শ্যামল দত্ত, চৌগাছা (যশোর)
দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টিপাতে উপজেলা বিভিন্ন স্থানে ৩০০ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত ও জনজীবন চরম দুর্ভোগের শিকার সাধারণ মানুষ ও কৃষক। টানা বৃষ্টিতে সবজি খেত ও ধানের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত। উপজেলার নিচু অঞ্চলে ঘর বাড়িতে হাঁটু পানি। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে শিশু ও বৃদ্ধরা। পাশাপাশি কোমলমতি শিক্ষার্থীরা, শ্রমিক, কৃষক এবং বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ বিপাকে পড়েছেন।
গতকাল বুধবার (১৭ জুলাই) ফসলি জমি ও সড়ক দেখা গেছে, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা ভিজে ভিজে স্কুল ও প্রাইভেট পড়াশোনা করতে আসছেন। এর ফলে অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এক অভিভাবক জানান, টানা ভারী বৃষ্টির মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো বন্ধ রাখা উচিত। আমার সন্তান স্কুল এবং প্রাইভেট-দু’বারই ভিজে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শ্রমজীবী ও অন্যান্য পেশার মানুষরাও সমস্যায় পড়েছেন। বিশেষ করে কৃষকরা খুবই উদ্বিগ্ন। তাদের অধিকাংশ সবজি খেত নষ্ট হয়ে গেছে, আর অবশিষ্ট সবজিরও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তারেক শেখ কৃষক বলেছেন, যদি এমন বৃষ্টি অব্যাহত থাকে, তাহলে সবজি উৎপাদন কমে যাবে এবং এর ফলে ফলন কমে যাওয়ার পাশাপাশি সবজির দামও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
কৃষকরা আরও জানান, বৃষ্টির কারণে গৃহপালিত পশু-মাছ-মুরগি ও অন্যান্য জীবজন্তুর খাবার জোগাড় করতেও তারা হিমশিম খাচ্ছেন। খাদ্যের সংকটে পড়েছেন অনেক গৃহপালিত পশু।
চৌগাছা সরকারি মডেল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দীন জানান, সরকার বা কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তারা বিদ্যালয় বন্ধ করতে পারেন না। প্রাইমারি স্কুলের এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমার কিছু করার নেই, বিদ্যালয় বন্ধ করার সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষের।’
শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আফসার উদ্দিন বলেন, ‘এই বৃষ্টিতে শিশুদের ভিজে ঠান্ডাজ্বরসহ বিভিন্ন সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই শিশুদের নিরাপদে রাখা প্রয়োজন।’
অন্যদিকে, শ্রমিক মিলন হোসেন বলেন, ‘দিনরাত কাজ না হলে আমাদের জীবিকা নির্বাহ কঠিন হয়ে পড়ে। সবজির দাম বাড়ার কারণে আমাদের জীবনযাপন আরও কঠিন হয়ে উঠছে। এভাবেই টানা বৃষ্টির কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে, এই উপজেলা সবজি বিভিন্ন জেলার তাদের চাহিদা মিটাই। সবজির খেত ক্ষতি হওয়ার কারণে সবজির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মুশাব্বির হোসাইন বলেন, টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ২০০ হেক্টর ফসলি জমি জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে ধানের বীজতলা ও সবজির ক্ষতি হয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
