ত্রিভুজ প্রেমের বলি জবি ছাত্র জোবায়েদ : পুলিশ

আপলোড সময় : ২২-১০-২০২৫ ০৫:০৯:৫৮ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২২-১০-২০২৫ ০৫:০৯:৫৮ অপরাহ্ন
রাজধানীর পুরান ঢাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসেন হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে উঠে এসেছে তার প্রেমিকা ও ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষার প্রেমকাহিনী। পুলিশ বলছে, বর্ষার পরিকল্পনায় তার প্রথম প্রেমিক মাহির রহমান এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটায়। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এম নজরুল ইসলাম।তিনি বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জোবায়েদ বংশাল থানার নূরবক্স লেনের একটি বাসায় ছাত্রী বর্ষাকে পড়াতে যেতেন। পড়াশোনার সূত্রে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু বর্ষা একই সময়ে জোবায়েদ ও মাহিরÑ দুই জনের সঙ্গেই প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ত্রিভুজ প্রেমের জটিলতা থেকে মুক্তি পেতে নিজেই হত্যার পরিকল্পনা করেন বর্ষা। পুলিশ জানায়, গত ২৬ সেপ্টেম্বর মাহির বিষয়টি নিয়ে বর্ষাকে চাপ দিলে সে জোবায়েদকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর মাহির ও তার বন্ধু ফারদিন আহমেদ আইলান মিলে ছুরি কিনে ১৯ অক্টোবর বর্ষার বাসায় অবস্থান নেয়। বর্ষা তার শিক্ষক জোবায়েদকে ডেকে আনেন। সেখানে সিঁড়ির রুমে জোবায়েদকে বর্ষার কাছ থেকে সরে যেতে বলা হয়। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে মাহির জোবায়েদের গলায় ছুরি মেরে পালিয়ে যায়। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার নজরুল ইসলাম বলেন, “মেয়েটি দুই জনের কারও কাছ থেকে সরে আসতে পারছিল না। মাহিরকে সে বলেছিল, ‘জোবায়েদকে সরাতে না পারলে আমি তোমার হতে পারবো না। এরপরই হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে তারা।” ঘটনার সময় জোবায়েদ রক্তাক্ত অবস্থায় সিঁড়িতে ছটফট করছিলেন বলে জানায় পুলিশ। এ সময় তিনি প্রেমিকা বর্ষাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আমাকে বাঁচাও।’ কিন্তু বর্ষা জবাবে বলেন, ‘তুমি না সরলে আমি মাহিরের হতে পারবো না। সংবাদ সম্মেলনে লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী জানান, বর্ষা স্বীকার করেছে হত্যার সময় সে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল এবং সিঁড়ি থেকে পুরো ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেছে। তিনি আরও বলেন, তদন্তে আমরা পেয়েছি, জোবায়েদ দোতলার সিঁড়িতে ছুরিকাঘাতের পর রক্তাক্ত অবস্থায় উপরের দরজায় ধাক্কা দিচ্ছিলেন। দরজার নিচ দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছিল।’পুলিশ ইতোমধ্যে তিন জনকে গ্রেফতার করেছেÑ প্রেমিকা বার্জিস শাবনাম বর্ষা, তার প্রথম প্রেমিক মাহির রহমান ও মাহিরের বন্ধু ফারদিন আহমেদ আইলান। তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘মাহির ও বর্ষা একই ভবনে ভাড়া থাকতো। দীর্ঘদিনের পরিচয়ের সূত্রে তাদের প্রেমের সম্পর্ক দেড় বছর ধরে। আর নিহত জোবায়েদ এক বছর ধরে বর্ষাকে পড়াতেন। মাহিরকে তার মা থানায় হস্তান্তর করার বিষয়ে এস এম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এটি পুলিশের কৌশলের অংশ ছিল। আসলে আমরা পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করে তাকে থানায় হাজির করিয়েছি। স্বেচ্ছায় সে আত্মসমর্পণ করেনি।’ অতিরিক্ত কমিশনার আরও বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা পুরোপুরি বর্ষার। ঘটনাটি বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যার মতোই এক প্রেমঘটিত অপরাধ। তিনি নিশ্চিত করেন, ‘হত্যার পেছনে কোনও রাজনৈতিক কারণ নেই। এটি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত সম্পর্কের জটিলতা থেকে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড। জোবায়েদ হোসেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ১৫তম ব্যাচের (২০১৯-২০ সেশন) শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার হোমনা উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামে। গত সোমবার তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net