
* নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তে সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
* তমব্রু সীমান্তে বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে
* সীমান্তে বসবাসকারীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক
স্টাফ রিপোর্টার ও নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমারের ওপারে থেমে থেমে প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে এপারে। এ ঘটনায় ঘুমধুমের তমব্রু সীমান্তে বসবাসকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সতর্ক পাহারার পাশাপাশি তমব্রু সীমান্তে বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে মিয়ানমার সশস্ত্র বিদ্রোহী গ্রুপ আরাকান আর্মির এক সদস্য পালিয়ে সীমান্তে এসে বিজিবির হাতে আটক হয়েছেন।
দীর্ঘদিন পর গত রোববার (১০ আগস্ট) রাত ১০টার পর থেকে ঘুমধুম ইউনিয়নের বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের শূন্য রেখা লাগোয়া গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের কানে প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ আসছে বলে স্থানীয়রা জানান। মিয়ানমারের ওপারের তুমব্রুর নারিকেল বাগিচা এলাকায় বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির দুটি ক্যাম্প রয়েছে। স্থানীয়দের ধারণা সেখানে হঠাৎ করে বড় কোনো সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবসার বলেন, দীর্ঘ অনেক দিন পর গুলির আওয়াজ পাওয়া গেছে। অনেকক্ষণ যাবত অনবরত গুলির শব্দ পেয়েছি, সেখানে কী হচ্ছে তা আমরা জানি না, কিন্তু কিছু একটা গন্ডগোল হচ্ছে তা বুঝা যাচ্ছে। ওপারের ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া না পেলেও এ ঘটনায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সতর্ক রয়েছে এবং সীমান্তে টহল জোরদার করেছে।
ধারণা করা হচ্ছে, সীমান্ত থেকে ২০০-৩০০ মিটারের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। মিয়ানমার সরকারবিরোধী আরাকান আর্মি ও আরসা বাহিনীর মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। কয়েক মাস আগে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীকে হটিয়ে সীমান্ত এলাকাটি দখলে নেয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। ফলে সংঘর্ষ রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠী আরসা বা আরএসওর সঙ্গেও হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি।
এ বিষয়ে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য নুর মোহাম্মদ ভুট্টো বলেন, দীর্ঘদিন পর সীমান্তে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাওয়ায় স্থানীয়রা কিছুটা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তবে এ ঘটনায় কোনো ধরনের হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মাজাহারুল ইসলাম চৌধুরী জানান, ঘটনার পর বিজিবির পক্ষ থেকে টহল ও সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
বিজিবির কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের (৩৪ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল এস এম খায়রুল আলম জানান, সীমান্তের ৩৪ থেকে ৩৫ পিলার সংলগ্ন এলাকায় শূন্য রেখা থেকে কমপক্ষে ৩০০ থেক ৩৩০ মিটার অদূরে ওপারে এই গোলাগুলি হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আরকান আর্মির সাথে বিচ্ছিন্নতাবাদী অন্য কোনো সংগঠন আরসা-আরএসওর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় এ গোলাগুলি হতে পারে। তবে বাংলাদেশের এপারে কোনো গুলি আসেনি, এটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরের ঘটনা। বিজিবি কঠোর সতর্ক অবস্থানে থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।