বিদেশের কারাগারে বাংলাদেশের ১১ হাজার ৪৫০ শ্রমিক-প্রবাসী আটক বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে সংরক্ষিত আসনের সদস্য ফরিদা ইয়াসমিনের এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ তথ্য জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। সোমবারের প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, মিশনগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী পর্তুগালে দুইজন, মিশরে ছয়জন, ইতালিতে ৮১ জন, দক্ষিণ আফ্রিকায় ৩৮৫ জন, কোরিয়ায় ছয়জন, শ্রীলঙ্কায় তিনজন, কাতারে ৪১৫ জন, লিবিয়ায় নয়জন, স্পেনে ১৯ জন, হংকংয়ে ১২২ জন, সিঙ্গাপুরে ৬৬ জন, ব্রুনাইয়ে ১৬ জন, চীনে ১৯১ জন, আরব আমিরাতে ৪০৪ জন, ইন্দোনেশিয়ায় ৪৯ জন, সৌদি আরবে ৫ হাজার ৭৪৬, মালয়েশিয়ায় ২১৯ জন, আলজেরিয়ায় পাঁচজন, থাইল্যান্ডে চারজন, লেবাননে ২৮ জন, গ্রিসে ৪১৪ জন, ইরাকে ২১৭ জন, তুরস্কে ৫০৮ জন, মিয়ানমারে ৩৫৮ জন, জাপানে দুইজন, জর্ডানে ১০০ জন, ভারতে ১ হাজার ৫৭৯ জন, ওমানে ৪২০ জন, মোজাম্বিকে চারজন, বেলজিয়ামে দুইজন, মালদ্বীপে ৭০ জন আটক রয়েছেন। বিরোধী দলের চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নুর এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র কখনোই শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা দেয়নি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের দেশে বাংলাদেশ থেকে গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে কখনোই শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা দেয়নি। তবে, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার এমএফএন নীতির আলোকে গার্মেন্টস পণ্যের ওপর আরোপিত আমদানি শুল্ক হার বাংলাদেশ ও অন্যান্য প্রতিযোগী দেশগুলোর জন্য অভিন্ন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি সুবিধার আওতায় থাকাকালীন গার্মেন্ট পণ্য এর আওতা-বহির্ভূত ছিল। এ সুবিধা ব্যতিরেকেই উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানির একক বৃহত্তম বাজারে পরিণত হয়েছে। ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র তাদের জিএসপি পদ্ধতি পুনঃপ্রবর্তন করেনি। মন্ত্রী বলেন, জিএসপি সুবিধা পুনরায় চালু হলে তাতে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি এবং সেক্ষেত্রে গার্মেন্ট পণ্যকেও জিএসপির আওতায় আনার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাৎসরিক বাণিজ্য সংলাপেও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নিয়মিতভাবে এ দাবি উত্থাপন করা হয়। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনা তুলা দিয়ে উৎপাদিত গার্মেন্ট ও টেক্সটাইল পণ্যের যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের দাবিও বাংলাদেশ সরকার উত্থাপন করেছে। কোনো বিশেষ আঞ্চলিক চুক্তি বা সহায়তা কার্যক্রম, যেমন- ক্যারিবিয়ান রাষ্ট্রগুলোর জন্য ক্যারিবিয়ান বেসিন ইনিশিয়েটিভ (সিবিআই) কিংবা সাব-সাহারান রাষ্ট্রগুলোর জন্য আফ্রিকান গ্রোথ অ্যান্ড অপর্চুনিটি অ্যাক্টের (এজিওএ) মতো বিশেষ ব্যবস্থা অথবা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) আওতা ছাড়া কোনো দেশই সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রে গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পায় না।