কালো টাকা সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিলেন দুদক চেয়ারম্যান

আপলোড সময় : ২৬-০৮-২০২৫ ০৪:৫১:৫৯ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২৬-০৮-২০২৫ ০৪:৫১:৫৯ অপরাহ্ন
ভোটের সংস্কৃতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে কালো টাকা সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। তিনি বলেছেন, নির্বাচন হলে টাকা-পয়সার খরচ বেড়ে যায় বিভিন্ন কারণে। আমাদের দেশে ভোটার কেনারও একটা ব্যাপার আছে। টাকা-পয়সার সরবরাহ যখন বাড়ে, একটা হচ্ছে ডিমান্ড সাইড, আরেকটা সাপ্লাই সাইড। ভোটার তো কিছু টাকা চাইবেই, কিছু সুবিধা চাইবে। আমাদের আসলে সাপ্লাই সাইড বন্ধ করতে হবে। সাপ্লাই সাইড কারা বন্ধ করবে, যারা সরবরাহ করে, সেক্ষেত্রে আমাদের ব্যাংকিং ইন্টেলিজেন্স আছে। আমাদেরও কিছু ভূমিকা আছে। যতটা সম্ভব, নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। গতকাল সোমবার সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। আবদুল মোমেন বলেন, সাংবাদিকদেরও দায়িত্ব আছে, কোথাও বেশি টাকা খরচ হলে সেটা আমাদের চোখে পড়তে হবে। প্রার্থীরা তাদের সম্পদ বিবরণী জমা দেবেন। সেখানে যদি দেখা যায়- তারা কিছু লুকাচ্ছে, সেটা অভিযোগ আকারে দুদককে দেবেন। দুদক কাজ করবে। আমি এর আগেও কাজ করেছি। ভোটে কালো টাকার সরবরাহ বাড়লে মূল্যস্ফীতিও বাড়ার শঙ্কা থাকে বলে মনে করেন দুদক চেয়ারম্যান মোমেন। হুট করে দেশে অবৈধ টাকার পরিমাণ বেড়ে যাবে, তাতে একপর্যায়ে মুদ্রাস্ফীতি তৈরি করতে পারে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে আগে থেকেই। এক সাংবাদিক জানতে চান, যারা প্রার্থী হবেন, তাদের দুদক নজরদারি করবে কি না? জবাবে আবদুল মোমেন বলেন, আমাদের দুদকের সীমাবদ্ধতা সবাইকে মনে রাখতে হবে। এই সীমাবদ্ধতার মধ্যে আমাদের পক্ষে যতটা সম্ভব, আমরা লক্ষ্য রাখব। হলফনামার তথ্য অসংগতি নিয়ে দুদক কাজ করবে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে সংস্থার চেয়ারম্যান বলেন, হলফনামা দাখিল করার পরে হাতে সময় খুব কম থাকে। এটা পরীক্ষা করার সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আমার মনে হয়, মিডিয়া এই কাজটা করতে পারে। শুরুতেই আপনাদের যদি মনে হয়, প্রার্থী অবিশ্বাস্য রকমের কম সম্পদ দাখিল করেছেন এবং বাস্তবে সম্পদ অনেক বেশি, সাথে সাথে আপনারা রিপোর্ট করবেন। আমরা আমাদের মতো কাজ শুরু করব। কালো টাকার দৌরাত্ম্য মোকাবেলায় দুদক কী সুপারিশ করবে? দুদক চেয়ারম্যান মোমেন বলেন, প্রথমত কালো টাকা গ্রহণযোগ্য নয়, এটা রাষ্ট্র একাধিকবার বলেছে। এর পক্ষে কথা বলার সুযোগ নেই। আমরা চাই কালো টাকার ব্যবহার বা প্রচার যেন না হয়। এটাই আমরা চাই। তিনি বলেন, কালো টাকা নিয়ে নির্বাচনে আসার সুযোগ একেবারেই নেই। তার পরও যদি কেউ আসে আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে, আপনারা ধরিয়ে দেবেন। আমরা আমাদের পক্ষে যতটা সম্ভব কাজ করে যাব। শুধু দুদক নয়, বাংলাদেশের অনেক প্রতিষ্ঠান আছে-যারা কালো টাকার মালিকদের বিরুদ্ধে কাজ করছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে শুরু করে অর্থ মন্ত্রণালয়, বিএফআইইউ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের বিরুদ্ধে কাজ করছে। এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, আপনারা দায়িত্ব নেয়ার পর অনেক মামলা হয়েছে, সেগুলো ডিসেম্বরের মধ্যে নিষ্পত্তি হওয়ার মতো অবস্থায় আছে কি না? জবাবে মোমেন বলেন, আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে, দুদক বিচারও করে। দুদকের কাজ বিচার করা নয়, দুদকের কাজ মামলাটাকে প্রস্তুত করে আদালতে দাখিল করা। যেসব মামলা আদালতে দাখিলকৃত ও চলমান, সেক্ষেত্রে তারিখগুলো যদি ঘন ঘন পড়ে-তাহলে আশা করতে পারেন দ্রুত রায় হবে। আদালত যদি দীর্ঘ সময় নেয়, তাহলে দেরি হবে। আমরা প্রত্যাশা করব এবং আমরা সংবেদনশীল সকলকেই বলব, যেসব মামলা আমরা আদালতে দাখিল করেছি, সেগুলো যেন দ্রুত নিষ্পত্তি হয় এবং বিচার যেন সবার জন্য হয়। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুদকের কোনো পরিকল্পনা আছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে সংস্থাটির চেয়ারম্যান আবদুল মোমেন বলেন, আমরা পরিকল্পনা করব। আমি তো আগেই বলেছি, দুদকের একটি নির্দিষ্ট কাজ আছে। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ আমাদের খুব কম। তার পরও আমরা সজাগ থাকার চেষ্টা করব-যাতে নির্বাচনকালীন কালো টাকার ছড়াছড়ি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। তিনি বলেন, একদম সুনির্দিষ্ট হুঁশিয়ারি যারা কালো টাকা ব্যবহার করছেন, আপনারা তাদের প্রত্যাখ্যান করুন। এক প্রশ্নের জবাবে আবদুল মোমেন বলেন, সামনে একটা ভালো নির্বাচন যাতে হয়, সেজন্য সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বারবার একটা ভালো নির্বাচনের কথা বলেছেন। সেই পরিস্থিতি আমরা স্পষ্ট দেখতে পারছি। যদিও নির্বাচন দুদকের বিষয় নয়, নাগরিক হিসেবে দেখতে পারছি সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। আমরা আশা করব, নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন হবে। আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচন বিলম্বিত হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে দুদক চেয়ারম্যান আবদুল মোমেন বলেন, আমি যেহেতু গণক নই, কাজেই...আমি এখন পর্যন্ত যেটুকু বুঝতে পারছি নির্বাচন সময়মতোই হবে। একদম নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন হবে।

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net