
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের ভেতর অসুস্থ হয়ে তরিকুল ইসলাম শিবলী (৪০) নামে এক সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে সংবাদ সংগ্রহকালে তার মৃত্যু হয়। দুপুর দেড়টার দিকে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। জানা গেছে, তিনি চ্যানেল এস টেলিভিশনের সিটি রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এদিকে, ডিউটিরত থাকা অবস্থায় সাংবাদিক শিবলীর মৃত্যু কোনোমতেই মেনে নিতে পারছেন না, সহকর্মী ও তার আত্মীয়-স্বজনরা। সহকর্মীরা বলছেন, মৃত্যুর কিছু আগে শিবলী কার্জন হলের সামনে ডাকসুর নির্বাচনের লাইভ করেছে অথচ এর কিছুক্ষণ পরেই লাশ হলো। গতকাল মঙ্গলবার চ্যানেল এস’র স্টাফ রিপোর্টার তরিকুল ইসলাম শিবলী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল থেকে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে সরাসরি লাইভ করছিলেন। পাঠকদের কাছে তুলে ধরছিলেন ভোটের আপডেট, নিচ্ছিলেন ভোটারদের অভিমত। কিন্তু কে জানত, সেই লাইভে হবে তার জীবনের শেষ সংবাদ পরিবেশন। লাইভ শেষে, আশেপাশের উপস্থিত ভোটারদের বক্তব্য নিতে নিতে হঠাৎ করেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সঙ্গে থাকা সহকর্মীরা দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শিবলীর মৃত্যু সংবাদ মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ফেসবুকে দেখা যায়, সহকর্মীসহ অনেকের শোকবার্তা। সাংবাদিক শিবলীর কর্মস্থল স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল এস’র সহকর্মীরা তার মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে চলে আসেন কিন্তু তখনও শিবলীর নিথর দেহ ছিল মর্গে। চ্যানেল এস’র অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর শাফি উদ্দিন আহম্মদ বলেন, সকাল থেকেই পাঁচ সদস্যের একটি টিম ডাকসু নির্বাচন কভার করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিল। শিবলী ছিলেন তিন রিপোর্টারের একজন ও অপর দুইজন ছিলেন ক্যামেরাম্যান। তিনি শুধু কাজ করতেন না, খুব আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালন করতেন। সকালেই শিবলী তার ফেসবুক প্রোফাইলে সহকর্মীদের সঙ্গে একটি হাস্যোজ্জ্বল ছবি আপলোড করেন, শুধু মুখের হাসিতে যেন বলে যাচ্ছিলেন দেখুন আমরা মাঠে আছি। সাংবাদিক শিবলী তার মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগে ডাকসুর নির্বাচন নিয়ে লাইভে কথা বলল, অথচ তার নিথর দেহ মর্গে। কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না, সহকর্মী শিবলীর মৃত্যু। শিবলী চ্যানেল এস’র স্টাফ রিপোর্টার (জেনারেল বিট) হিসেবে এক বছর যাবত চাকরি করতেন। স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে থাকতেন উত্তর এলাকায়। তিনি আরও জানান, কর্মস্থল থেকে আমরা শিবলীর পরিবারের পাশে আছি। শিবলীর লাশ ঢাকা মেডিকেল থেকে সেগুনবাগিচায় তার কর্মস্থলে নেওয়া হয়, সেখানে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।