
চলমান কোটার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে দলগতভাবে আওয়ামী লীগের অবস্থান কী এমন প্রশ্নের উত্তরে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমরা পরিষ্কার বলেছি, এই আন্দোলনকে কেউ যদি রাজনৈতিক ফাঁদে ফেলতে চায়, সেটাকে আমরা রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করবো। গতকাল বৃহস্পতিবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। কোনো কোনো রাজনৈতিক দল তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে শিক্ষার্থীদের প্ররোচণা দিচ্ছে অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপিসহ কিছু দল প্রকাশ্যে কোটা আন্দোলনের প্রতি সমর্থন দিয়েছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক ফাঁদে ফেলে তারা নতুন করে আন্দোলন করার পাঁয়তারা করছে। কোটাবিরোধী আন্দোলনকে তারা সরকারবিরোধী আন্দোলনের রূপ দেয়ার চেষ্টা করছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রকাশ্যে বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের কোটার কোনও দরকার নেই একথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ থেকে বোঝা যায়, মির্জা ফখরুল এবং তার দল বিএনপি মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি কোনও ধরনের শ্রদ্ধাবোধ নেই। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এটা মনে করার আর কোনও কারণ নেই। মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা সমর্থন না করার মানে তারা এতদিন মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধেই ছিল, তার প্রমাণ নতুন করে দিলো। কোটা আন্দোলন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা বিচারাধীন, আগামী চার সপ্তাহ পর্যন্ত আদালতের আদেশের এই ধারায় চলতে হবে। এখানে আমরা আদালতের আদেশ মেনে নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। মেনে না নেয়া বেআইনি, সে কথাটাই বলছি। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি সবাইকে সম্মান দেখানোর অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, সর্বোচ্চ আদালত যখন সরকার পক্ষ, আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি ও মূল মামলা দায়েরকারী পক্ষসহ সবার বক্তব্য শুনে এ বিষয়ে ( কোটা) চূড়ান্ত নিষ্পত্তির বিচারিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে, ঠিক সেই মুহূর্তে আন্দোলনের নামে জনগণের চলাফেরা ও যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা বেআইনি। এছাড়া গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আন্দোলনকারী অনেকের ঔদ্ধত্যপূর্ণ, শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। তিনি বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী সব রাজনৈতিক কর্মসূচি বন্ধ করে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী অবিলম্বে নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যাওয়ার জন্য পুনরায় আহ্বান জানাচ্ছি। সর্বোচ্চ আদালতের বিচারিক কার্যক্রম পুরোপুরি সমাপ্তি না হওয়া পর্যন্ত সব পক্ষকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে। আমরা তারুণ্যের শক্তি এবং আবেগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু এই শক্তি ও আবেগকে পুঁজি করে কোনও অশুভ মহল যদি দেশে অরাজক পরিস্থিতি ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চায়, তাহলে সরকার আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।