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। এখন দুপুর ২টা, একটা পোশাকও বিক্রি হয়নি। দোকান খুলে বসে আছি। আবার ৫টার মধ্যেই বন্ধ করতে হবে। স্বাভাবিক সময়ে সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত বিপণিবিতানগুলো খোলা থাকে।