
ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো)-এর প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে ভয়াবহ দুর্নীতি, অনিয়ম ও অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। নানা কেলেঙ্কারির পরও তিনি বহালতবিয়তে দায়িত্ব পালন করছেন।
জানা গেছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিদ্যুৎ খাতে সীমাহীন দুর্নীতি সংঘটিত হয়। সে সময় প্রিপেইড মিটার স্থাপনের প্রকল্পে মফিজুল ইসলাম ও সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি লিয়াকত শিকদারের নেতৃত্বাধীন সিন্ডিকেট ভয়াবহ অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে। এই সিন্ডিকেটের সহযোগী হিসেবে ছিলেন মফিজুল ইসলামের তিন ঘনিষ্ঠ সহকর্মী জাকির, মঈনুদ্দিন ও শরীফ। তারা মিলিতভাবে ডেসকোকে পরিণত করেছিলেন দুর্নীতির আখড়ায়।
অভিযোগ রয়েছে, অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ তারা বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ডে ব্যয় করতেন। ঢাকার দক্ষিণখানে একটি ভাড়া করা ফ্ল্যাটে নিয়মিত মদ, জুয়া এবং নারী নিয়ে কেলেঙ্কারির আসর বসাতেন। একপর্যায়ে তৎকালীন বিমানবন্দর থানা ছাত্রলীগ কর্মীরা মফিজুল ইসলামকে ওই ফ্ল্যাট থেকে এক নারীসহ আপত্তিকর অবস্থায় আটক করে। পরে প্রায় ২০ লাখ টাকা দিয়ে এবং লিয়াকত শিকদারের মধ্যস্থতায় তিনি বিষয়টি ‘মীমাংসা’ করেন। যদিও ঘটনাটি ডেসকোার সদর দফতর পর্যন্ত গড়ায়, তবুও প্রভাবশালী আশীর্বাদের কারণে শাস্তির মুখে পড়েননি। বর্তমানে অভিযুক্ত তিন সহযোগী চাকরিতে নেই, তবে মফিজুল ইসলাম এখনো বহাল আছেন। ঘটনার বিষয়ে জানতে প্রতিবেদক মফিজুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি শুরুতে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন। পরে সরাসরি সাক্ষাতে দুর্নীতি ও নারী কেলেঙ্কারির বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, আপনার জন্য আমি নির্বাহী পরিচালক হিসেবে প্রমোশনের পরীক্ষা খারাপ করব। এগুলো সব মিথ্যা। আর কিছু বলতে চাই না। এরপর তার ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি সাংবাদিক পরিচয়ে প্রতিবেদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ফোন করে প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করেন। অভিযোগ রয়েছে, এইভাবে মফিজুল ইসলাম তার সমালোচকদের দমন ও ভিন্নমতকে চুপ করিয়ে দেন।