ঢাকা , সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫ , ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও রাজস্ব আহরণে ধস জুলাই আহতরা এখনো হাসপাতালে মানসিকভাবে বিপর্যয়ে ৬৭ শতাংশ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ৪২৯ ‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা’ শনাক্তে ডিসি-ইউএনও অফিসে টাঙানো হচ্ছে তালিকা তৃতীয় ধাপে এনসিপিসহ ৮২ দলকে চিঠি দিচ্ছে ইসি দেশের ইতিহাসে প্রথমবার ‘নন ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট’ -দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য উচ্চকক্ষ নিয়ে দুদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত-আলী রীয়াজ দলের প্রধান হলে প্রধানমন্ত্রী হওয়া যাবে না- এটা গণতন্ত্রবিরোধী-সালাহউদ্দিন শেখ হাসিনা মানবজাতির কলঙ্ক, মানুষ তাকে ক্ষমা করবে না-মির্জা ফখরুল ১১০৫ কোটি টাকা ভূমি উন্নয়ন কর আদায়-আলী ইমাম মজুমদার পরিস্থিতির কারণে গোপালগঞ্জে গুলি করেছে সেনাবাহিনী-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাংয়ের ৪ সদস্য গ্রেফতার পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে দেয়া বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন সারজিস দুর্গাপুরে দম্পতির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার সৎ মা-মেয়ে হত্যায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড চট্টগ্রাম বন্দরের সার্ভিস চার্জের ভাগ চায় চসিক বিএনপি হলো ছ্যাঁচড়া চাঁদাবাজ- ফয়জুল করীম ৪০ বছরের ব্যবসায় এমন সংকট দেখিনি : এ কে আজাদ স্ত্রী-সন্তান-শিক্ষার্থীদের দিয়ে খাতা দেখালে ২ বছর জেল বাসে অগ্নিসংযোগের চেষ্টাকালে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকর্মী গ্রেফতার

‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা’ শনাক্তে ডিসি-ইউএনও অফিসে টাঙানো হচ্ছে তালিকা

