
আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। তালেবান সরকারের মুখপাত্র মৌলভী জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছেন, সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী কুনার ও নানগারহার প্রদেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত ৮০০ জনে। আহত হয়েছেন প্রায় ২ হাজার ৫০০ মানুষ। গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, উদ্ধার অভিযান চলমান থাকায় এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
গত রোববার স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে আঘাত হানে ৬ মাত্রার এ ভূকম্পন। এর কেন্দ্রস্থল ছিল জালালাবাদ শহর থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূরে এবং গভীরতা ছিল মাত্র ৮ কিলোমিটার। ভূমিকম্পের পর একাধিক আফটারশক অনুভূত হয়, যা আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে তোলে। কুনারের রাজধানী আসাদাবাদে প্রাদেশিক হাসপাতালের প্রধান চিকিৎসক ডা. মুলাদাদ জানিয়েছেন, প্রতি পাঁচ মিনিট পরপর নতুন রোগী আসছে। তার ভাষায়, ‘পুরো হাসপাতাল আহত রোগীতে পূর্ণ হয়ে গেছে, অনেককে মেঝেতে শুইয়ে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।’ গত কয়েক ঘণ্টায় শুধু এই হাসপাতালে অন্তত ১৮৮ জন আহত আসেন। অন্যদিকে নানগারহারের প্রধান হাসপাতালে অন্তত ২৫০ জন আহতকে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে, ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত আফগানিস্তানের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মহল। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, আফগানিস্তানের মানুষের পাশে দাঁড়াতে জাতিসংঘ কোনো প্রয়াসেই কার্পণ্য করবে না। এক বিবৃতিতে তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
এদিকে ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কুনার প্রদেশের নুরগাল জেলায়। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, প্রায় পুরো গ্রাম ধ্বংস হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘শিশুরা ধ্বংসস্তূপের নিচে। বৃদ্ধরা ধ্বংসস্তূপের নিচে। তরুণরাও ধ্বংসস্তূপের নিচে।’ তিনি আন্তর্জাতিক সহায়তার জন্য আকুল আবেদন জানিয়ে বলেন, আমাদের সাহায্য প্রয়োজন। কেউ আসুক এবং ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে মানুষদের উদ্ধার করতে সাহায্য করুক। এখানে মরদেহ সরানোর মতো কেউ নেই।