সাফল্যের ঠিকানায় কুকুরেইয়া

আপলোড সময় : ০৮-০৭-২০২৪ ০৭:২৪:০২ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০৮-০৭-২০২৪ ০৭:২৪:০২ অপরাহ্ন
স্পোর্টস ডেস্ক
এবারের ইউরোতে স্পেনের হয়ে নজর কেড়েছেন বেশ কজনই। তাদের মধ্যে ওপরের দিকেই থাকবেন মার্ক কুকুরেইয়া। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে আন্তর্জাতিক ফুটবলে তার অভিজ্ঞতা ছিল স্রেফ তিন ম্যাচের। এখন তিনি দলের ভরসা। গোটা আসরের আলোচিত নামগুলির একটি। কয়েক মাস আগেও যদি কেউ বলত, এভাবে ইউরো মাতাবেন কুকুরেইয়া, অনেকেরই হয়তো চোখ কপালে উঠত। এখন সেটিই বাস্তব। ২৫ বছর বয়সী এই ডিফেন্ডার চমকে দিয়েছেন অনেককেই। তিনি নিজে অবশ্য অনেক দিন ধরেই অপেক্ষা করছিলেন এই সময়টির জন্য। ফ্রান্সের বিপক্ষে সেমি-ফাইনালের আগে তৃপ্ত কণ্ঠে তিনি জানালেন, নিভৃতে অনেক পরিশ্রম করেই সাফল্যের আলোয় তিনি উদ্ভাসিত হতে পেরেছেন। এস্পানিওল ও বার্সেলোনার একাডেমি হয়ে বার্সেলোনার ‘বি’ দল পর্যন্ত আসতে পেরেছিলেন তিনি। মূল দলে জায়গা পাননি। ধারে খেলেছেন এইবার ও গেতাফেতে। পরে গেতাফে থেকে ২০২১ সালে ইংলিশ ফুটবলেপাড়ি জমান ব্রাইটন অ্যান্ড হোভ অ্যালবিয়নের হয়ে। প্রথম মৌসুমেই ক্লাবের সেরা ফুটবলারের পুরস্কার জেতেন। তার দিকে নজর পড়ে বড় ক্লাবগুলির। সেখানে সফল হয় চেলসি। ২০২২ সালে ক্লাব রেকর্ড ৬ কোটি ২০ লাখ পাউন্ডে তাকে চেলসির হাতে তুলে দেয় ব্রাইটন। কুকুইরেইয়ার স্বপ্নের সীমানাও বড় হতে থাকে। কিন্তু বড় ক্লাবে আসার পর তা সঙ্কুচিত হতেও সময় লাগেনি। মানিয়ে নিতেই হিমশিম খাচ্ছিলেন। প্রথম মৌসুম কেটে যায় বিবর্ণ অস্থিরতায়। গত মৌসুমের শুরুটায় হানা দেয় চোট। সব মিলিয়ে যেন হারিয়েই যাচ্ছিলেন তিনি। তবে চোট থেকে ফেরার পর ক্রমে ছন্দে ফিরেতে থাকেন তিনি। আস্তে আস্তে নিজেকে মেলে ধরতে থাকেন। মৌসুমের শেষ ভাগটায় চেলসির হয়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করেন। সেটিই তাকে জায়গা করে দেয় স্পেনের ইউরো দলে। সেরা একাদশে তার জায়গা অবশ্য নিশ্চিত ছিল না। অনেকের চোখেই এগিয়ে ছিলেন আলেহান্দ্রো গ্রিমাল্দো। কিন্তু কোচ লুইস দে লা ফুয়েন্তে প্রথম ম্যাচে বেছে নেন কুকুরেইয়াকে। শুরু থেকেই এমনভাবে নিজেকে মেলে ধরেন তিনি, তাকে বাইরে রাখা বহুদূর, বরং দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠেন। এখন তিনি দেশের হয়ে ইউরোর সেমি-ফাইনালে খেলার অপেক্ষায়। পেছন ফিরে তাকিয়ে বললেন, নীরব অধ্যাবসায়ের পথ মাড়িয়ে তবেই এই ঠিকানা তিনি খুঁজে পেয়েছেন। “আগে হোক বা পরে, লোকে যখন কাউকে নিয়ে আলোচনা করে, তা