
কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়ায় অপহরণের পর সহোদর দুই শিশুকে হত্যার ঘটনায় দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে পাঁচ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং চার জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক আব্দুল গনি এই রায় ঘোষণা করেন। আদালতের দেওয়া আদেশ সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৭ জানুয়ারি বিকালে রামুর গর্জনিয়াতে সহোদর দুই শিশু মোহাম্মদ হাসান শাকিল (১০) ও মোহাম্মদ হোসাইন কাজলকে (৮) অপহরণ করে আসামিরা। পরে শিশুদের পরিবারের কাছে ফোনে চার লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এরপর পরিবার আসামিদের দাবি করা মুক্তিপণ না দিয়ে পুলিশকে খবর দিলে আসামিরা ওই দুই শিশুকে হত্যা করে গর্জনিয়া খালে লাশ ভাসিয়ে দেয়। তিন দিন পর ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি তাদের লাশ উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় নিহত শিশুদের বাবা মোহাম্মদ ফোরকান বাদী হয়ে রামু থানায় মামলা দায়ের করেন। রামু থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয়। দীর্ঘ নয় বছর মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক আব্দুল গনি গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এ রায় প্রদান করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো- মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, আব্দু শুক্কুর, আলমগীর হোসেন (ওরফে বুলু), মিজানুর রহমান, মো. শহীদুল্লাহ। একই সঙ্গে তাদের ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আবদুল মজিদ, ফাতেমা খাতুন, রাশেদা, লায়লা বেগম। এ রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বাদী ও কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট মীর মোশাররফ হোসেন টিটু বলেন, দীর্ঘ নয় বছর বিচার প্রক্রিয়া শেষে আদালত সাক্ষ্য, প্রমাণ ও ঘটনাপরিস্থিতি বিবেচনা করে আসামিদের অপরাধের সন্দেহাতীত প্রমাণ পেয়েছেন। তাই আইনের বিধান অনুযায়ী পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং চার জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষ এই রায়ে সন্তুষ্ট। প্রধান আসামি জাহাঙ্গীর আলম রায় ঘোষণার সময় উপস্থিত থাকলেও দণ্ডিত অন্য আসামিরা পলাতক রয়েছে। এ ছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলা থেকে মোকারমা সুলতানা পুতু নামের এক তরুণীকে খালাস দেওয়া হয়েছে।