সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বাণিজ্য-বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করবে : ঢাকা চেম্বার

আপলোড সময় : ০১-০৮-২০২৫ ০২:৪৮:৩৭ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০১-০৮-২০২৫ ০২:৪৮:৩৭ অপরাহ্ন
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
বাংলাদেশ ব্যাংকের ধারাবাহিক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও শিল্পায়ন কার্যক্রমে স্থবিরতা তৈরি করতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। গতকাল বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এমন শঙ্কার কথা জানায় সংস্থাটি।
সংস্থাটি বলছে, কড়াকড়ি মুদ্রানীতির প্রভাবে ঋণপ্রবাহ কমে যাওয়ায় দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে। ডিসিসিআই জানায়, ২০২৫ সালের জুনের শেষে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে ৬.৪ শতাংশে নেমে এসেছে, যা গত ২২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এ ধারা অর্থনীতির জন্য উদ্বেগজনক। চেম্বার মনে করে, ব্যবসায়িক পরিবেশে অনিশ্চয়তা, আইন-শৃঙ্খলার চ্যালেঞ্জ, জ্বালানি সরবরাহে ঘাটতি এবং কঠোর মুদ্রানীতির কারণে ঋণ প্রবৃদ্ধির নিম্নমুখী ধারা আরও তীব্র হচ্ছে। তারা আরও জানায়, ঋণপ্রবাহ সংকুচিত হওয়ার ফলে খেলাপি ঋণ উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকায়, যা ব্যাংকিং খাতে মোট বকেয়া ঋণের প্রায় ২৭.০৯ শতাংশ। এ পরিস্থিতি আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ব্যবসায়িক আস্থা হ্রাস পাওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ ব্যাংক নীতিসুদ হার ১০ শতাংশে অপরিবর্তিত রেখেছে; যা ক্ষুদ্র, কুটির, ছোট ও মাঝারি শিল্পসহ উৎপাদনমুখী খাতগুলোর জন্য বড় চাপ তৈরি করছে বলে মনে করে ডিসিসিআই। সংস্থাটির ভাষ্য, দীর্ঘমেয়াদি উচ্চ সুদের হার উৎপাদন ও বিনিয়োগ খাতে ঋণের ভার বাড়াচ্ছে, ফলে সামগ্রিক অর্থনীতির গতিশীলতা ব্যাহত হচ্ছে। চলতি মুদ্রানীতিতে (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২৫) বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা আরও কমিয়ে ৭.২ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে, যেখানে আগের ছয় মাসে তা ছিল ৯.৮ শতাংশ। বিপরীতে সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ২০.৪ শতাংশ করা হয়েছে। ঢাকা চেম্বারের মতে, এ ব্যবস্থায় সরকারি খাতের চাহিদা মেটাতে গিয়ে বেসরকারি খাতের জন্য আর্থিক খরচ ও প্রতিযোগিতা উভয়ই বেড়ে যাবে। এ অবস্থায় ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পখাতে ঋণপ্রবাহ বাড়াতে নীতিসুদ হার হ্রাস এবং ঋণ গ্রহণের শর্তাবলি সহজ করার আহ্বান জানিয়েছে ডিসিসিআই। তারা সৎ ঋণগ্রহীতাদের রক্ষায় সহায়তা এবং তাৎক্ষণিক খেলাপি শ্রেণিতে পড়া এড়াতে ঋণ শ্রেণিবিন্যাসে সময়সীমা ছয় মাস বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। সংস্থাটি মনে করে, টেকসই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করতে হলে আর্থিক খাতে কাঠামোগত সংস্কার, ঋণ বরাদ্দে স্বচ্ছতা এবং বাজারে তারল্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে কঠোর নজরদারি অব্যাহত রাখতে হবে। চূড়ান্তভাবে ডিসিসিআই বলছে, সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষা, বেসরকারি খাতে আস্থা পুনরুদ্ধার ও বিনিয়োগ বাড়াতে আরও নমনীয়, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও খাতভিত্তিক প্রতিক্রিয়াশীল মুদ্রানীতির বিকল্প নেই।
 

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : সৈয়দ এম. আলতাফ হোসাইন।

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক : সৈয়দ মোঃ আতিকুল হাসান।

নির্বাহী সম্পাদক আশীষ কুমার সেন।

ফোন : ৪৯৩৫৭৭৩০ (বার্তা), ৮৩১৫৬৪৯ (বাণিজ্যিক), ফ্যাক্স; ৮৮-০২-৮৩১৪১৭৪

অফিস :

প্রকাশক কর্তৃক রোমাক্স লিমিটেড, তেজগাঁও শিল্প এলাকা থেকে মুদ্রিত।

সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : খলিল ম্যানশন (৩য়, ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), ১৪৯/এ, ডিআইটি এক্সটেনশন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত।

ই-মেইল : [email protected], ওয়েবসাইট : www.dainikjanata.net