ঢাকা , শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫ , ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ, কমেছে জিপিএ-৫ বিবিসির প্রতিবেদনের তীব্র সমালোচনা হাসিনাপুত্র জয়ের তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলা আবশ্যক : প্রধান উপদেষ্টা তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত গণহত্যার দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হলেন সাবেক আইজিপি মামুন ফের আন্দোলনে যাবেন প্রাথমিকের শিক্ষকরা ঢাকায় তিন দিনব্যাপী থাইল্যান্ড উইক উদ্বোধন রাজধানীতে ট্রেনের ধাক্কায় নারী নিহত আলোচনা শেষ আগামী সপ্তাহে এরপর ডাকসু তফসিল সেপটিক ট্যাংকে মোবাইল ফোন তুলতে গিয়ে ৪ জনের মৃত্যু যাত্রাবাড়ীতে গ্যাস লিকেজ থেকে আগুন শিশুসহ দগ্ধ ৩ ফরিদপুরে হত্যা মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন ফেনীতে বাঁধ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত সীমান্ত দিয়ে তৃতীয় লিঙ্গের ১৯ জনকে পুশইন বিএসএফের চট্টগ্রামে ফ্ল্যাট থেকে নারীর ১১ টুকরো লাশ উদ্ধার জুনে সড়কে প্রাণ গেল ৭১১ জনের ডেঙ্গুতে আরও ২ জনের মৃত্যু নির্বাচন প্রস্তুতির কাজ দ্রুত শেষ করার আহ্বান মির্জা ফখরুলের শতভাগ যাত্রী বহনের পরেও লোকসানে রেলওয়ে শেখ হাসিনাসহ ৩ জনের আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু
এবার এসএসসির রেজাল্ট খারাপ

মিষ্টির দোকানে উপচেপড়া ভিড় নেই

  • আপলোড সময় : ১১-০৭-২০২৫ ০১:৪১:০৭ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১১-০৭-২০২৫ ০১:৪১:০৭ অপরাহ্ন
মিষ্টির দোকানে উপচেপড়া ভিড় নেই
সাধারণত এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের দিনে মিষ্টির দোকনগুলোতে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। প্রত্যেক অভিভাবক সন্তানের খুশি ধরে রাখতে পাড়া-মহল্লায় মিষ্টি বিতরন করতে দেখা যেত। ফলে মিষ্টি কিনতে সিরিয়াল ধরে অপেক্ষা করতে হত। বিশেষ করে এসএসসির রেজাল্টের দিনে ভিড় হত বেশি। বছরের যে কয়েকদিন ভালো বেচাবিক্রি হয় তার মধ্যে অন্যতম এসএসসির ফলাফলের দিন। কিন্তু এবারের এসএসসি ফলাফল খারাপ হওয়ায় মিষ্টির দোকানগুলোতে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। তবে এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার পর তেমন ভিড় নেই মিষ্টির দোকানে। বিক্রেতারা বলছেন, এখন আর আগের মতো রেজাল্টের আমেজ নেই। দুই তিন বছর ধরে পরীক্ষার ফলাফলের দিনে দোকানে আগের মতো আর ভিড় হয় না। বরং অনেক দোকান ছিল ক্রেতারশূন্য। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বেশ কিছু এলাকার মিষ্টির দোকান ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
রাজধানী ডেমরা-যাত্রাবাড়ি,কদমতলী-শ্যামপুর,ওয়ারী,পল্টন-লালবাগ, ধানমণ্ডি, মিরপুর-বাড্ডা,খিলগাঁওসহ বেশিরভাগ এলাকার মিষ্টির দোকান ঘুরে দেখা যায়, থরে থরে বাহারি আইটেমের মিষ্টি সাজানো থাকলেও খুব একটা ক্রেতা নেই। স্বাভাবিক দিনের মতোই দু-একজন করে আসছে-যাচ্ছে। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেও চোখে পড়েনি কোনো এসএসসি ফল পাওয়া কোনো শিক্ষার্থী বা অভিভাবককে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মিষ্টির দোকানের এক বিক্রেতা বলেন, রেজাল্টের দিনে একটা সময় শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা হাসিমুখে এসে কেজি কেজি মিষ্টি নিয়ে যেত। আমরাও আগে থেকেই সেভাবে প্রস্তুতি নিয়ে বেশি করে মিষ্টি বানাতাম। এখন আর তেমন নেই। রেজাল্টকে ঘিরে যে উৎসবের আমেজ তৈরি হতো সেটি মনে হয় হারিয়ে গেছে। পাশেই আরেক দোকানদার বলেন, আপনারাই তো দেখতেছেন কি