
নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, তা এখন অনেকটাই স্তিমিত হয়ে পড়েছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, অন্তর্বর্তী সরকার কি পথ হারিয়েছে? গতকাল সোমবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ওয়াচ’ নামে নতুন উদ্যোগের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ প্রশ্ন তেলেন। অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থনীতি বিষয়ক শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় বলেন, এই মুহূর্তে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বড় ঝড় বয়ে যাচ্ছে। জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা বৈষম্যবিরোধী যে চেতনা অর্জন করেছি, সেটি দেশের বড় সম্পদ। এই সম্পদকে অবশ্যই ঝড় থেকে রক্ষা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা যে উচ্ছ্বাস নিয়ে সরকার ও সংস্কার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলাম, তা এখন কিছুটা ম্লান। সংস্কার কমিটিগুলোতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, সংখ্যালঘু ও অসুবিধাগ্রস্ত মানুষের অংশগ্রহণ ছিল না। সংস্কারের জন্য কারিগরি সমাধান দেওয়া সম্ভব, কিন্তু তা বাস্তবায়নে দরকার জবাবদিহিমূলক নাগরিক চাপ। আলোচনায় সিপিডির আরেক সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ১৯৯১ সালে ২৯টি টাস্কফোর্স গঠন হয়েছিল। তখনও অনেক সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়িত হয়নি। তারই ধারাবাহিকতায় নানা ধাক্কার পর আমরা জুলাই অভ্যুত্থান প্রত্যক্ষ করেছি। তাই এবার সংস্কার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা এবং নাগরিকদের সম্পৃক্ত করাই বড় চ্যালেঞ্জ। অর্থনীতিবিদ সেলিম রায়হান বলেন, সংস্কারবিরোধী শক্তিগুলো এখনও সরকার ও সমাজের ভেতরে রয়ে গেছে। রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের কতটা বদলেছে বা অঙ্গীকারবদ্ধ, সেটিই এখন মুখ্য। বাংলাদেশ রিফর্ম ওয়াচ একটি প্রেশার গ্রুপ হিসেবে রাজনৈতিক দলগুলোকে জবাবদিহির আওতায় আনতে কাজ করবে বলে আশা করছি। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সিনিয়র গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর সংস্কারের প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল। প্রশ্ন হলো, এক বছরে তা কতটা অগ্রসর হলো? সাধারণ মানুষের মতামত শোনার ধারাবাহিকতা থেকেই আজকের রিফর্ম ওয়াচের যাত্রা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান। এছাড়া রাজনৈতিক নেতা, অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।