বিদ্যুৎ প্রকল্পের কয়লা খালাসে বিলম্ব

গুণতে হবে বিপুল টাকা

আপলোড সময় : ১০-০৯-২০২৫ ১০:২৫:৩৪ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ১০-০৯-২০২৫ ১০:২৫:৩৪ পূর্বাহ্ন
বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য আমদানি করা কয়লা জাহাজ থেকে খালাসে বিলম্বে সরকারকে বিপুল টাকা বাড়তি গুনতে হবে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে আসা চারটি জাহাজ থেকে প্রায় দুই লাখ ৩২ হাজার টন কয়লা খালাস হচ্ছে না। বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (পিডিবি) পায়রা কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ওসব কয়লা আমদানি করেছে। গত ১৯ জুলাই থেকে বন্দর সীমায় একে একে চারটি জাহাজ নোঙর করেছে। তাছাড়া ১৮ দিন দাঁড়িয়ে আছে এমন জাহাজও বন্দরে আছে। কয়লা খালাস বন্ধ থাকায় প্রতিদিন ৬০ হাজার ডলার (৭৩ লাখ টাকা)ওই চারটি জাহাজ ক্ষতিপূরণ গুনছে। আর এভাবে চারটি জাহাজের অপেক্ষমাণ খরচই সাড়ে পাঁচ লাখ ডলার (সাড়ে ছয় কোটি টাকা) দাঁড়িয়েছে। জাহাজ মালিক ক্ষতিপূরণের ওই বাড়তি টাকা বাংলাদেশের কাছ থেকেই আদায় করা হবে। পিডিবি এবং বিসিপিসিএল সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, পটুয়াখালীর পায়রার বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করছে বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল)। প্রতিষ্ঠানটি এককভাবে দেশের মোট কয়লা বিদ্যুতের ১০ শতাংশ উৎপাদন করে। এ কোম্পানিতে ইন্দোনেশিয়ার একটি প্রতিষ্ঠান কয়লা সরবরাহ করছে। কয়লা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বিসিপিসিএল থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা আদায় করবে। আর বিসিপিসিএল পিডিবি থেকে তা আদায় করবে। কয়লা খালাস আরো দেরি হলে আরো বাড়বে ক্ষতিপূরণের টাকার অঙ্ক। চলতি মাসে আরো প্রায় দেড় লাখ টন কয়লা নিয়ে তিনটি জাহাজের বন্দরে নোঙর করার কথা রয়েছে। ওসব জাহাজেরও যদি অপেক্ষা করতে হয়, তাহলে কাঁচামাল সংকটে পুরো বিদ্যুৎ প্রকল্পই হুমকির মুখে পড়বে। সূত্র জানায়, তহবিল সংকটের কারণে বারবার তাগাদা দেয়ার পরও পিডিবি জাহাজ ভাড়ার পাওনা পরিশোধ করতে পারছে না। অথচ জাহাজ এলে প্রতি মাসে গড়ে এক হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। বড় একটি জাহাজ থেকে লাইটারের মাধ্যমে পণ্য খালাস করতেই গড়ে ১০ কোটি টাকা খরচ হয়ে যায়। আর মাসের পর মাস ওই খরচ আটকে থাকায় লাইটার মালিকরাও জাহাজ সরবরাহ দিতে অপারগতা প্রকাশ করছে। শুধু লাইটার মালিকদের কাছেই প্রায় ৭২ কোটি টাকা বকেয়া পড়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় আট হাজার কোটি টাকা পাওনার পরিমাণ। কী পরিমাণ কয়লা নিয়ে কখন কোন জাহাজ আসে তা পিডিবিকে নিয়মিত জানানো হয়। বর্তমানে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ছয় মাসের বাকি চুক্তিতে পণ্য পাঠাচ্ছে। আর টাকা পরিশোধ করতে তারা বারবার তাগাদাও দিচ্ছে। আগের শিডিউল থাকায় এখন পণ্য চলে এসেছে। তবে বারবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সতর্ক করছে যে কোনো সময় তারা সরবরাহ বন্ধ করে দিতে পারে। সূত্র আরো জানায়, চট্টগ্রাম বন্দরে এমভি কারমেনসিটা নামের বিদেশি জাহাজ ৫৭ হাজার ২৭০ টন কয়লা নিয়ে ১৯ জুলাই বন্দর সীমায় নোঙর করে। ১৮ দিন পার হলেও তারা খালাস কার্যক্রমে যেতে পারেনি। ২৪ জুলাই ৬০ হাজার টন কয়লা নিয়ে বন্দরে আসে এমভি বিগ গ্লোরি। জাহাজটি পণ্য নিয়ে ১৩ দিন দাঁড়িয়ে আছে। তারপর ৫৫ হাজার ১০০ টন কয়লা নিয়ে বন্দরে আসে এমভি ক্লারা। আর এমভি থিয়োডরি ভেনিয়ামিসে ৬০ হাজার টন কয়লা বন্দরে আসে। কয়লা নিয়ে আসা জাহাজগুলো স্বাভাবিক জাহাজের চেয়ে একটু বড়। ফলে তাদের দৈনন্দিন খরচও বেশি পড়ে। এদিকে এ বিষয়ে পিডিবির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, পায়রার জন্য বিসিপিসিএল যে কয়লা আমদানি করে তা পিডিবি পরিশোধ করে। কিন্তু অর্থ সংকটের কারণে বিদেশি প্রতিষ্ঠান ও দেশি লাইটার মালিকদের পাওনা নিয়মিত পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে জরুরি প্রয়োজন হলে পিডিবিকে চিঠি দেয়। তখন পিডিবি কিছু হলেও পরিশোধ করে। অন্যদিকে এ বিষয়ে বিসিপিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফাইন্যান্স) মোয়াল্লেম হোসেন জানান, আমদানি কয়লার টাকা সরকারের পক্ষে পিডিবি পরিশোধ করে। গত এপ্রিলেও পিডিবিকে চিঠি দিয়ে বকেয়া পরিশোধ করতে তাগাদা দেয়া হয়েছে। সর্বশেষ গত মাসে পিডিবি ৩০০ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। কিন্তু বিদেশি সরবরাহকারী, লাইটার মালিক, জাহাজ মালিকসহ বিভিন্ন পক্ষের কাছে বকেয়া জমে গেছে প্রায় আট হাজার কোটি টাকা। যে কারণে জাহাজ পণ্য নিয়ে আসার পরও তা এখন আর লাইটার জাহাজ খালাস করছে না।

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net