  • আপলোড সময় : ২১-০৭-২০২৫ ০২:২৪:৩১ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২১-০৭-২০২৫ ০২:২৪:৩১ অপরাহ্ন
‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা’ শনাক্তে ডিসি-ইউএনও অফিসে টাঙানো হচ্ছে তালিকা
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা (অমুক্তিযোদ্ধা) শনাক্তে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। দায়িত্বকালীন কাজটি পুরোপুরি শেষ করতে না পারলেও অন্তত শুরু করে যতটা সম্ভব এগিয়ে নিতে চায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে সব জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের (ওই জেলা-উপজেলার) তালিকা টাঙানো হচ্ছে। এ তালিকা দেখে স্থানীয়রা নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করে অমুক্তিযোদ্ধাদের শনাক্ত করে সরকারকে জানাতে পারবেন। বিগত সময়ে প্রণয়ন করা অমুক্তিযোদ্ধা শনাক্তকরণ অভিযোগ ফরম অনুযায়ী কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে তা দ্রুত মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে ডিসি ও ইউএনওদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে হয়রানির উদ্দেশ্যে কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিলে অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ শাস্তি বা ফৌজদারি মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সম্প্রতি এ বিষয়ে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) থেকে একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়। তবে বর্তমানে আড়াই লাখেরও বেশি মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে বড় একটি অংশ ভুয়া বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। স্বাধীনতার পর প্রতিটি সরকারের সময়ে তালিকার নামে অসংখ?্য অমুক্তিযোদ্ধাকে দেওয়া হয়েছে মুক্তিযোদ্ধার সনদ। দিন যত গড়িয়েছে বেড়েছে মুক্তিযোদ্ধার সংখ?্যা। সুযোগ-সুবিধার লোভে মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন অনেকে। এ সুযোগে সরকারও অনৈতিক প্রক্রিয়ায় অনেককে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীলরা জানান, অন্তর্বর্তী সরকার অমুক্তিযোদ্ধাদের সনদ বাতিল করার বিষয়টি একটি কাঠামোর মধ্যে আনতে চাচ্ছে। এ সরকারের আর সময় আছে সর্বোচ্চ আট মাসের মতো। এ সময়ের মধ্যে হয়তো ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বাতিল করে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে না, তবে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বাতিলের প্রক্রিয়াটি শুরু করা যাবে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বাতিলের একটি বড় বাধা মামলা-মোকদ্দমা। মুক্তিযোদ্ধাদের হাজার হাজার মামলা রয়েছে। কিন্তু মামলাগুলো নিষ্পত্তি করার ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের খুব বেশি কিছু করণীয় নেই। সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে সব ডিসি ও ইউএনওদের কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। ওই চিঠিতে বলা হয়, অমুক্তিযোদ্ধা সংক্রান্ত অভিযোগ ও মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্তির আবেদন যাচাই কার্যক্রম চলমান। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল এটা পরিচালনা করছে। এরই ধারাবাহিকতায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য বাতায়নে প্রকাশিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বিত তালিকা থেকে সংশ্লিষ্ট জেলা/উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের নোটিশ বোর্ডে দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন করার জন্য এবং অমুক্তিযোদ্ধা সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ (মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ‘অমুক্তিযোদ্ধা শনাক্তকরণ অভিযোগ ফরম’ অনুযায়ী) পাওয়া গেলে তা গ্রহণ করে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে দ্রুত এ মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর অনুরোধ জানানো হলো। অমুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম (বীর প্রতীক) বলেন, অনেকেই পরিসংখ্যানগত বিষয় না নিয়েও নানান রকমের সংবাদ ছাপাচ্ছে, এতজন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আছে এটা আছে সেটা আছে। আমরা সেটা বলতে চাই না। আমরা নিয়মনিষ্ঠ ও আইন বিধি মেনে যাচাই-বাছাই করেই বলবো। সেভাবেই আমরা কার্যপদ্ধতিগুলো নিরূপণ করছি। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকার বিষয়ে আমরা একটি ফরম দিয়েছি। কারও বিষয়ে যদি কারও কোনো আপত্তি থাকে তারা যাতে সেই ফরমটা পূরণ করে জমা দেয়। জমা দিলে আমরা সেগুলো জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ কাউন্সিলের মাধ্যমে যাচাই করবো। আমরা একটি সত্যনিষ্ঠ তালিকার কাছাকাছি যেতে চাই। এ বিষয়ে অনেক মামলা-মোকদ্দমাও আছে। তিনি বলেন, তিন বছরের জন্য নতুন করে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল গত নভেম্বরে গঠিত হয়েছে, সেই থেকে তারা কোর্ট থেকে রিট হয়ে যে সমস্ত মামলাগুলো এসেছে মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার জন্য, সেগুলি নিষ্পত্তি করছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশই মিথ্যা। অনেক বয়স কম এমন লোকও মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন। আমরা এমন অনেক অনেক নমুনা পাচ্ছি। তবে প্রচেষ্টাটা হচ্ছে, মুক্তিযোদ্ধাদের যে তালিকাটি আছে আমরা যতটুকু সম্ভব যারা মুক্তিযুদ্ধ করেনি কিন্তু তালিকায় যুক্ত হয়েছেন, তাদের বাদ দেবো। আমরা যদি কাজটি শেষ করতে নাও পারি আমরা শুরু করে দিয়ে যাবো পরবর্তীসময়ে যারা আসবেন তারা সেটি অনুসরণ করবেন। ফারুক ই আজম বলেন, বহু লোক মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় এসেছেন। এসব মানুষ সমাজে গিয়ে নিজেদের বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিচ্ছেন, এরা নানান ধরনের অনাচারের সঙ্গেও যুক্ত। মুক্তিযুদ্ধ করেছেন ৫৪ বছর আগে। ৫৪ বছর ধরে যে একটা জীবনযাপন করে এসেছেন মুক্তিযোদ্ধারা, সেটাও তো একটা অবিস্মরণীয় বিষয়। সেটাই ডিটারমাইন্ড করে মুক্তিযুদ্ধের গৌরব নিয়ে কতজন মুক্তিযোদ্ধা সঠিকভাবে দাঁড়াতে পেরেছেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী বলেন, আমরা ডিসি ও ইউএনওদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা টাঙাতে বলেছি। এ তালিকা দেখে কারা মুক্তিযোদ্ধা নন, সেটা শনাক্ত করা সম্ভব হবে। কারণ স্থানীয়রাই বলতে পারবেন-কে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন আর কে করেননি। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে প্রকৃত অভিযোগ ছাড়া উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ভিত্তিহীন, হয়রানিমূলক ও মিথ্যা অভিযোগকারীর বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল। এতে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ যাচাইকালে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, কিছু কিছু অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ভিত্তিহীন, হয়রানিমূলক ও অভ্যাসগতভাবে দাখিল করা হচ্ছে। অনেক অভিযোগ ইতোপূর্বে যাচাই-বাছাইয়ে মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ার পরেও একই ব্যক্তি পুনঃপুন অভিযোগ করছেন। এ ধরনের অভিযোগ তদন্তে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সদস্য এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রচুর সময় ও সরকারি অর্থের অপচয় হয়। এছাড়া এমন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ভিত্তিহীন, হয়রানিমূলক অভিযোগের কারণে প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধারা এই বৃদ্ধ বয়সে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। বিষয়টি জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের ৯৮তম সভায় উপস্থাপন করা হলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ভিত্তিহীন, হয়রানিমূলক ও মিথ্যা অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে বিদ্যমান সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী ফৌজদারি মামলা দায়ের বা প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে প্রকৃত অভিযোগ ছাড়া উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ভিত্তিহীন, হয়রানিমূলক এবং অভ্যাসগতভাবে অভিযোগ দাখিল থেকে সবাইকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে বিদ্যমান সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী ফৌজদারি মামলা দায়ের বা প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য

সর্বশেষ সংবাদ