
* আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যারা ভোটার হবেন, তারা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন
* পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেবেন প্রবাসী ভোটাররা
* সেপ্টেম্বরকে ঘিরে নিবন্ধন, কেনাকাটা শেষ করতে চায় ইসি
* ভোটারদের আস্থা অর্জন বড় চ্যালেঞ্জ
ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি এ তথ্য জানান। আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যারা ভোটার হবেন, তারা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন।’
ইসি সানাউল্লাহ বলেন, ‘পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেবেন প্রবাসী ভোটাররা। প্রবাসী ভোটারদের ভোট দিতে হলে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।’ এ ছাড়া সেপ্টেম্বর মাস থেকে প্রবাসী ভোটারদের বিভিন্ন বিষয়ে অবহিত করা হবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২ (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ এবং রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা চূড়ান্ত করতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কমিশন সভা বসে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দীনের সভাপতিত্বে নির্বাচন ভবনে তার সভাকক্ষে সভা শুরু হয়। সভায় চার নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ, তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ও ইসি সচিব আখতার আহমেদসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আরপিওর সংশোধন প্রস্তাবের মধ্যে সংস্কার কমিশনের সুপারিশসহ একগুচ্ছ প্রস্তাবনা পর্যালোচনা করা হয়।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এর আগে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা এবং আরপিও সংশোধনের খসড়া অনুমোদন করে ইসি। আচরণ বিধিমালার বিষয়ে ইসির আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তি পর্যায় থেকে লিখিত মতামত দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গত ১০ জুলাই অষ্টম কমিশন সভায় আরপিও সংশোধনী চূড়ান্ত করার কথা থাকলেও সময়াভাবে সেদিন বিষয়টি আলোচনায় আসেনি।
এর আগে গত বুধবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে নির্বাচন নিয়ে ইসির প্রস্তুতি তুলে ধরে নাসির উদ্দিন বলেন, আমাদের প্রস্তুতি আমরা অনেক আগে থেকে নিচ্ছি। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করার জন্য বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও আমরা কিন্তু আমাদের প্রস্তুতি এগিয়ে নিচ্ছি ইনশআল্লাহ। আমাদের কোন প্রস্তুতিতে ঘাটতি হবে না।”
দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের জন্য এক মাস সময়: ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দলগুলোর আলোচনা শেষ হলে নির্বাচন কমিশনও অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপে বসবে। এজন্য প্রায় একটা মাস সময় পরিকল্পনা করে রেখেছেন বলে জানিয়েছেন সিইসি। রাজনীতিবিদদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নাসির উদ্দিন বলেন, এখন ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে যারা সারাদিন ধরে দলের আলোচনা করছেন তাদেরকে পাওয়া মুশকিল। যেহেতু অনেকগুলো রিফর্মস কমিশন হয়েছে বিশেষ করে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন হয়েছে তারা অনেক স্টেক হোল্ডারের সাথে আলাপ করেছে। এক ধরনের ইসির কাজ তারা সেরে রেখেছে। তারপরেও আমাদের তরফ থেকে আমরা একটা অপেক্ষায় ছিলাম, দলগুলো একটু ফ্রি হোক। ফ্রি হলে তখন আলোচনাটা স্টেক হোল্ডারদের সাথে করবো। আলোচনা করার জন্য এক মাসের একটা প্ল্যান করেছি।
