
তুরাগ থেকে মনির হোসেন জীবন
রাজধানী ঢাকার প্রবেশ মুখ উত্তরার আব্দুল্লাহপুর ঢাকা-ময়মনসিংহ প্রধান সড়কের ভাঙাচূড়া রাস্তাঘাট নতুন করে মেরামত, সংস্কার ও রাস্তার উন্নয়ন কাজ বেশ জোরেসোরে শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) কর্তৃপক্ষ। গত শনিবার রাস্তার কাজ আরম্ভ হয়ে গত রোববার বিকেল পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। এলক্ষ্যে উত্তরা, তুরাগ, গাজীপুরের টঙ্গীবাসীসহ সর্বস্তরের জনগণ বর্তমান সরকার প্রধান সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টাসহ ডিএনসিসির প্রশাসককে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও সচেতন মহলসহ কেউ কেউ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। গত রোববার সকালে রাজধানীর ব্যস্ততম নগরী উত্তরার আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ড সরেজমিন পরিদর্শন এবং স্থানীয় লোকজন, পথচারী ও পরিবহন যাত্রীদের সাথে কথা বলে এমন চিত্র দেখা গেছে। তথ্য অনুসন্ধান ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত শনিবার সকাল থেকে উত্তরার আব্দুল্লাহপুর আউটগোয়িং বাম লেনের রাস্তা মেরামতের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এরপর যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে রাস্তার ডান পাশের লেনটি জনগণের জন্য সচল রাখা হয়েছে।
গত রোববার সকালে সড়কের ডান লেন, তাসিন পাম্প এলাকা থেকে শুরু করে টঙ্গী ব্রিজ পর্যন্ত গর্ত সংস্কার এবং দক্ষিণে পলওয়েল মার্কেট পর্যন্ত সড়কের উন্নয়ন কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ১৮/২০ জন নারী-পুরুষ মাটি কাটার শ্রমিক (লেবার) কোদাল দিয়ে টুকরিতে করে মাটি রাস্তায় ফেলছে। কেউ কেউ উঁচু নিচু রাস্তা সমান করছে। এছাড়া একটি ভেকু মেশিন দিয়ে সড়কের মাটি কাটা, অন্যত্র সরানো ও সড়কের মাটি সমান করতে দেখা গেছে। বিশেষ করে উত্তরার আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম পাশে স্থানীয় দুটি পেট্রোল পাম্পের সামনের অংশসহ পুরো রাস্তায় দ্রুত গতিতে নির্মাণ কাজ চলমান আছে। পশ্চিম পাশের রাস্তাটি অনেকটাই বাঁশ দিয়ে বন্ধ করা হয়। দিনের বেলায় কাজ করার ফলে ঘরমুখো মানুষ কিছুটা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। রিকশা ও যানবাহন আপাতত বন্ধ রয়েছে। সাধারণ মানুষ পায়ে হেঁটে পথ চলাচল করছেন। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী ও পথচারীরা দৈনিক জনতাকে জানান, আমাদের কষ্ট হলেও কিছু করার নেই। দীর্ঘদিন পর হলেও ভাঙাগড়া রাস্তাটি মেরামত ও সংস্কার করা হচ্ছে। মহাসড়কের উন্নয়ন কাজ অনেকটাই বেশ জোরেসোরে শুরু হয়েছে। এতে আমরা খুশি ও আনন্দিত। এদিকে গত রোববার সকাল ১১টার পর উত্তরার আব্দুল্লাহপুরে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের দুজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে সরেজমিনে এসে সড়কের চলমান কাজ তদারকি করতে দেখা গেছে।
জানা যায়, রাজধানীর সর্ব উত্তরের থানার নাম উত্তরা ও তুরাগ। এই এলাকার অধিকাংশ সড়ক-মহাসড়ক রাস্তাঘাট ভাঙাচূড়া, সড়কে বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দ ভরা। তার মধ্যে আব্দুল্লাহপুর মহাসড়কে অসহনীয় যানজট, জলজট, উপরে সিঙ্গাপুর সড়ক নিচে হলো আব্দুল্লাহপুর। সড়কটি সামান্য বৃষ্টিতেই কাদা-পানিতে একাকার হয়ে যায়। এছাড়া রাজধানীর ঢাকার সাথে উত্তরবঙ্গের আটাশটি রোডে চলাচলরত পরিবহন যাত্রীসহ গাজীপুর, টঙ্গী ও উত্তরায় বসবাসরত লাখো লাখো মানুষের জনদুর্ভোগসহ নাগরিক বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে সম্প্রতি জাতীয় দৈনিক জনতা পত্রিকায় ফলাও করে সরেজমিন একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও বর্তমান সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে টনক নড়ে। এরপর সর্বমহলে শুরু হয় দৌড়ঝাঁপ।
একটি সূত্র জানিয়েছে, গত সোমবার সকালে উত্তরার আব্দুল্লাহপুর থেকে টঙ্গী ব্রিজ ও বেড়িবাঁধ পর্যন্ত পদযাত্রা ও মানববন্ধনের আয়োজন করে উদ্যম ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ নামে একটি সংগঠন এবং বৃহত্তর উত্তরাবাসী। মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন সড়ক ও টঙ্গী বেইিল ব্রিজের সংস্কার, জননিরাপত্তায় সিসিটিভি স্থাপন করা, পুলিশ টহল বৃদ্ধিকরণ, পাবলিক টয়লেট স্থাপন ও পাবলিক লাইব্রেরি স্থাপনের জন্য সরকার ও ডিএনসিসির প্রতি জোর দাবি জানিয়ে আসছিল।
মানববন্ধন বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম প্রিন্স সাংবাদিকদের জানান, উত্তরার সর্বস্তরের জনগণ ঐক্যবদ্ধ এবং আমাদের দাবির প্রেক্ষিতে অবশেষে উত্তরার আব্দুল্লাহপুর এলাকায় সড়ক সংস্কারের কাজ গত শনিবার থেকে শুরু হয়ে রোববার পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। গত শনিবার থেকে উত্তরার আব্দুল্লাহপুর আউটগোয়িং বাম লেনের কাজ শুরু হয় এবং যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ডানের লেনটি সচল রাখা হয়েছে। তিনি আরো জানান, গত রোববার সকালে সড়কের ডান পাশের লেন, তাসিন পাম্প এলাকা থেকে টঙ্গী ব্রিজ পর্যন্ত গর্ত সংস্কার এবং দক্ষিণে পলওয়েল মার্কেট পর্যন্ত সড়কের উন্নয়ন কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। উত্তরাবাসী ফেসবুক পেইজ ও রফিকুল ইসলাম প্রিন্সের ফেসবুক থেকে এসব তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে।
সম্প্রতি জাতীয় দৈনিক জনতায় উত্তরা ও তুরাগের রাস্তাঘাট ভাঙাচূড়া, মহাসড়ক ও সড়কে অসহনীয় যানজট, অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, লেগুনা গাড়ি, কারহাট, পাসপোর্ট অফিস, ফুটপাত দখল, কাঁচা বাজার স্থাপন, জলজট, দলবাজি, দখলবাজি, চাঁদাবাজি, নাগরিক জনদুর্ভোগসহ বিভিন্ন নানাবিধ সমস্যা নিয়ে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল।