ঢাকা , শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫ , ২০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
ঘনিষ্ঠদের মাধ্যমে ৭৫ কোটি টাকা ঘুষ নেন সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক আইনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনে একমত দলগুলো ৫৩ বছরে এমন আলোচনার সুযোগ আসেনি-আলী রীয়াজ লেনদেনের মাধ্যমে শিশু হাসপাতালে চিকিৎসক নিয়োগ হয়েছে-ডা. খালিদুজ্জামান তদন্তে সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে গুমে জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা পুলিশ সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের ঘোষণা আইএমইডিতে ৪ কোটি টাকার কাজ করেছে ২৬ কোটি টাকায় টেলিকম খাতে নতুন নীতিমালা নিয়ে বিএনপির উদ্বেগ দেশে নারী-শিশু নির্যাতন মহামারি পর্যায়ে-শারমীন এস মুরশিদ জাপানের বন্ধুত্ব ও অবদান বাংলাদেশ সবসময় মনে রাখবে -প্রধান উপদেষ্টা প্রস্তুত এসএসসির ফল, প্রকাশ শিগগিরই প্রবাসীদের সুবিধা দিয়ে ব্যাগেজ রুলস সংশোধন করলো এনবিআর রাজস্ব ঘাটতি লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার শঙ্কা এনবিআর নিয়ে কঠোর অবস্থানে সরকার এক্সপ্রেসওয়েতে অবরোধ যানজট-ভোগান্তি বরিশালে সাবেক মেয়রসহ ১৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তে দুদক ১৪ দিনে সেনাবাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার ৫৬২ ডিএই’র পেঁয়াজ বীজ সরবরাহ করেনি বঙ্গ এগ্রোটেক ঘুষ লেনদেনের ভিডিও ভাইরাল এসআই প্রত্যাহার মুরাদনগরে ২ সন্তানসহ মাকে পিটিয়ে হত্যা
* আন্দোলনকারীদের টার্গেট করে দুদকের অনুসন্ধান * বরখাস্ত ও অবসরে পাঠানোর পদক্ষেপ নিয়েছে দুদক * রাজস্ব দফতরে নীরব উত্তেজনা, আতঙ্ক ও অস্থিরতা