অবস্থা। অন্যান্য দিনের মতোই মিষ্টি বিক্রি স্বাভাবিক রয়েছে। কয়েকবছর আগেও রেজাল্ট ভালো হলে মিষ্টিমুখ করানোর জন্য যে উৎসবের আমেজ তৈরি হতো সেটি নাই। দুই তিন বছর ধরেই এই অবস্থা। এই এলাকায় অনেক নামী-দামী ব্র্যান্ডের মিষ্টির দোকানের আউটলেট রয়েছে। প্রায় সবগুলোতেই একই অবস্থা দেখা যায়। তবে কয়েক বছরে মিষ্টির বা মিষ্টান্ন আইটেমের দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। সাড়ে তিনশ টাকার নিচে কোনো মিষ্টি নেই বললেই চলে। এছাড়াও রসগোল্লা, স্পঞ্জ, ছানার মিষ্টি চমচম কিনতে গুনতে হবে সাড়ে চারশ টাকার উপরে। রসমালাই বা একটু বাহারি আইটেমের মিষ্টি কিনতে গুনতে হবে পাঁচশ টাকার উপরে। যে ২-৩ বছর আগেও প্রায় অর্ধেক দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
ডেমরার কোনাপাড়া মান্নান স্কুল এণ্ড কলেজ মার্কেটে ঐতিহ্যবাহী মিষ্টির দোকান আনন্দ সুইট এর কর্নধার রঞ্জিত বলেন, বৈরী আবহাওয়া, এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার এবং ভালো রেজাল্টের হার কম হওয়ার কারণে এবার মিষ্টি বেচাকেনায় রেজাল্টের আমেজ পড়েনি। অন্যান্য বছর এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিন মিষ্টি বিক্রি সাধারণ সময়ের তুলনায় দুই থেকে আড়াইগুণ বেশি হয়। তবে এবার সেটি হয়নি। তিনি বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরেই বিভিন্ন পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিনও মিষ্টির দোকানে বেচাকিক্রি আগের মতো বাড়ে না। যদিও পয়লা বৈশাখ, পবিত্র ঈদুল ফিতর, এসএসসি ও এইচএসসির ফল প্রকাশের দিনগুলোতে সবচেয়ে বেশি মিষ্টি বিক্রি হতো আগে। রামপুরা এলাকায় ফুলকলি ও মধুবন জনপ্রিয় মিষ্টির দোকান। বিকেল সাড়ে তিনটায় এ দুই দোকানে ক্রেতার আনাগোনা চোখে পড়েনি। জানতে চাইলে ফুলকলির ম্যানেজার মোহাম্মদ রনি বলেন, ক্রেতা দেখে বোঝার উপায় নাই যে আজ এসএসসির ফল প্রকাশ হয়েছে। আগেও যেমন টুকটাক বিক্রি হতো, এখনো তেমনই হচ্ছে। রেজাল্টের আমেজ এখন আর মিষ্টির দোকানে পড়ে না। তবে বিজয়নগরের মুসলিম সুইটসে কিছুটা বেশি ক্রেতা দেখা গেলো। সেখানে কোম্পানির অপারেশনাল ম্যানেজার শাওন রহমান বলেন, আগের চেয়ে বেশি উৎপাদন করে প্রস্তুতি নিয়েছি। এদিন সাধারণত এক দেড় লাখ টাকা বেশি বিক্রি হয়। তবে তিনি বলেন, আগে রেজাল্টের সময় এখানে লাইন দিয়ে মিষ্টি বিক্রি হয়েছে, এখন আর সেই পরিস্থিতি নেই। বিক্রি কিছুটা বাড়লেও প্রত্যাশা পূরণ করতে পারে না। পল্টনে মিঠাই-এর ইনচার্জ সাগর শিল বলেন, রেজাল্টের কারণে আমরা স্টক রাখছি দ্বিগুণের মতো। আবহাওয়া ভালো থাকলে বেচাবিক্রি ভালো হবে প্রত্যাশা করছি। আদি টাঙ্গাইল মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের গৌতম ঘোষ বলেন, যা একটু বিক্রি হতো বৃষ্টির কারণে সেটাও হচ্ছে না। কয়েকদিন ধরেই টানা আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে বেশি মিষ্টি বানানো হয়নি। রাজভোগ সুইটসের সফিউল আলম বলেন, এবার রেজাল্টও খারাপ। পাসের হার কম। ভালো রেজাল্টও কম। স্বাভাবিকভাবে সেটার একটা প্রভাব পড়েছে বেচাকেনার ওপর। টানা কয়েকদিন বৈরী আবহাওয়ার কারণে সড়কে যান চলাচলও ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম। মানুষের চলাচলও কমেছে। তবে এ পরিস্থিতিতেও অনেকেই রেজাল্টের খুশিতে মিষ্টি কিনতে এসেছেন। আফরোজা বেগম নামের এক নারী বলেন, সন্তানের রেজাল্ট শুনে অফিস ছুটি নিয়ে বাসায় ফিরছি। মিষ্টি না নিয়ে গেলে হয়! বাসা ও আশপাশে প্রতিবেশীদের জন্য মিষ্টি নিচ্ছি। পরে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে পাঠাবো।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স