আন্তর্জাতিক ডেস্ক
উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে বৈঠক শুরু করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। সামরিক সম্পর্ক জোরদার করার উপায় নিয়ে গতকাল বুধবার আলোচনা করতে পারেন তারা। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে। বিমানবন্দরে পুতিনকে অভ্যর্থনা জানান কিম। সম্পর্ক আরো জোরদার করতেই একত্র হয়েছেন তারা। যা সিউল ও ওয়াশিংটনের মধ্যে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। এর আগে ২০০০ সালে উত্তর কোরিয়া সফর করেছিলেন পুতিন। কিমের বিরুদ্ধে রাশিয়ায় অস্ত্র সরবরাহ করার অভিযোগ এনেছে পশ্চিমা দেশগুলো। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে উভয় দেশ। গত সেপ্টেম্বরে বুলেটপ্রুফ ট্রেনে রাশিয়া সফরে গিয়েছিলেন কিম। এর মানে এক বছরের মধ্যে দুই নেতার এটি দ্বিতীয় বৈঠক। সরকারি কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে বলেছে, পুতিনের এই সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের স্থায়িত্ব তুলে ধরে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, এই সফরটি প্রতিরক্ষা সম্পর্কের দিকে মনোনিবেশ করবে। যদিও নেতারা অর্থনৈতিক খাতে সহযোগিতাকে প্রকাশ্যে আনবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ পিয়ংইয়ংয়ের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিষিদ্ধ। তাই এখানে যেকোনো অস্ত্র চুক্তি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের আইন লঙ্ঘন করবে। ডংগুক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক কোহ ইউ-হওয়ান এএফপিকে বলেন, ইউক্রেনে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র সমর্থন প্রয়োজন। অন্যদিকে নিষেধাজ্ঞার চাপ কমানোর জন্য উত্তর কোরিয়ার খাদ্য, শক্তি ও উন্নত অস্ত্রের ক্ষেত্রে রাশিয়ার সমর্থন প্রয়োজন। তিনি সতর্ক করে বলেন, প্রকাশ্যে যা ঘোষণা করা হয়েছে এবং দুই নেতার মধ্যে বৈঠকে আসলে কী আলোচনা হয়েছে তা আলাদাভাবে দেখা উচিত। সিউলের ইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লিফ-এরিক ইজলি বলেন, মস্কো ও পিয়ংইয়ং সম্ভবত আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘনকে অস্বীকার করতে থাকবে। কিন্তু তাদের অবৈধ কার্যকলাপ লুকিয়ে সহযোগিতার কথা বলছে। তিনি বলেন, এই সফরটি হলো ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য উত্তর কোরিয়াকে ধন্যবাদ জানানোর একটি উপায়। পুতিনের এই সফর নিয়ে সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ার পাশাপাশি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সিউলভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো কিম সুং-বে এএফপিকে জানিয়েছেন, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের মধ্যে সহযোগিতা জোরদার হচ্ছে। তাই এই সফরটি হচ্ছে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করার মাধ্যমে উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় কৌশলগত স্থান সুরক্ষিত করার রাশিয়ার প্রচেষ্টা। তিনি বলেন, এটি আরো পরিষ্কার যে উত্তর কোরিয়া সফরের পর ভিয়েতনামে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন পুতিন।