এনবিআর নিয়ে কঠোর অবস্থানে সরকার

  • আপলোড সময় : ০৪-০৭-২০২৫ ০৭:১৫:৫৯ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৪-০৭-২০২৫ ০৭:১৫:৫৯ অপরাহ্ন
এনবিআর নিয়ে কঠোর অবস্থানে সরকার
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) পুনর্গঠন ও বিভাজনের পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলনে নামা কর্মকর্তাদের ওপর সরকারের শাস্তিমূলক পদক্ষেপ জোরালো আকার ধারণ করেছে। আন্দোলন প্রত্যাহারের এক সপ্তাহ না যেতেই পাঁচ সিনিয়র কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ও বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে আরও জ্যেষ্ঠ ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। সরকারের এমন কঠোর অবস্থানে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন রাজস্ব প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিব্রত হচ্ছেন আন্দোলন-সমঝোতায় যুক্ত থাকা ব্যবসায়ী নেতারাও।
সরকার গত দুই দিনে এনবিআরের এক কমিশনার ও চার সদস্যকে শাস্তির আওতায় এনেছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের কমিশনার জাকির হোসেনকে (১ জুলাই) বরখাস্ত করা হয়েছে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে শুল্ক কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগে। পরদিন (২ জুলাই)  অবসরে পাঠানো হয় এনবিআরের চার সদস্য-ড. মো. আবদুর রউফ (মূসক নীতি), হোসেন আহমদ (শুল্ক নীতি ও আইসিটি), আলমগীর হোসেন (কর) এবং বরিশাল কর অঞ্চলের কমিশনার শাব্বির আহমেদকে।
অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) থেকে পৃথক চারটি আদেশে বলা হয়েছে-‘সংশ্লিষ্টদের চাকরির বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় ‘জনস্বার্থে’ তাদের ‘সরকারি চাকরি আইন ২০১৮’-এর ৪৫ ধারায় অবসরে পাঠানো হলো। তারা অবসরকালীন সব সুবিধা পাবেন।’
নতুন করে এনবিআরের পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। এর আগে আরও ১১ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে সংস্থাটি। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ-ঘুষের বিনিময়ে কর ফাঁকির সুযোগ করে দেওয়া, অতিরিক্ত কর ফেরত দিতে বিলম্ব ঘটানো ও অবৈধ সম্পদ অর্জন, এসব তদন্তের মূল বিষয়বস্তু।
দুদকের তদন্তের আওতায় যেসব কর্মকর্তার নাম এসেছে, তাদের বেশিরভাগ সাম্প্রতিক আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন বলে এনবিআর কর্মকর্তারা দাবি করছেন। ফলে আন্দোলনকারী অনেকেই এটিকে ‘পাল্টা প্রতিশোধ’ হিসেবে দেখছেন। এনবিআরে জনবল রয়েছে প্রায় ২৩ হাজার। তাদের মধ্যে প্রায় ১৫০০ ক্যাডার কর্মকর্তা। এই কর্মকর্তাদের মধ্যে বিরাজ করছে ভয়, ক্ষোভ ও অনিশ্চয়তা । কেউ কেউ নাম প্রকাশ না করে জানিয়েছেন, ‘দেশবাসীর সামনে আমাদের অপরাধী বানানো হচ্ছে। অথচ আমরা বারবার আলোচনার চেষ্টা করেছি। সরকার শোনেনি, এখন শাস্তি দিচ্ছে।’
একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, একদিনে তো আমরা ‘কমপ্লিট শাটডাউনে’ যাইনি। সেটা ছিল আমাদের অসহায়ত্বের প্রতিবাদ। কিন্তু এখন যেভাবে টার্গেট করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তাতে এনবিআর ব্যবস্থাপনার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে উঠছে। আন্দোলন নিরসনে সরকারের সঙ্গে সংলাপে মধ্যস্থতা করেছিলেন ব্যবসায়ী নেতারা। তাদের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, আমরা এনবিআর চেয়ারম্যান ও অর্থ উপদেষ্টাকে চিঠি দিতে যাচ্ছি- পরিস্থিতি যেন আরও না খারাপ হয়। তিনি বলেন, অসৎ কর্মকর্তা বাদ দিতে হবে, তবে আগে কাঠামোগত সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ ছিল এটা সত্য, তবে সমঝোতার আশ্বাসে আমরা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজে ফেরত এনেছিলাম। এখন যদি তাদের শাস্তি দেওয়া হয়, তাহলে ভবিষ্যতে আর কেউ মধ্যস্থতায় আসবে না। একটি অধ্যাদেশ জারি করে গত ১২ মে এনবিআর বিলুপ্ত করে ‘রাজস্ব নীতি’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা’ নামে দুটি বিভাগ গঠনের ঘোষণা দেয় সরকার। কর্মকর্তাদের অভিযোগ, প্রশাসন ক্যাডারের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’-এর ব্যানারে আন্দোলন শুরু হয়। ২৮-২৯ জুন ঢাকায় ‘মার্চ টু এনবিআর’ এবং ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির মাধ্যমে বিভিন্ন বন্দরের কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে যায়। এরপর মধ্যস্থতায় আন্দোলন প্রত্যাহার করলেও সরকার এখন একের পর এক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে, এ অভিযোগ আন্দোলনে অংশ নেওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ব্যবসায়ী নেতাদের আশ্বস্ত করেছেন, বড় ধরনের আর ‘ক্র্যাকডাউন’ হবে না। তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বলেছে, শিগগিরই আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, সরকারের কঠোর অবস্থানে আপাতত শৃঙ্খলা ফিরে এলেও এ পদক্ষেপ দীর্ঘমেয়াদে এনবিআরের কাঠামোগত সংস্কার প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। কারণ, আত্মবিশ্বাসহীন একটি প্রশাসনিক কাঠামো থেকে কার্যকর সংস্কার সম্ভব নয়।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
আইএমইডিতে ৪ কোটি টাকার কাজ করেছে ২৬ কোটি টাকায়

আইএমইডিতে ৪ কোটি টাকার কাজ করেছে ২৬ কোটি টাকায়