ঢাকা , শুক্রবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৫ , ১৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
বিএসএফ মহাপরিচালকের ব্যাখ্যায় দ্বিমত বিজিবির ডিজির ১৪ সদস্যের ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন মৎস্য ভবনের সামনে সড়ক অবরোধ প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের শিশু ধর্ষণ আশঙ্কাজনক বৃদ্ধিতে গভীর উদ্বেগ সিলেটে পুকুর থেকে সাদাপাথর উদ্ধার ভোলাগঞ্জের পাথর লুট করে ১৫০০-২০০০ ব্যক্তি বাংলাভাষী লোকজনকে ‘বাংলাদেশি’ আখ্যা দিয়ে দেশছাড়া করতে দেব না- মমতা রোডম্যাপকে স্বাগত জানাই-জোনায়েদ সাকি ইসির রোডম্যাপে খুশি বিএনপি-মির্জা ফখরুল ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা মেসির জোড়া গোলে ফাইনালে ইন্টার মায়ামি টাইব্রেকারে গ্রিমসবির কাছে হেরে বিদায় নিলো ম্যানইউ নতুন মাইলফলক স্পর্শ করলেন হামজা ‘মুসলিম হওয়ার কারণে অনেকে আমাকে টার্গেট করেন’ ভারতের ২৬ বিশ্বকাপ জেতার সুযোগ দেখছেন না শ্রীকান্ত নতুন ক্যাটাগোরিতে বেতন কত কমল বাবর-রিজওয়ানের? বড় ব্যবধানে হারলো সাকিবের ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্স বাংলাদেশকে হারানো সহজ হবে না: স্কট এডওয়ার্ডস রাকসু নির্বাচনের তফসিল ৩য় বারের মতো পুনর্বিন্যস্ত পিছিয়েছে ভোট জকসু নির্বাচনে বয়সসীমা থাকছে না

পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে বিলীনের মুখে পাবনার নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাট

  • আপলোড সময় : ১০-০৭-২০২৫ ১১:৫৭:৪৪ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১০-০৭-২০২৫ ১১:৫৭:৪৪ পূর্বাহ্ন
পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে বিলীনের মুখে পাবনার নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাট
পাবনা প্রতিনিধি পাবনার সুজানগর উপজেলার নাজিরগঞ্জ ইউনিয়নসহ কয়েকটি এলাকায় পদ্মা নদীতে দেখা দিয়েছে তীব্র নদীভাঙন। নদীগর্ভে বিলীনের মুখে পড়েছে উপজেলার নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাট। কিন্তু ভাঙনরোধ ও ঘাট রক্ষায় দেখা যায়নি তেমন উদ্যোগ। দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি সংশ্লিষ্টদের। কয়েকদিন ধরে এ ভাঙন অব্যাহত থাকলেও চলমান অতিবৃষ্টিতে উজানের পানির চাপ বাড়ায় বাড়ছে উদ্বেগ। তীব্র হচ্ছে ভাঙন পরিস্থিতি। এতে আতঙ্কে দিন কাটছে নদীপাড়ের বাসিন্দাদের। নদীপাড়ের বাসিন্দারা বলছেন, নদীভাঙন ঠেকাতে ও ঘাট রক্ষায় শুষ্ক মৌসুম বা বছরের অন্যান্য সময় নেওয়া হয় না তেমন উদ্যোগ। ফলে নিগৃহীতই রয়ে গেছে ফেরিঘাট। বছরজুড়েই পদ্মা নদীতে অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করলেও সে বিষয়ে টুকটাক পদক্ষেপের বাইরে নেওয়া হয় না ব্যবস্থা। ফলে যখন তখন দেখা দেয় ভাঙন। এছাড়া পশ্চিম পাশে বড় বড় ব্লক দিয়ে নদীর তীর রক্ষা করা হলেও পূর্বপাশের তীর রক্ষায় নেওয়া হয়নি তেমন উদ্যোগ। ফলে কয়েক বছর ধরেই অব্যাহত রয়েছে ভাঙন। তবে এবারের ভাঙন বেশি হওয়ায় আতঙ্কিত ঘাট কর্তৃপক্ষ ও নদীপাড়ের বাসিন্দারা। তারা বলছেন, এ ভাঙন অব্যাহত থাকলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই নদীগর্ভে যাবে তাদের বসতভিটা। হারাতে হবে মাথা গোজার শেষ ঠাঁইটুকুও। তাই ভাঙনরোধে দ্রুত পদক্ষেপের দাবি তাদের। নদীপাড়ের বাসিন্দা আফরোজা বেগম বলেন, শুনি অমুক জায়গায় ব্লক বানাই রাখছে, বস্তা ভরে রাখছে। কিন্তু ফেলে না। এভাবেই প্রতিবছর পার করে। অন্যান্য বছর যাহোক, এবার ভাঙন অন্যরকম। এই ভাঙন না ঠেকালে আমাদের গ্রাম