বেশির ভাগ সময়ই বন্ধ রেলের কংক্রিট সিøপার কারখানা

আপলোড সময় : ০৬-০৯-২০২৫ ০৩:৩৫:০৫ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০৬-০৯-২০২৫ ০৩:৩৫:০৫ অপরাহ্ন

* সাত মাসে দুই দফায় মাত্র ৫০ দিন কারখানা সচল ছিল। আর গত ২৯ জুলাই তৃতীয় দফায় চালু হলেও তা ঠিকাদারের মালপত্র বুঝে নেয়া পর্যন্ত  চলবে
* কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, অবহেলা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে স্লিপার কেনার আগ্রহ, জনবল সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণেই সরকারি ওই কারখানাটি বন্ধ থাকে বছরের বেশির ভাগ সময়ই

বছরের বেশির ভাগ সময়ই বন্ধ থাকছে রেলের কংক্রিট স্লিপার তৈরির কারখানা। বাংলাদেশ রেলওয়ের একমাত্র কংক্রিট স্লিপার কারখানাটি হচ্ছে সুনামগঞ্জের ছাতক কংক্রিট স্লিপার প্লান্ট। চলতি বছরের সাত মাসে দুই দফায় মাত্র ৫০ দিন ওই কারখানা সচল ছিল। আর গত ২৯ জুলাই তৃতীয় দফায় চালু হলেও তা ঠিকাদারের মালপত্র বুঝে নেয়া পর্যন্ত চলবে। মূলত কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, অবহেলা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে স্লিপার কেনার আগ্রহ, জনবল সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণেই সরকারি ওই কারখানাটি বন্ধ থাকে বছরের বেশির ভাগ সময়ই। কোনো কোনো সময়ে পুরো বছরই উৎপাদন বন্ধ থাকে। যদিও কর্তৃপক্ষের দাবি, কারখানায় জনবল সংকটের কারণে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকেই কংক্রিট স্লিপার কিনছেন তারা। বাংলাদেশ রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সরকারি কংক্রিট স্লিপার কারখানাটি চলতি বছরে এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকবার বন্ধ হয়। প্রথম দফা গত ২ ফেব্রুয়ারি চালু হয়ে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে উৎপাদন বন্ধ হয়ে ২৭ ফেব্রুয়ারি চালু হয়। দ্বিতীয় দফায় গত ৪ মে চালু হয়ে কাঁচামালের অভাবে ২৯ মে বন্ধ হয়ে যায়। দুই মাস বন্ধ থাকার পর গত ২৯ জুলাই পুনরায় উৎপাদন শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট অনেকের ধারণা, কারখানাটি খুব বেশি দিন চালু থাকার সম্ভাবনা নেই। মূলত রেলওয়ের ভেতরে ও বাইরে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটের অব্যাহত দুর্নীতিই কারখানাটিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। ফলে কারখানাটির উৎপাদন অনিয়মিত হয়ে পড়ে। সূত্র জানায়, বিগত ১৯৮৮ সালে দৈনিক ২৬৪টি স্লিপার উৎপাদনক্ষমতা নিয়ে ছাতকের কংক্রিট স্লিপার প্লান্টের যাত্রা শুরু হয়। কাঠের তৈরি স্লিপারের স্থায়িত্ব গড়ে ১০ বছর আর কংক্রিট স্লিপারের স্থায়িত্ব ৫০ বছরের মতো হওয়ায় তৎকালীন সরকার দেশের রেললাইনকে মজবুত, টেকসই ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে ছাতকে দেশের একমাত্র কংক্রিট স্লিপার কারখানা স্থাপন করে। কারখানাটি উৎপাদন শুরুর পর থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ভালোই চলছিল। তবে ২০১২, ২০১৪, ২০১৬ ও ২০২০ সালে কয়েকবার কারখানাটি বন্ধ থেকে চালু হলেও বেশি দিন ছিল না তার স্থায়িত্ব। যান্ত্রিক ত্রুটি ও কাঁচামাল সংকটের কারণে এ স্লিপার প্লান্টটি এখন বছরের বেশির ভাগ সময়ই বন্ধ থাকে। এরই মধ্যে বেসরকারি তিনটি কংক্রিট স্লিপার প্লান্ট পঞ্চগড়, বাংলাবান্ধা ও জামালপুরে গড়ে উঠেছে। এখন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সেখান থেকেই স্লিপার সংগ্রহ করে। আর ছাতক কংক্রিট স্লিপার কারখানাকে পরিকল্পিতভাবে জনবল শূন্য করে রাখা হয়।
এদিকে রেলওয়ে সংশ্লিষ্টদের মতে, স্লিপার কারখানাটির গুরুত্বপূর্ণ পদসহ বেশির ভাগ পদ শূন্য রয়েছে। ওয়েল্ডার গ্রেড-১, লাইনম্যান কাম ওয়্যার গ্রেড-২, সহকারী ল্যাবরেটরি, গাড়িচালক, টুলকিপার, ট্রাভারসার অপারেটর, কাস্টিং মেশিন অপারেটর, মেশিনিস্ট, মেকানিক, কংক্রিট মিক্সার অপারেটর, ডিমোল্ডিং অপারেটর, সহকারী ক্রাশার অপারেটর, সহকারী ল্যাবরেটরি হেলপার, ওয়েল্ডার হেলপার, টেনশনিং হেলপার, নিরাপত্তা প্রহরী, খালাসি, পরিচ্ছন্নতা কর্মীসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে জনবল সংকট রয়েছে। এককথায় বর্তমানে প্রায় কর্মকর্তা শূন্যছাতক রেলওয়ে ও কংক্রিট স্লিপার কারখানা। আর যারা দায়িত্বে রয়েছেন তারা বেশির ভাগ সময়ই ঢাকা ও সিলেটে থাকেন।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ে সিলেটের সিনিয়র সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী (ছাতক অতিরিক্ত দায়িত্ব) আজমাঈন মাহতাব জানান, ছাতক কংক্রিট স্লিপার প্লান্টের উৎপাদন বন্ধ ছিল। ২৯ জুলাই থেকে ঠিকাদারের সহযোগিতা নিয়ে পুনরায় কারখানাটি চালু হয়েছে। জনবল না থাকার কারণে ঠিকাদারের সহযোগিতা নেয়া লাগছে। মালামাল বুঝে নেয়া পর্যন্ত তারা সহযোগিতা করবে। আর স্থায়ী জনবল নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত এভাবে চলবে কারখানাটি।
 

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net