ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাবেন প্রধান উপদেষ্টা

আপলোড সময় : ২১-১১-২০২৫ ০৭:১০:২৮ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২১-১১-২০২৫ ০৭:১০:২৮ অপরাহ্ন
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে আগামীকাল শনিবার ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোবগে ঢাকায় আসছেন। তিনি ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকা সফর করবেন। ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ১৩ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসবেন। ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপাক্ষিক সফর এটি। এই সফরে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তিকে মুক্তবাণিজ্য চুক্তিতে উন্নীত করার বিষয়ে আলোচনা হবে। এছাড়া তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। গতকাল বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আল সিয়াম এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভুটানের ঐতিহাসিকভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান আছে, দুদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর থেকে উচ্চ পর্যায়ের নেতারা অব্যাহত সফর বিনিময়ের মাধ্যমে এই সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালে বাংলাদেশের প্রথম অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্যিক চুক্তি (পিটিএ) ভুটানের সঙ্গে সম্পাদিত হয়েছে। পারস্পরিক শ্রদ্ধা সৌহার্দ্য ও আন্তরিকতার ওপর ভিত্তি করে দুদেশের জনগণ উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ অর্জনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো ক্রমেই প্রসারিত হয়েছে। আসন্ন সফরের সম্পর্ক আরও বিস্তৃত ও গভীর করার জন্য পারস্পরিক সহযোগিতা কীভাবে আরও বৃদ্ধি করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হবে। আসাদ আল সিয়াম বলেন, ২২ নভেম্বর সকালে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিনকে যথাযথ মর্যাদায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা জানাবেন। বিমানবন্দরের গার্ড অব অনার গ্রহণ করার পর ভুটানের প্রধানমন্ত্রী সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করবেন। এরপর দুপুরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। একই দিনে প্রধানমন্ত্রী শেরিন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন। তিনি জানান, দুই রাষ্ট্রপ্রধানের বৈঠকের পর দুই দেশের মধ্যে প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে আমরা আশা করছি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, যোগাযোগ, শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য, জ্বালানি, বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগ, পর্যটন, সংস্কৃতি, যুব, ক্রীড়া, শিল্পসহ দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা হবে। বৈঠক শেষে ভুটানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ, ভুটানের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ এবং কৃষি সহযোগিতা বিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই বিষয়গুলো এখনও আলোচনাধীন। এদিন রাতে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী এবং তার প্রতিনিধি দলের সম্মানে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় নৈশভোজের আয়োজন করা হবে। সেখানে তিনি অংশগ্রহণ করবেন। ২৩ নভেম্বর তিনি বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এছাড়া বাংলাদেশ সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান পররাষ্ট্র সচিব। তিনি বলেন, এছাড়া বাংলাদেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে পারেন। ২৪ নভেম্বর সকালে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী দুদিনের সফর শেষে থিম্পুর উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন তাকে বিদায় জানাবেন। দুদেশের মধ্যে প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ কর্তৃক দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার জন্য কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব উত্থাপন করার সুযোগ আছে। তিনি আরও বলেন, সে পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ভুটানকে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাণিজ্য, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কৃষি, পর্যটন ও ক্রীড়া বিষয়ক কয়েকটি সহযোগিতার প্রস্তাব দিতে পারে এবং ভুটানে বাণিজ্য সম্প্রসারণ, পানি ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশি পেশাদারদের নিয়োগে ভুটান সরকারের সহযোগিতা কামনা করার সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক বিষয়েও আলোচনা হবে বলে আশা করা যায়। আমাদের অন্যতম ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রীয় সফর দুদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন ও উপ-আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আমরা আশা করছি। এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য ট্রাভেল ট্যাক্স যেটা আছে, সেটি অব্যাহত রাখার অনুরোধ থাকবেই। আমরা আরও কমিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানাবো। জলবিদ্যুৎ আমদানি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০২৩ সাল থেকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভুটানের জলবিদ্যুৎ আনার একটা প্রস্তাব রয়েছে এবং ভুটানের পক্ষ থেকেও আগ্রহ রয়েছে। কিন্তু এই বিষয়টা ত্রিদেশীয় ইস্যু, সেহেতু এটা এখনও আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। এটা ভুটান ও ভারতের মধ্যে আলোচনা শেষে আমাদের সঙ্গে আলোচনা হবে বলে আমরা আশা করি। জলবিদ্যুৎ আনার বিষয়টি নিশ্চয়ই বাংলাদেশ এবং ভুটান দুই প্রতিনিধিদল আলোচনা করবে। ভুটানের সঙ্গে আকাশপথে যোগাযোগ বাড়ানো নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কুড়িগ্রাম অঞ্চলে একটি অর্থনৈতিক জোনে ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টরের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনেক আগেই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আপনি যে বিমানবন্দরের কথা বলছেন এটা নিকটবর্তী এলাকাতেই। সুতরাং আমাদের তরফ থেকে ভুটানকে নিশ্চয়ই প্রস্তাব দেওয়া হবে অর্থনৈতিক জোন তারা ব্যবহার করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে যদি তারা ব্যবহার করতে চায় আমাদের তরফ থেকে কোনও আপত্তি থাকার কথা নয়।
 

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net