
গাইবান্ধায় বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় কয়েকটি মোটরসাইকেল ও উপজেলা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। আহত হন এক পুলিশ সদস্য, এক সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ১০ জন। গতকাল রোববার দুপুরে সাদুল্লাপুর শহরে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. মইনুল হাসান সাদিকের অপসারণ দাবিতে সাদুল্লাপুরে বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন। সে সময় জেলা বিএনপি নেতা সাদিক, উপজেলা বিএনপি নেতা শামসুল ও সালাম সমর্থিত নেতাকর্মীরা লাঠি নিয়ে বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালান। ডা. সাদিকের অপসারণ দাবি করে বিক্ষোভকারীরা জানান, সাদুল্লাপুর উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নে বিএনপির ওয়ার্ড কমিটিতে কাউন্সিল ছাড়াই আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসন করে পকেট কমিটি গঠনের চেষ্টা চলছে। এরই প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশ করা হয়। তখন ডা. মইনুল হাসান সাদিক, উপজেলা নেতা শামসুল হাসান ও সালাম মিয়ার সমর্থক নেতাকর্মীরা শাহিন আল পারভেজের নেতৃত্বে লাঠি নিয়ে বিক্ষোভকারী ও সাংবাদিকের ওপর হামলা চালায়। এতে উভয় পক্ষের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। হামলায় উভয় পক্ষের একাধিক ব্যক্তি আহত হন। পরে উত্তেজিত নেতাকর্মীরা উপজেলা বিএনপির কার্যালয় ও কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। এ সময় উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শামসুল হাসান ও সদস্যসচিব আব্দুস সালাম মিয়া অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মাঠে নামে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সাদুল্লাপুর শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। এ বিষয়ে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহীন আল পারভেজ বলেন, ‘হঠাৎ করেই আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। দলীয় কার্যালয়ে ঢ়ুকে শহীদ জিয়া, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি ও পোস্টার ছিঁড়ে চেয়ার ভাঙচুর করে। এ সময় অফিসের সামনে থাকা ৪-৫টি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করা হয়।’ অন্যদিকে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শামসুল হাসান বলেন, ‘জেলা সভাপতি ডা. সাদিকের বিরুদ্ধে মিছিল করেছে বিএনপির একাংশ। পরে তারা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে অফিস ও মোটরসাইকেল। মূলত আওয়ামীপন্থি ও জামায়াতের লোকজন নিয়ে এ হামলা করা হয়েছে। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো।’ তবে অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ আলম মিয়া বলেন, ‘জেলা সভাপতি ডা. সাদিকের অপসারণ দাবিতে শান্তিপূর্ণ মিছিল করছিলাম। কিন্তু সাদিকপন্থিরা হামলা করলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে আমাদের পক্ষের ৫-৭ জন আহত হয়েছেন।’ সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজউদ্দিন খন্দকার বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।’