আয়নার মতো স্বচ্ছ ভোটের আশা: সচেতনতা বাড়াতে গণমাধ্যমের ভূমিকার কথা তুলে ধরেছেন সিইসি নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, একটা ইলেকশন ইলেকশনের স্বচ্ছতার জন্য যা যা দরকার, তারমধ্যে রুল অব মিডিয়া ইজ নাম্বার ওয়ান। আমরা কিন্তু ইলেকশনটাকে স্বচ্ছ করতে চাই; আয়নার মতো পরিষ্কার করতে চাই। মানুষ, বিশ্ববাসী দেখুক যে আমাদের আন্তরিকতার আমাদের চেষ্টার কোনো ঘাটতি আছে কি না। এটা দেখুক আমরা সেটা চাই। লুকিয়ে কোনো কাজ কাজ করতে চাই না। নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাকে ‘পরিষ্কার’ দাবি করে ভোট আয়োজনে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন সিইসি। “আপনাদের সহযোগিতা নিয়ে আমরা দেশবাসীর কাছে দেখাইতে চাই যে আমরা কি কি কাজ করছি এবং সুন্দর ইলেকশনের জন্য আমরা কি কি প্রস্তুতি নিচ্ছি। কিভাবে কন্ডাক্ট করছি আপনারা দেখতে পারবেন। আপনাদের মাধ্যমেই এই জাতি এটা দেশবাসীটা জানতে পারবে।”
সেপ্টেম্বরকে ঘিরে নিবন্ধন, কেনাকাটা শেষ করতে চায়:
নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে নাসির উদ্দিন বলেন, প্রস্তুতি নিয়ে বললে ভোটার লিস্টটা হয়ে যাচ্ছে। প্রকিউরমেন্ট টার্গেট ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ করে ফেলতে পারব। সীমানা নির্ধারণ স্বচ্ছভাবে হয়েছে। শুনানি করে শেষ করা হবে। একটা বড় কাজ হয়ে গেছে পার্টি রেজিস্ট্রেশন। ইতোমধ্যে যাচাই বছাই চলছে। যারা শর্ত পূরণ করতে পারবে তাদের বিষয়ে তদন্ত হবে, এরপর কারো আপত্তি আছে কি না, ১৫ দিনের বিজ্ঞপ্তি হবে। এসব বড় কাজ বাই সেপ্টেম্বর; ইনশাআল্লাহ উই ওয়ান্ট টু কমপ্লিট অল দিস বিগ টাস্ক। পাশাপাাশি ভোটের কাজে সম্পৃক্ত ৮-৯ লাখ লোকবলের প্রশিক্ষণের কাজও শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার পোস্টাল ব্যালটে ভোটের প্রস্তুতির বিষয়ও রয়েছে। আমরা এবার প্রায় ১০ লাখ লোকবলকে পোস্টাল ব্যালটের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করবো। সাংবাদিকদের বিষয়টি জানা ছিল না; এটাও নোট রাখলাম।
লালকার্ড আর কত: লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরিতে নির্বাচন কমিশনের প্রচেষ্টার পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে সহযোগিতা চান সিইসি। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে নাসির উদ্দিন বলেন, সুতরাং যেনতেন একটা নির্বাচন করে আপনারা জিতার চেষ্টা করবেন না। আল্লাহর দোহাই, আমাকে সাহায্য করুন। আমি একটা সুন্দর ক্রেডিবল একটা ট্রান্সপারেন্ট ইলেকশন দিতে চাই; আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া পারব না। দলগুলোকে খেলার মাঠের পরিবেশ রক্ষায় সহযোগিতা চান তিনি। প্লেয়াররা যদি সবাই ফাউল করার নিয়তে মাঠে নামে যে আমরা ফাউলই করব; এখন রেফারির পক্ষে সে ম্যাচ পণ্ড হওয়া থেকে রক্ষা করা সম্ভব না। লালকার্ড কজনকে দেখাবেন আপনি? সুতরাং যারা খেলবেন তাদের তো দায়িত্ব আছে বিশাল। আমি এই মেসেজটা রাজনীতির দলগুলোকে দিতে চাই। দলগুলোকে অন্যতম অংশীদার বর্ণনা সিইসি বলেন, তারা একটা মেজর স্টেক হোল্ডার। আমাদের দায়িত্ব হবে খেলার মাঠটা তাদের জন্য সমান করে দেওয়া। তারা সুন্দর একই সুযোগ পায় সেই চেষ্টাটা আমরা করছি এবং করব। কর্মকর্তাদেরও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন তিনি। আমি যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করার কথা বলছি। এটার বাস্তবায়ন আপনাদের উপর নির্ভর করছে আমি যে আপনারা যদি এই কাজে যদি আমাকে সহযোগিতা না করেন আমি তো এটা কাজটা করতে পারবো না। ভোটারদের ব্যাপক অংশগ্রহণের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের প্রত্যাশার কথাও জানিয়েছেন সিইসি। তিনি বলেন, আমাদের মূল মেসেজটা হচ্ছে- আমরা এবার এই ইলেকশনটাকে পার্টিসিপেটরি করতে চাই। ভোটারদের ব্যাপক অংশগ্রহণ আমরা চাই।
অন্যতম চ্যালেঞ্জ যত: ভোটারদের আস্থা অর্জনকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন সিইসি। মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনা এখন নাম্বার ওয়ান চ্যালেঞ্জ হয়ে গেছে। আসলে ভোটারদেরকে দোষ দিয়ে লাভ নাই। ভোটাররা নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থা হারিয়েছে; নির্বাচন ব্যবস্থার উপর আস্থা হারিয়েছে। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যতটা সম্ভব প্রস্তুতি ইসির তরফ থেকে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। সিইসি বলেন, “চ্যালেঞ্জের মধ্যে একটা বললাম মানুষকে আস্থায় নিয়ে আসা। ভোটারদের আস্থা সৃষ্টির পাশাপাশি ভোটারদেরকে কেন্দ্রে নিয়ে আসা। প্রধান উপদেষ্টা যে বলেছেন উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদের দিনের মতো একটা ইলেকশন দেখতে চান আমরা সেইটা সামনে রেখেই আমরা কাজ করছি। ভোটে এআইয়ের অপব্যবহার রোধে ইসি কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিইসি। এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আমি বিশ্বাস করি যে আমাদের কর্মকাণ্ড যতই তারা আরো দেখবে ভবিষ্যতে দেখবেন আমাদের উপর আস্থা সৃষ্টি হবে। কারণ আমরা যখন প্রফেশনালি নিউট্রালি কাজ করছি, তখন এমনিতেই আস্থা ফিরে আসবে। আমরা কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য নিয়ে মাথা ঘামাতে চাই না। রাজনৈতিক নেতারা অনেক কথা বলতে পারেন, উনাদের ইচ্ছা বললে কোন অসুবিধা নাই।
* পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেবেন প্রবাসী ভোটাররা
* সেপ্টেম্বরকে ঘিরে নিবন্ধন, কেনাকাটা শেষ করতে চায় ইসি
* ভোটারদের আস্থা অর্জন বড় চ্যালেঞ্জ
ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি এ তথ্য জানান। আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যারা ভোটার হবেন, তারা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন।’
ইসি সানাউল্লাহ বলেন, ‘পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেবেন প্রবাসী ভোটাররা। প্রবাসী ভোটারদের ভোট দিতে হলে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।’ এ ছাড়া সেপ্টেম্বর মাস থেকে প্রবাসী ভোটারদের বিভিন্ন বিষয়ে অবহিত করা হবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২ (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ এবং রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা চূড়ান্ত করতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কমিশন সভা বসে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দীনের সভাপতিত্বে নির্বাচন ভবনে তার সভাকক্ষে সভা শুরু হয়। সভায় চার নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ, তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ও ইসি সচিব আখতার আহমেদসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আরপিওর সংশোধন প্রস্তাবের মধ্যে সংস্কার কমিশনের সুপারিশসহ একগুচ্ছ প্রস্তাবনা পর্যালোচনা করা হয়।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এর আগে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা এবং আরপিও সংশোধনের খসড়া অনুমোদন করে ইসি। আচরণ বিধিমালার বিষয়ে ইসির আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তি পর্যায় থেকে লিখিত মতামত দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গত ১০ জুলাই অষ্টম কমিশন সভায় আরপিও সংশোধনী চূড়ান্ত করার কথা থাকলেও সময়াভাবে সেদিন বিষয়টি আলোচনায় আসেনি।
এর আগে গত বুধবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে নির্বাচন নিয়ে ইসির প্রস্তুতি তুলে ধরে নাসির উদ্দিন বলেন, আমাদের প্রস্তুতি আমরা অনেক আগে থেকে নিচ্ছি। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করার জন্য বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও আমরা কিন্তু আমাদের প্রস্তুতি এগিয়ে নিচ্ছি ইনশআল্লাহ। আমাদের কোন প্রস্তুতিতে ঘাটতি হবে না।”
দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের জন্য এক মাস সময়: ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দলগুলোর আলোচনা শেষ হলে নির্বাচন কমিশনও অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপে বসবে। এজন্য প্রায় একটা মাস সময় পরিকল্পনা করে রেখেছেন বলে জানিয়েছেন সিইসি। রাজনীতিবিদদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নাসির উদ্দিন বলেন, এখন ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে যারা সারাদিন ধরে দলের আলোচনা করছেন তাদেরকে পাওয়া মুশকিল। যেহেতু অনেকগুলো রিফর্মস কমিশন হয়েছে বিশেষ করে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন হয়েছে তারা অনেক স্টেক হোল্ডারের সাথে আলাপ করেছে। এক ধরনের ইসির কাজ তারা সেরে রেখেছে। তারপরেও আমাদের তরফ থেকে আমরা একটা অপেক্ষায় ছিলাম, দলগুলো একটু ফ্রি হোক। ফ্রি হলে তখন আলোচনাটা স্টেক হোল্ডারদের সাথে করবো। আলোচনা করার জন্য এক মাসের একটা প্ল্যান করেছি।
আয়নার মতো স্বচ্ছ ভোটের আশা: সচেতনতা বাড়াতে গণমাধ্যমের ভূমিকার কথা তুলে ধরেছেন সিইসি নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, একটা ইলেকশন ইলেকশনের স্বচ্ছতার জন্য যা যা দরকার, তারমধ্যে রুল অব মিডিয়া ইজ নাম্বার ওয়ান। আমরা কিন্তু ইলেকশনটাকে স্বচ্ছ করতে চাই; আয়নার মতো পরিষ্কার করতে চাই। মানুষ, বিশ্ববাসী দেখুক যে আমাদের আন্তরিকতার আমাদের চেষ্টার কোনো ঘাটতি আছে কি না। এটা দেখুক আমরা সেটা চাই। লুকিয়ে কোনো কাজ কাজ করতে চাই না। নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাকে ‘পরিষ্কার’ দাবি করে ভোট আয়োজনে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন সিইসি। “আপনাদের সহযোগিতা নিয়ে আমরা দেশবাসীর কাছে দেখাইতে চাই যে আমরা কি কি কাজ করছি এবং সুন্দর ইলেকশনের জন্য আমরা কি কি প্রস্তুতি নিচ্ছি। কিভাবে কন্ডাক্ট করছি আপনারা দেখতে পারবেন। আপনাদের মাধ্যমেই এই জাতি এটা দেশবাসীটা জানতে পারবে।”
সেপ্টেম্বরকে ঘিরে নিবন্ধন, কেনাকাটা শেষ করতে চায়:
নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে নাসির উদ্দিন বলেন, প্রস্তুতি নিয়ে বললে ভোটার লিস্টটা হয়ে যাচ্ছে। প্রকিউরমেন্ট টার্গেট ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ করে ফেলতে পারব। সীমানা নির্ধারণ স্বচ্ছভাবে হয়েছে। শুনানি করে শেষ করা হবে। একটা বড় কাজ হয়ে গেছে পার্টি রেজিস্ট্রেশন। ইতোমধ্যে যাচাই বছাই চলছে। যারা শর্ত পূরণ করতে পারবে তাদের বিষয়ে তদন্ত হবে, এরপর কারো আপত্তি আছে কি না, ১৫ দিনের বিজ্ঞপ্তি হবে। এসব বড় কাজ বাই সেপ্টেম্বর; ইনশাআল্লাহ উই ওয়ান্ট টু কমপ্লিট অল দিস বিগ টাস্ক। পাশাপাাশি ভোটের কাজে সম্পৃক্ত ৮-৯ লাখ লোকবলের প্রশিক্ষণের কাজও শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার পোস্টাল ব্যালটে ভোটের প্রস্তুতির বিষয়ও রয়েছে। আমরা এবার প্রায় ১০ লাখ লোকবলকে পোস্টাল ব্যালটের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করবো। সাংবাদিকদের বিষয়টি জানা ছিল না; এটাও নোট রাখলাম।
