
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) সব সদস্যের উদ্দেশে ওয়াকিটকিতে কমিশনার হাসিব আজিজের দেওয়া বক্তব্য ফাঁস করার অভিযোগে গ্রেপ্তার কনস্টেবল অমি দাশকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দীন শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গ্রেপ্তার কনস্টেবল অমি দাশকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে, গত রোববার রাতে কনস্টেবল অমি দাশকে গ্রেপ্তার করে খুলশী থানা পুলিশ। অমি দাশ পুলিশের টেলিকম ইউনিটের কনস্টেবল। তিনি প্রেষণে সিএমপির খুলশী থানায় কর্মরত আছেন। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে অফিসিয়াল সিক্রেটস আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেপ্তার অমি দাশ চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বাসিন্দা। নগরের সল্টগোলা ক্রসিং এলাকার ঈশান মিস্ত্রির হাট- সংলগ্ন সড়কে গত ১১ আগস্ট রাতে বিক্ষোভ মিছিল করেন কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এ সময় বিক্ষোভকারীদের হামলায় পুলিশের বন্দর থানার এসআই আবু সাঈদ রানা গুরুতর আহত হন। পরদিন রাতে ওয়াকিটকিতে সিএমপির সব সদস্যের উদ্দেশে মৌখিক নির্দেশনায় কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে যে অস্ত্রের প্রাধিকার ছিল, ওই প্রাধিকার অনুযায়ী থানার মোবাইল পার্টি, প্যাট্রোল পার্টি, ডিবির টিমসমূহ ও সকল ফোর্স অস্ত্র ক্যারি করবে। আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়া এবং লাইভ অ্যামুনিশন ছাড়া কোনও প্যাট্রোল পার্টি, মোবাইল পার্টি, ডিবির পার্টি, চেকপোস্ট পার্টি বের হবে না। প্রাধিকার অনুযায়ী অস্ত্র, গোলাবারুদ ও স্যুট পরে তারপর ডিউটিতে যাবে। তিনি আরও বলেন, শুধু রাবার বুলেট দিয়ে কাজ হচ্ছে না। বন্দরে (বন্দর থানা) একজন এসআই গুরুতর আহত হয়েছেন। আরেক দিন আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটবে। বন্দর থানার অফিসার যে অবস্থায় পড়েছেন, ওই পরিস্থিতিতে পড়লে যেন লাশ ছাড়া মোবাইল পার্টি, প্যাট্রোল পার্টি ফেরত না আসে। পুলিশের কোনও টহল পার্টির সামনে অস্ত্র বের করলে, আই রিপিট, সেটা ধারালো অস্ত্র হতে পারে কিংবা আগ্নেয়াস্ত্র হতে পারে- অস্ত্র বের করা মাত্র গুলি হবে, এতে কোনও সন্দেহ নেই, সবাইকে বলছি। আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার, দণ্ডবিধি ৯৬ থেকে ১০৬ পর্যন্ত, আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার সব পুলিশ অফিসারের আছে। অস্ত্র কিংবা কোপ দেওয়ার আগে অস্ত্র বের করা মাত্র গুলি হবে। সরকারি গুলির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। নিজেদের অভ্যন্তরীণ এ বার্তা ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও। এ ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর চট্টগ্রামের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে অস্বস্তি দেখা দেয়। নিজেদের গোপনীয় এমন বার্তা বাইরে চলে যাওয়ায় নড়েচড়ে বসেন তারা। পরে তদন্তে নেমে ওই পুলিশ সদস্যকে শনাক্তের পর গ্রেপ্তার করা হয়।