
আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ফি হলো দ্বিগুণ
- আপলোড সময় : ১৫-০৭-২০২৫ ০৩:০৪:৫৬ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৫-০৭-২০২৫ ০৩:০৪:৫৬ অপরাহ্ন


* ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেয়া হয় প্রায় পাঁচ হাজারের বেশি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স
* যারা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের যোগ্য শুধু তাদের যাচাই-বাছাই শর্তে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দিবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেয়া হয় প্রায় পাঁচ হাজারের বেশি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স। এসব লাইসেন্সের অধিকাংশই ছিল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও দলটির সমর্থক ব্যবসায়ীদের নামে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সব ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ফি ও নবায়ন ফি দ্বিগুণ করেছে। এছাড়া পিস্তল/রিভলবার/রাইফেলের ক্ষেত্রে ন্যূনতম পাঁচ লাখ টাকা এবং শটগানের ক্ষেত্রে ন্যূনতম দুই লাখ টাকা আয়কর দেয়ার নিয়ম করা হয়েছে।
সম্প্রতি আগ্নেয়ান্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা-২০১৬ বাতিল করে আগ্নেয়ান্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা-২০২৫ প্রকাশ করা হয়েছে। নতুন নীতিমালায় বেশকিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ফি ও নবায়ন ফি বাড়ানো হয়েছে। আগ্নেয়ান্ত্রের জন্য আয়করও বাড়ানো হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগ্নেয়াস্ত্রের ক্ষেত্রে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কিছুটা কড়াকড়ি করেছে। যাকেতাকে আর আগ্নেয়াস্ত্র দেয়া হবে না। যারা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের যোগ্য শুধু তাদের যাচাই-বাছাই শর্তে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেয়া হবে।
এদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেয়া পাঁচ হাজারের বেশি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশে জমা পড়া ও জমা না পড়া অস্ত্রের লাইসেন্সের তথ্য যাচাইয়ে এগুলোর কাগজপত্রে অসঙ্গতি পাওয়ায় এ পদক্ষেপ নেয়া হয়। অস্ত্র জমা না দেয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রক্রিয়াও শুরু হচ্ছে।
সূত্র বলেছে, সব লাইসেন্স স্থগিত করে অস্ত্র জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হলেও এখনো সাত হাজারের বেশি লাইসেন্সের অস্ত্র জমা পড়েনি। বাড়ি বাড়ি গিয়েও পুলিশ এসব লাইসেন্সধারী বা লাইসেন্সের বিপরীতে থাকা অস্ত্র পায়নি। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর অস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়া ব্যক্তিদের অনেকে গা ঢাকা দিয়েছেন। অনেকে পাড়ি জমিয়েছেন বিদেশে।
পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) তথ্য অনুযায়ী, দেশে বৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ৪৯ হাজার ৬৭১টি লাইসেন্স রয়েছে। এগুলোর মধ্যে সাড়ে ৪৬ হাজার লাইসেন্স ব্যক্তির নামে। বাকিগুলো প্রতিষ্ঠানের নামে। ব্যক্তির নামে থাকা লাইসেন্সগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নামে আছে অন্তত আট হাজার ২০০টি লাইসেন্স। বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে লাইসেন্স আছে প্রায় দুই হাজার ৫০০টি। অন্য দলগুলোর রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের নামে আছে মাত্র ৭৯টি লাইসেন্স।
তথ্য বলছে, বিভাগভিত্তিক হিসাবে সবচেয়ে বেশি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স রয়েছে ঢাকা বিভাগে, ১৪ হাজার ৬৮৩টি। সবচেয়ে কম ময়মনসিংহে, দুই হাজার ১১৮টি। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নামে থাকা লাইসেন্সগুলোর অধিকাংশ দলটি গত ১৫ বছরে ক্ষমতায় থাকাকালে দেয়া।
দেশের প্রচলিত আইনের বিধান অনুযায়ী, লাইসেন্স ছাড়া কেউ আগ্নেয়াস্ত্র কিনতে বা বহন করতে পারেন না। এটি ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। ব্যক্তিগত কিংবা ব্যবসায়িক নিরাপত্তার জন্য প্রত্যেক নাগরিক লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র বহন করতে পারেন। ছোটবড় যে কোনো ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র কিনতে হলে তার জন্য সরকারের অনুমতি নিতে হয়, অর্থাৎ অস্ত্র কেনার জন্য আগে লাইসেন্স করতে হয়।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