ভাঙবে। ভাঙবে ফেরিঘাটও। তাহেরসহ স্থানীয় কয়েকজন বলেন, প্রতিবছরই টুকটাক ভাঙে। কিন্তু এবারের ভাঙনের গতি ভালো না। নদীতে পানি বাড়ার কারণে ভাঙন বেশি। এভাবে চললে আমাদের বাড়িঘর হুমকির মুখে পড়বে। অথচ কেউই পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তাহলে এগুলো দেখবে কে? তারা বলেন, সারাটা বছর নদীর বিভিন্ন জায়গায় শত শত ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু তোলা হয়। সেটির ভাগ নেওয়ার লোক আছে। কিন্তু এর জন্য এখন নদীভাঙন হচ্ছে, সেটি দেখার লোক নেই। এদিকে বিআইডব্লিউটিএর অধীনে থাকা ঘাট এলাকা দেখভালের সম্পূর্ণ দায়িত্ব বন্দর কর্তৃপক্ষের। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় সম্ভব হচ্ছে না সেটিও। ঘাট কর্তৃপক্ষ বলছে, নদী বন্দর বা ঘাটের আওতাধীন জমির সীমানা নির্ধারণ করে বিআইডব্লিউটিএকে মালিকানা দেখিয়ে ২০২৩ সালে রাষ্ট্রপতির নির্দেশক্রমে একটি অধ্যাদেশ বা গেজেট জারি করা হয়। এতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশিত ঘাট এলাকা বিআইডব্লিউটিএকে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও সেটি এ পর্যন্তও বুঝিয়ে দেয়নি জেলা বা উপজেলা প্রশাসন। উল্টো পূর্বের ন্যায় ইজারা দিয়ে যাচ্ছে তারা। কিন্তু ঘাট বুঝে না পাওয়ায় ঘাট রক্ষণাবেক্ষণে তেমন ভূমিকা রাখতে পারছেন না বিআইডব্লিউটিএ বা ঘাট কর্তৃপক্ষ। ফলে এ বছরের ভাঙন রোধেও তাদের পক্ষ থেকে নেওয়া সম্ভব হয়নি তেমন পদক্ষেপ। বিআইডব্লিউটিএর নাজিরগঞ্জ ঘাট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, এবার ভাঙন বেশি। এভাবে ভাঙতে থাকলে নদীগর্ভে ঘাট বিলীনের আশঙ্কা রয়েছে। সেরকম পরিস্থিতি হলে ঘাট এখান থেকে সরিয়ে নিতে হবে। কিন্তু এ অবস্থাতেও আমাদের তেমন কিছুই করার নেই। কারণ চিঠি দেওয়া বা বার বার যোগাযোগ করা হলেও স্থানীয় প্রশাসন গেজেট অনুযায়ী ঘাট ও এর আওতাধীন জমি আমাদের বুঝিয়ে দেয়নি। আপত্তি জানানো সত্ত্বেও উল্টো তারা ইজারা দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, এর আগে এসিল্যান্ড ও সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সীমানা নির্ধারণে একটি কমিটি করা হয়। গেজেট অনুযায়ী সে সীমানা নির্ধারণ করে গত মে মাসে ইউএনওকে রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। কিন্তু দু’মাসেও সে রিপোর্ট ডিসি সাহেবের কাছে যায়নি। এভাবেই সবকিছু ঝুলে আছে। আমরা আমাদের ঘাট ও সংশ্লিষ্ট এলাকা দেখভাল করতে পারছি না। এদিকে এই যে ভাঙন শুরু হয়েছে সে ব্যাপারে তারা কোনো পদক্ষেপও নিচ্ছেন না। সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর রাশেদুজ্জামান বলেন, একেবারেই যদি ঘাট তাদের দখলে না থাকে, তাহলে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছেন কীভাবে। ২০২৩ সালে গেজেট হলেও সংশ্লিষ্ট কমিটি আমাকে রিপোর্ট দিয়েছে সম্প্রতি। স্থানীয় কিছু জটিলতা রয়েছে। সেগুলো নিষ্পত্তি করে রিপোর্ট ফরোয়ার্ড বা অন্যান্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নদীভাঙন রোধের ব্যাপারে তিনি বলেন, তারা যেমনটি বলছেন ভাঙনের ক্ষেত্রে ততোটাও সংকট সৃষ্টি হয়নি। এরইমধ্যে ওই এলাকায় ভাঙনরোধে কিছু কিছু কাজ হয়েছে। যে জায়গাগুলোতে হয়নি বা আরও জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলো আমরা নোট করেছি। সেগুলো নিয়ে দাপ্তরিক কাজ চলছে। এছাড়া প্রতিমুহূর্ত এগুলো পর্যবেক্ষণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশ দেওয়া আছে। তেমন প্রয়োজন হলেই কাজ শুরু হবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য