আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ৯৩ টি আসনে নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করেছে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শরিক গণসংহতি আন্দোলন। মনোনীতদের তালিকায় দলের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফসহ দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা রয়েছেন। গতকাল বুধবার রাজধানীর হাতিরপুলে গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়। এ সময় দলের নেতা জোনায়েদ সাকি, আবুল হাসান রুবেলসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন। গণসংহতি আন্দোলনের ৫৫ সদস্য বিশিষ্ট নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচিতি ও ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে দলের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা ঘোষণা করেন আবুল হাসান রুবেল। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশের এক দশক পূর্তিতে গণসংহতি আন্দোলনের (জিএসএ) সমাবেশ ও মাথাল র?্যালি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৪ নভেম্বর বিকাল ৩টায় শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে। সংবাদ সম্মেলনে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য একটা অপরিহার্য ব্যাপার। সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হলে আবশ্যিকভাবে নির্বাচন লাগবে। তিনি বলেন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রার্থীরা নিজ দলীয় প্রতীকেই নির্বাচন করবেন। কিন্তু কোনো দল যদি কোনো জোটের প্রতীকে নির্বাচন করতে চায়, সেই সুযোগটা রাখাও আমরা সমীচীন মনে করি। জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, সংশোধিত আরপিওতে প্রার্থীদের জামানতের টাকার অঙ্ক বৃদ্ধি করা হয়েছে। এটা পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে যে, নির্বাচন পদ্ধতি ক্রমাগত অর্থনির্ভর হচ্ছে এবং যাদের অর্থের দিক থেকে কম সক্ষমতা আছে, তাদের জন্য বিষয়গুলো কঠিন হয়ে উঠছে। তিনি বলেন, আমরা একটা ঐতিহাসিক কালে আছি। ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান পুরো বাংলাদেশকে আবার একটা পুনর্গঠনের দাবি নিয়ে সামনে এসেছে। সেই পুনর্গঠন কালটাতেও ন্যূনতম জাতীয় ঐকমত্য আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এই ন্যূনতম জাতীয় ঐকমত্য হচ্ছে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য, যেটা রাষ্ট্র ব্যবস্থা সংস্কারের মধ্য দিয়ে আমরা অর্জন করব। এসবের মধ্য দিয়ে একটা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক নতুন বন্দোবস্ত আমরা কায়েম করতে চাই। জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, এই ঐতিহাসিক কালে নতুন বন্দোবস্ত কায়েম একক কোনো দলের পক্ষে সম্ভব না। সে কারণে ন্যূনতম জাতীয় ঐকমত্য দরকার। ফলে জিএসএ সহ গণতন্ত্র মঞ্চ, বিএনপি, এবং উনচল্লিশটি রাজনৈতিক দল যে লড়াইটা করে এসেছি, তার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন, গণভোট ও নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে আগামী সংসদ গঠনের পথরেখা আমাদেরকে বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা ৫ আগস্টের ঐতিহাসিক রক্তস্নাত গণঅভ্যুত্থানের পর থেকেই বলে আসছি, শহীদের রক্তের ঋণ যদি আমরা বহন করি, তাহলে তাদের আকাঙ্ক্ষা আমাদের পূরণ করতে হবে। সেটা করতে হলে বিচার সংস্কার এবং নির্বাচন, এই তিনটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ আমাদের শেষ করতে হবে। এর মধ্য দিয়ে আমাদের গণতান্ত্রিক উত্তরণটা ঘটাতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের (জিএসএ) রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য দেওয়ান আবদুর রশীদ নীলু, তাসলিমা আখতার, হাসান মারুফ রুমী, মনির উদ্দীন পাপ্পু, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বাচ্চু ভুইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, দীপক কুমার রায়, তৌহিদুর রহমান, রেক্সোনা পারভীন সুমি, মুনীর চৌধুরি সোহেল, আলিফ দেওয়ান, মনিরুল হুদা বাবন, লুভানা তাবাসসুম, আবদুল আলীম, আমজাদ হোসেন, আরিফুর রহমান মিরাজ, মাহবুব রতন, লুৎফুন্নাহার সুমনা, গোলাম মোস্তফা, সাইফুল্লাহ সিদ্দিক রুমন ও তাহসিন মাহমুদ; উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য নাজার আহমেদ, পরামর্শক পরিষদের সদস্য গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অব:) মো. খালেদ হোসাইন প্রমুখ।