সবসময়ই ভালো। আমি এখন যেটা পাচ্ছি, এটা অনেক বছর নীরবে কাজ করে যাওয়ার ফসল। কেউ আমাকে কিছু দেয়নি। কাজেই এখন আমি দারুণ খুশি। জানতাম, যদি কঠোর পরিশ্রম করে যাই এবং নিজের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করি, এই সময়টা আসবে।” “এই অবস্থানে আসতে পারাটা স্বপ্নের মতো ব্যাপার এবং আমি এখন যেখানে আছি, এখানে আসতে অনেকেই নিজের সর্বস্বটা দিয়ে ফেলতে রাজি।” ক্যারিয়ারের অস্থিরর সময়টায় অনেক কিছুই চেষ্টা করে দেখেছেন তিনি। তাতে নিজের খেলাই সমৃদ্ধ হয়েছে তার। মূলত লেফট ব্যাক হলেও রক্ষণে যে কোনো দায়িত্বই পালন করতে পারেন ঝাঁকড়া চুলের এই ফুটবলার। সেমি-ফাইনালে যেমন কার্ডের খাড়ায় রাইট ব্যাক দানি আলভেসকে পাবে না স্পেন। কুকুরেইয়া প্রয়োজনে সেই দায়িত্ব পালন করতে পারেন। চেলসির হয়ে অভিজ্ঞতাটুকু তো তার আছে! কুকুরেইয়া নিজেও প্রস্তুত দলের জন্য যে কোনো কিছু করতে। “আমার ক্যারিয়ারে আমি সবকিছুই চেষ্টা করে দেখেছি এবং এটা আমাকে সহায়তা করেছে পাল্টা আক্রমণ শিখতে। কারণ, সামনের দিকেও খেলেছি আমি।” “এমনিতে আমার নিয়মিত পজিশন লেফট ব্যাক, তবে চেলসিতে পরিস্থিতির কারণে আমাকে ডান পাশেও খেলতে হয়েছে। যেখানেই খেলি না কেন, নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো দলের জয়।” এবারের ইউরো শুরুর আগে স্পেনকে শীর্ষ ফেভারিদের কাতারে সেভাবে রাখেননি বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু উজ্জীবিত পারফরম্যান্স মেলে ধরে তারাই এখনও পর্যন্ত বলা যায় ইউরোর সেরা দল। টুর্নামেন্টজুড়ে দলটির অনেকেই বলেছেন, তাদের মূল শক্তির উৎস দলীয় একতা। সেমি-ফাইনালের আগে কুকুরেইয়ার কণ্ঠেও সেই জয়গান। “আমরা এমন একদল, সতীর্থদের জন্য যারা সবকিছু উজাড় করে দিতে রাজি এবং এটাই (সাফল্যের) একটা রহস্য। আমার মনে হয়, দারুণ একটা দল গড়ে তুলতে পেরেছি আমরা।” “তারুণ্য ও অভিজ্ঞতার চমৎকার মিশ্রণ আমাদের আছে এবং এটাই সবকিছু উপভোগ্য করে তুলেছে। গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো পরিবারের মতো থাকা। আমাদের হয়তো মহাতারকা নেই, তবে দল হিসেবে আমরা দারুণ। আমরা খুব ভালো করে চলেছি এবং আশা করি, এই ধারা ধরে রাখতে পারব।” তারা অবশ্য খুব ভালো করেই জানেন, মঙ্গলবারের সেমি-ফাইনালে হেরে গেলে সাফল্যের এই সৌধ আবার ভেঙে পড়বে। তবে ফাইনালে যেতে তারা বদ্ধ পরিকর। “আর দুটি পদক্ষেপ বাকি আছে। রোববার ফাইনালে যদি খেলতে না পারি, তাহলে তো আর ভালো কিছু হলো না। ওই মঞ্চে যেতে আরেকবার জ¦লে উঠতে হবে আমাদের।”
 

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net