ঢাকা , সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫ , ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
ভিয়েতনামে পর্যটকবাহী নৌকা ডুবে ৩৭ জনের মৃত্যু দুই ভাই বিয়ে করলেন এক নারীকে, খুশি নববধূও বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ নির্মাণ শুরু চীনের, উদ্বেগে ভারত যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়া নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্যে ভারতে তোলপাড় গাজায় একদিনে আরও শতাধিক ফিলিস্তিনিকে হত্যা করলো ইসরায়েল সৌদিতে ২৩ হাজারের বেশি প্রবাসী গ্রেফতার রোনালদোকে টপকে গেলেন মেসি বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলবে তুরস্ক সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে জয়রথ চলছে বাংলাদেশের ‘বাংলাদেশর আরও বেশি টাকা পাওয়া উচিত’ অলিম্পিক ক্রিকেটে এশিয়া থেকে জায়গা পাবে মাত্র একটি দল ক্রিকেটে রাজনীতি, বাতিল হলো ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ক্রিকেটে বাজেট বাড়ালো পিসিবি স্টেডিয়ামে দর্শকদের দুর্ভোগ কমাতে নতুন উদ্যোগ বিসিবির জামায়াতের সমাবেশ ঘিরে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে তীব্র যানজট, ভোগান্তি ১৯৭১ ও গণতন্ত্রের বিষয়ে ছাড় নয়-মির্জা ফখরুল ইসলাম আ’লীগ-বিএনপি হিন্দুদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে— গোবিন্দচন্দ্র গোপালগঞ্জে ৪ মামলায় আসামি ৩০০৮ গ্রেফতার ৩০৬ সমাবেশে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানায়নি জামায়াত রাজধানীতে ফুটপাত দখল করে দোকানপাট ঝুঁকিতে পথচারীরা

শিক্ষক সঙ্কটে প্রাথমিক শিক্ষার বেহাল দশা

  • আপলোড সময় : ১৯-০৭-২০২৫ ০১:৫০:১৪ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৯-০৭-২০২৫ ০১:৫০:১৪ অপরাহ্ন
শিক্ষক সঙ্কটে প্রাথমিক শিক্ষার বেহাল দশা
শিক্ষক সঙ্কটে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা। দেশের ৩২ হাজার সরকারি প্রাইমারি স্কুলে বর্তমানে প্রধান শিক্ষক নেই। ওসব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চলছে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে। আর বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় ৮ হাজার ৪৩টি সহকারী শিক্ষকদের পদ শূন্য রয়েছে। তাছাড়া সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের জন্য ৫ হাজার ১৬৬ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার কথা থাকলেও এখনো দেয়া হয়নি। সব মিলিয়ে প্রায় অর্ধলাখ সহকারী শিক্ষক নিয়োগ আটকে আছে। তাতে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। মূলত মামলা জটের কারণে সরকারি প্রাইমারি স্কুলের পদোন্নতি ও অর্ধলাখ শিক্ষক নিয়োগ আটকে আছে। সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতির মাধ্যমে এ পদগুলো পূরণ করা হওয়ার কথা থাকলেও টাইম স্কেল সংক্রান্ত একটি মামলায় প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদে সহকারী প্রধান শিক্ষকদের পদোন্নতি দেয়া যাচ্ছে না। আবার শূন্য ওসব পদে সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতি না হওয়ায় সমসংখ্যক পদে সহকারী শিক্ষকও নিয়োগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, জাতীয়করণ করা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪৮ হাজার ৭২০ জন শিক্ষকের মধ্যে প্রায় ২৫ হাজার বিগত ২০১৩ সালে অবসরে গেছেন। ইতিমধ্যে অনেক শিক্ষকই অবসরভাতা তুলে নিয়েছেন। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় ২০২০ সালের আগস্টে এক আদেশে দুটি টাইম স্কেল বাতিল করে অতিরিক্ত অর্থ ফেরত নেওয়ার নির্দেশনা দেয়।  এর ফলে অবসরে যাওয়া শিক্ষকদের পক্ষে সরকারের ওই আদেশ প্রত্যাখ্যান করে হাইকোর্টে দায়ের করা হয় রিট আবেদন করা হয়। আর রিটকারীদের পক্ষে রায় দেয় হাইকোর্ট। কিন্তু হাইকোর্টের রিটের বিরুদ্ধে সরকার আপিল করে। আপিল শেষ না হওয়ায় একদিকে যেমন অবসরে যাওয়া শিক্ষকরা তাদের পাওনা উত্তোলন করতে পারছে না, অন্যদিকে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতিও আটকে গেছে।
সূত্র জানায়, মামলার বিষয়ে আদালত কোনো ফয়সালা না আসায় অবসরে যাওয়া অনেক শিক্ষক মারা গেলেও তার পরিবার তুলতে পারছে না অবসরের অর্থ। পাশাপাশি পদোন্নতি না দিতে পারায় সহকারী শিক্ষকের ৩২ হাজার পদ শূন্য হয়নি। ফলে ওসব পদে নিয়োগও দেয়া যায়নি। ফলে সব মিলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা। মামলাজট নিরসন করে দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করার জন্য বর্তমান সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে শিক্ষক নেতারা। তবে আদালতের আপিলের রায়ের ওপর সব সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে।
সূত্র আরো জানায়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় অর্ধলাখ সহকারী শিক্ষক নিয়োগে সরকার নতুন বিধিমালা তৈরি করেছে। যদিও এ বিধিমালায় নারী ও পোষ্য কোটা বাতিল করা হয়েছে। তবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বিষয়টি নিয়ে জনপ্রশাসন এবং আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ বিভাগের মতামতের অপেক্ষায় রয়েছে। নতুন বিধিমালা সংক্রান্ত মতামত পাওয়ার পর কোটা বাতিল সংক্রান্ত পরিপত্র জারি হবে। আর পরিপত্র জারি না হওয়া পর্যন্ত প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে না। বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৯ অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এ নিয়োগ বিধিমালায় শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ নারী কোটা, ২০ শতাংশ পোষ্য কোটা এবং ২০ শতাংশ পুরুষ কোটা রয়েছে। কিন্তু প্রস্তাবিত নতুন বিধিমালায় এসব কোটা থাকবে না। তবে ২০ শতাংশ পদে বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। যদিও প্রস্তাবিত নিয়োগ বিধিমালাটিও চূড়ান্ত হয়নি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ চাকরির প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরির সব গ্রেডে ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে। বাকি ৭ শতাংশ নিয়োগ হবে কোটার ভিত্তিতে। কোটার মধ্যে রয়েছে ৭ শতাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানের জন্য ৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিকদের জন্য ১ শতাংশ কোটা।
এদিকে এ ব্যাপারে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান সমপ্রতি গণমাধ্যমকে জানান, প্রধান শিক্ষক পদে ৩২ হাজার সহকারী শিক্ষকের পদোন্নতি দেয়া যাচ্ছে না। মামলার কারণে পদোন্নতি আটকে আছে। প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি দিতে পারলে ৩২ হাজার সহকারী শিক্ষক পদ শূন্য হতো এবং তখন ওই পদে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেয়া যেতো।
অন্যদিকে এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার সমপ্রতি বলেছেন, দেশের প্রায় ৩২ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে, যা প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থাকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে। প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে আগের কোটা ব্যবস্থা থাকছে না। উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী কোটাব্যবস্থা চালু থাকবে। তাছাড়া নিয়োগবিধিতে সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে থেকে প্রধান শিক্ষক পদে যোগ্য প্রার্থী পাওয়া সাপেক্ষে শতভাগ পদোন্নতির ব্যবস্থা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স