সিন্ডিকেটের কারসাজিতে বাড়ছে চালের দাম

আপলোড সময় : ২১-০৮-২০২৫ ০৪:৫২:৩২ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২১-০৮-২০২৫ ০৪:৫২:৩২ অপরাহ্ন
দেশের পাইকারী ও খুচরা বাজারে হু হু করে বাড়ছে চালের দাম। যদিও দেশে চালের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। বেসরকারিভাবে চাল আমদানির অনুমতিও দেয়া হয়েছে। কিন্তু ধানের দাম বেশি অজুহাতে মিলার সিন্ডিকেট কারসাজি করে বাজারে চালের দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে। মিল পর্যায়ে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) চালের দাম সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু সরকারের তদারকি সংস্থাগুলো নিষ্ক্রিয়। ফলে ভরা বোরো মৌসুমেও অস্থির হয় উঠেছে চালের বাজার। পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এবং খাদ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, খাদ্যশস্যের নিরাপদ মজুত সরকারি গুদামে রয়েছে। বাজারেও সরবরাহ পর্যাপ্ত। কিন্তু মিলাররা কৃষকের মাঠের ধান মনপ্রতি ১১০০-১২০০ টাকায় কিনে গুদামজাত করেছে। পরে সংকট দেখিয়ে নিজেরাই বাড়াচ্ছে দাম। ফলে পাইকারি ও খুচরা বাজারে হু হু করে বড়েছে দাম। এখন এক কেজি মোটা চাল কিনতেও খুচরা বাজারে ৬০ টাকা খরচ হয় আর ৯০ টাকায় ঠেকেছে সরু চালের কেজি। সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তদের তদারকির অভাবে মিলার সিন্ডিকেট নির্বিঘ্নে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। আর নাভিশ্বাস উঠছে ক্রেতাসাধারণের। সূত্র জানায়, দেশের নওগাঁ, দিনাজপুরসহ একাধিক স্থানে মিল পর্যায়ে এখন মিনিকেট ৫০ কেজির বস্তা ৩৮০০ টাকায় বিক্রি হয়। তিন মাস আগে তা ৩৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। নাজিরশাইল ২৫ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২০০০ টাকায়। আগে তা ১৮০০ টাকা ছিল। বিআর ২৮ জাতের চাল ৫০ কেজির বস্তা ২৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা আগে ২৭০০ টাকা ছিল। তাছাড়া মোটা জাতের চালের মধ্যে স্বর্ণা চাল ৫০ কেজির বস্তা প্রতি ২৭০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তিন মাস আগে ২৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর বর্তমানে রাজধানীর আড়তগুলোয় পাইকারি পর্যায়ে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) মিনিকেট ৩৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা আগে ৩৬০০ টাকা বিক্রি হয়েছে। ২৫ কেজি বস্তার নাজিরশাইল ২১৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আগে ১৯৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি ৫০ কেজির বস্তা বিআর ২৮ জাতের চাল ২৯৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তিন মাস আগে ২৭৫০ টাকা ছিল। তাছাড়া স্বর্ণা জাতের মোটা চাল ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২৭৫০ টাকা। যা আগে ২৫৫০ টাকা ছিল। সূত্র আরো জানায়, সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী সরকারি গুদামে খাদ্যশস্যের নিরাপদ মজুত রয়েছে। গুদামে মোট ২২ লাখ ৮ হাজার ৯২৯ টন খাদ্যশস্য মজুত আছে। এর মধ্যে চালের মজুত আছে ১৯ লাখ ৯৯ হাজার ৯১৬ টন। পাশাপাশি গম আছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৮১০ টন। সঙ্গে ধানের মজুত আছে ৮০ হাজার ৩১৩ টন। পাশাপাশি রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা বাজারেও চালের কোনো সংকট নেই। আড়ত থেকে শুরু করে খুচরা বাজারের প্রত্যেকটি দোকানে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে চালের বস্তা। এদিকে পাইকারী ও খুচরা চাল ব্যবসায়ীদের মতে, দেশে এখনো বোরোর ভরা মৌসুম চলছে। কৃষকের মাঠের ধান চাল হয়ে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এখন সব ধরনের চালের দাম কমার কথা। কিন্তু এবার উলটো বস্তায় সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা বেড়েছে। মিলারদের কারসাজিতেই এমন পরিস্থিতি হয়েছে। এবার মিলাররা কৃষকের ধান মাঠ থেকেই কিনে নিয়েছে। পরে সংকট দেখিয়ে নিজেরাই ধান ও চালের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। গত তিন মাস ধরেই মিলাররা বাড়তি দামে চাল বিক্রি করছে। ফলে পাইকারি ও খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়ছে। যদিও সরকার চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে। ওই চাল দেশের বাজারে আসলে দাম হয়তো কমতে থাকবে। অন্যদিকে মিলাররা বলছেন, ধানের দাম অনেক বাড়তি। যে কারণে বেশি দামে ধান কেনায় চালের উৎপাদন মূল্য বেড়ে যাচ্ছে। জিরাশাইল ধানের দাম মনপ্রতি ১৫০ টাকা বেড়েছে। সঙ্গে কাটারি ধানের দাম মনপ্রতি ১৫০-২০০ টাকা বেড়েছে। এর প্রভাবে পাইকারিতে কেজিপ্রতি চাল এক থেকে তিন টাকা বেড়েছে। এ বিষয়ে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন জানান, বোরো মৌসুমে চালের দাম কখনোই বাড়ার কথা নয়। চালের দাম বাড়লে সব শ্রেণির মানুষের সমস্যা হয়। তার মধ্যে নিম্ন আয়ের মানুষ সব চাইতে বেশি কষ্টে থাকে। তাই চালের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে তদারকি জোরদার করতে হবে। এ প্রসঙ্গে বাজার তদারকি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানান, ভোক্তা অধিদপ্ত তিন পর্যায়ে তদারকি করছে। ঈদের পর থেকেই বাজারে তদারকি চলমান আছে। কারোর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে দাম বাড়ানোর প্রমাণ পেলে আইনের আওতায় আনা হবে।

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net