
* মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু হলেও এখনো চূড়ান্ত হয়নি ছাত্রদলের নির্বাচনী প্যানেল
ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এবং হল সংসদ নির্বাচন। গত মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) থেকে শুরু হয়েছে প্রার্থী মনোনয়ন ফরম বিতরণ। এটি চলবে আগামী এক সপ্তাহ পর্যন্ত। তবে মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু হলেও এখনো চূড়ান্ত হয়নি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নির্বাচনী প্যানেল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন নিয়ে ছাত্রদল এখনো ধোঁয়াশায়। সংগঠনটির কেন্দ্রীয়, বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন হল শাখার নেতাকর্মীরা এখনো জানেনই না, তারা কে কোন পদে নির্বাচন করতে পারবেন, প্রার্থীইবা হচ্ছেন কারা কিংবা কত সেশন থেকে দেওয়া হবে প্রার্থী।
ফলে এই অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে নির্বাচনী প্রচারণা থেকে শুরু করে এ সংক্রান্ত কোনো কাজই ঠিকঠাক করতে পারছেন না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এর জন্য বিএনপির দলীয় হাইকমান্ডকে দুষছেন ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংগঠনটির কয়েকজন নেতাকর্মী অভিযোগ করে বলেন, ডাকসু নিয়ে বিএনপির হাইকমান্ডের তেমন কোনো মাথাব্যথা যে নেই, এটি স্পষ্ট। যদি তেমন চিন্তাভাবনা থাকতো তাহলে এতদিনে প্যানেল চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ার কথা। প্যানেল চূড়ান্ত না করলেও যাদের প্রার্থী হিসেবে বাছাই করা হবে, তাদের অন্তত সিগন্যাল দিয়ে রাখতে পারতেন। সেটি করা হলে এখন সম্ভাব্য প্রার্থীরা সেভাবেই প্রস্তুতি নিতে পারতো। তারা বলছেন, কিন্তু সেটি করা হয়নি। তার মানে বোঝাই যাচ্ছে, ডাকসুতে জয়-পরাজয়ে বিএনপির দলীয় হাইকমান্ডের তেমন কিছু যায় আসে না। এটা খুবই হতাশাজনক।
কোন সেশন থেকে ডাকসুতে প্রার্থী হবেন, সেটি নিয়েও সংগঠনের ভেতরে রয়েছে বেশ আলোচনা। সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও জ্যেষ্ঠ নেতারা দাবি করছেন, ডাকসু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এটিকে সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করতে হলে অভিজ্ঞ ও সিনিয়র নেতৃবৃন্দের প্রয়োজন। অন্যদিকে জুনিয়র নেতৃবৃন্দ এবং রেগুলার শিক্ষার্থীরা দাবি করছেন, শিক্ষার্থীদের চাহিদা অনুযায়ী রেগুলার শিক্ষার্থীদেরই প্রার্থী হওয়া প্রয়োজন।
জানতে চাইলে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন, কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এবং বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুলকেও ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নাছির উদ্দীন শাওন বলেন, এখনো আমাদের প্যানেল চূড়ান্ত হয়নি। এ নিয়ে আলোচনা চলছে। এবার ডাকসুতে মোট ২৮টি পদে নির্বাচন হবে। আগের মতোই সহ-সভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস), সহ-সাধারণ সম্পাদকের (এজিএস) মতো গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো থাকছে।
তবে এবার সংযোজন করা হয়েছে চারটি নতুন পদ গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক, ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক এবং মানবাধিকার ও আইনবিষয়ক সম্পাদক। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নতুন এ পদগুলো যুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
গত ২৯ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে ডাকসু নির্বাচনের ঘোষিত তফসিলে বলা হয়, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন। নির্বাচন ঘিরে বিভিন্ন পদে সম্ভাব্য প্রার্থী নিয়ে এরই মধ্যে ছাত্রসংগঠনগুলোর ভেতর চলছে জোর আলোচনা।