লালকার্ড আর কত: লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরিতে নির্বাচন কমিশনের প্রচেষ্টার পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে সহযোগিতা চান সিইসি। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে নাসির উদ্দিন বলেন, সুতরাং যেনতেন একটা নির্বাচন করে আপনারা জিতার চেষ্টা করবেন না। আল্লাহর দোহাই, আমাকে সাহায্য করুন। আমি একটা সুন্দর ক্রেডিবল একটা ট্রান্সপারেন্ট ইলেকশন দিতে চাই; আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া পারব না। দলগুলোকে খেলার মাঠের পরিবেশ রক্ষায় সহযোগিতা চান তিনি। প্লেয়াররা যদি সবাই ফাউল করার নিয়তে মাঠে নামে যে আমরা ফাউলই করব; এখন রেফারির পক্ষে সে ম্যাচ পণ্ড হওয়া থেকে রক্ষা করা সম্ভব না। লালকার্ড কজনকে দেখাবেন আপনি? সুতরাং যারা খেলবেন তাদের তো দায়িত্ব আছে বিশাল। আমি এই মেসেজটা রাজনীতির দলগুলোকে দিতে চাই। দলগুলোকে অন্যতম অংশীদার বর্ণনা সিইসি বলেন, তারা একটা মেজর স্টেক হোল্ডার। আমাদের দায়িত্ব হবে খেলার মাঠটা তাদের জন্য সমান করে দেওয়া। তারা সুন্দর একই সুযোগ পায় সেই চেষ্টাটা আমরা করছি এবং করব। কর্মকর্তাদেরও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন তিনি। আমি যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করার কথা বলছি। এটার বাস্তবায়ন আপনাদের উপর নির্ভর করছে আমি যে আপনারা যদি এই কাজে যদি আমাকে সহযোগিতা না করেন আমি তো এটা কাজটা করতে পারবো না। ভোটারদের ব্যাপক অংশগ্রহণের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের প্রত্যাশার কথাও জানিয়েছেন সিইসি। তিনি বলেন, আমাদের মূল মেসেজটা হচ্ছে- আমরা এবার এই ইলেকশনটাকে পার্টিসিপেটরি করতে চাই। ভোটারদের ব্যাপক অংশগ্রহণ আমরা চাই।
অন্যতম চ্যালেঞ্জ যত: ভোটারদের আস্থা অর্জনকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন সিইসি। মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনা এখন নাম্বার ওয়ান চ্যালেঞ্জ হয়ে গেছে। আসলে ভোটারদেরকে দোষ দিয়ে লাভ নাই। ভোটাররা নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থা হারিয়েছে; নির্বাচন ব্যবস্থার উপর আস্থা হারিয়েছে। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যতটা সম্ভব প্রস্তুতি ইসির তরফ থেকে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। সিইসি বলেন, “চ্যালেঞ্জের মধ্যে একটা বললাম মানুষকে আস্থায় নিয়ে আসা। ভোটারদের আস্থা সৃষ্টির পাশাপাশি ভোটারদেরকে কেন্দ্রে নিয়ে আসা। প্রধান উপদেষ্টা যে বলেছেন উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদের দিনের মতো একটা ইলেকশন দেখতে চান আমরা সেইটা সামনে রেখেই আমরা কাজ করছি। ভোটে এআইয়ের অপব্যবহার রোধে ইসি কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিইসি। এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আমি বিশ্বাস করি যে আমাদের কর্মকাণ্ড যতই তারা আরো দেখবে ভবিষ্যতে দেখবেন আমাদের উপর আস্থা সৃষ্টি হবে। কারণ আমরা যখন প্রফেশনালি নিউট্রালি কাজ করছি, তখন এমনিতেই আস্থা ফিরে আসবে। আমরা কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য নিয়ে মাথা ঘামাতে চাই না। রাজনৈতিক নেতারা অনেক কথা বলতে পারেন, উনাদের ইচ্ছা বললে কোন অসুবিধা নাই।