
স্বতন্ত্র কমিশন গঠন ও সংস্কারের দাবিতে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন দেশের বিশেষায়িত চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে তারা সেখানে অবস্থান নেন। ‘ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ সংস্কার আন্দোলন’-এর ব্যানারে ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, বরিশাল ও সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরা এ আন্দোলন করছেন। এদিন বিকেল পৌনে ৫টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি চলছিল। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশের চারটি বিশেষায়িত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, বরিশাল ও সিলেট। দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক জটিলতায় ভুগছে কলেজগুলো। এ সংকট কাটিয়ে কলেজগুলোতে শিক্ষার পরিবেশ ফেরাতে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (বিআইটি) আদলে একটি স্বতন্ত্র কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, স্বতন্ত্র কমিশনের দাবিতে গত ২০ মে থেকে চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনসহ একাডেমিক শাটডাউন কর্মসূচি চালিয়ে আসছেন। দুই মাসেরও বেশি সময় শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পর ২৭ জুলাই তারা ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান শুরু করেন। পরদিন ২৮ জুলাই পুলিশ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে লাঠিচার্জ করে প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থীকে আহত করে। এরপর ৩১ জুলাই ৯ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছিলেন তারা। কিন্তু ১০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও কোনো লিখিত সমাধান দেওয়া হয়নি। এরপর তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। অনশনের ৫২ ঘণ্টা পার হলেও কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বাধ্য হয়ে তারা কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী জিয়া বলেন, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ১০ আগস্ট দুপুর ১২টা থেকে আমরা আমরণ অনশন কর্মসূচি করছি। অনশনের ৫২ ঘণ্টা অতিক্রান্ত হলেও কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিনিধি শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নেয়নি। এটি শুধু প্রশাসনিক অবহেলা নয়, বরং মানবিকতার চরম অবমূল্যায়ন। এ শিক্ষার্থী বলেন, যতজন শিক্ষার্থী অনশনে বসেছিলেন, প্রত্যেকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একজনকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে। বাকিদের শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটছে। তবুও শিক্ষার্থীরা শান্তিপূণভাবে কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। শুধু একটি ন্যায্য দাবি, বিআইটির আদলে স্বতন্ত্র কমিশন গঠন করতে হবে। এ দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্লাসে ফিরে যাবো না। বিষয়টি নিয়ে জানতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম এবং কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) শোয়াইব আহমাদ খানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।