ঢাকা , শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫ , ২০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
এক্সপ্রেসওয়েতে অবরোধ যানজট-ভোগান্তি বরিশালে সাবেক মেয়রসহ ১৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তে দুদক ১৪ দিনে সেনাবাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার ৫৬২ ডিএই’র পেঁয়াজ বীজ সরবরাহ করেনি বঙ্গ এগ্রোটেক ঘুষ লেনদেনের ভিডিও ভাইরাল এসআই প্রত্যাহার মুরাদনগরে ২ সন্তানসহ মাকে পিটিয়ে হত্যা স্কুলছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেফতার রাজধানীতে ছুরিকাঘাতে আহত ৩ হাসপাতালের বারান্দায় জন্ম দুই নবজাতকের একজনের মৃত্যু আনুপাতিক ভোট পদ্ধতিতে নেতা তৈরি হবে না- রিজভী দক্ষ শিক্ষক তৈরির ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাবের শঙ্কা সরিষাবাড়ীতে নদী ভাঙনের আতঙ্কে তিন গ্রামের মানুষ ইঞ্জিন সঙ্কটে পূর্বাঞ্চলে রেলযাত্রীদের ভোগান্তি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র গঠনে পরিবর্তনের চেষ্টা করা হচ্ছে-আলী রীয়াজ ভারত-মিয়ানমারের সাথে টানাপোড়েনে বাংলাদেশ দেশ-বিদেশ থেকে ছড়ানো গুজব এক প্রকার অবিরাম বোমাবর্ষণ : ড. ইউনূস ম্যাজিস্ট্রেট তাবাসসুম ঊর্মি বরখাস্ত মধ্যপ্রাচ্যে ঘোষণা দিয়ে মারামারি করে সিলেট ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিদেশিদের বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে নেগোসিয়েশন চলছে-নৌ-উপদেষ্টা বিএনপি জনগণের প্রত্যাশার নির্বাচন চায়-তারেক রহমান

জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র গঠনে পরিবর্তনের চেষ্টা করা হচ্ছে-আলী রীয়াজ

  • আপলোড সময় : ০৩-০৭-২০২৫ ০৮:৩৮:৩৭ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৩-০৭-২০২৫ ০৮:৩৮:৩৭ অপরাহ্ন
জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র গঠনে পরিবর্তনের চেষ্টা করা হচ্ছে-আলী রীয়াজ
অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ সমূহের বিষয়ে ঐক্য গড়ে এবং রাষ্ট্র সংস্কারের বিভিন্ন বিষয়ে একমত হয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ‘জুলাই সনদ’ তৈরীর লক্ষ্যে দ্বিতীয় দফায় অষ্টম দিনের মত দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গতকাল বুধবার সকাল ১১ টার পরপর রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে এ বৈঠক আনুষ্ঠানিকভাবে সূচনা করা হয়। এদিন আলোচনার শুরুতে জুলাই অভ্যূত্থানে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ। এছাড়া, কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. মো. আইয়ুব মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজকের আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন-বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেন, জুলাই মাসের দুই তারিখে দাঁড়িয়ে আমার মনে হচ্ছে যে, আমরা চেষ্টা করলে জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যেই একটা সনদের জায়গায় যেতে পারবো। তিনি বলেন, একদিকে অত্যন্ত বেদনার সঙ্গে আমরা এই জায়গায় একত্রিত হই, কেননা জুলাই আন্দোলনে আমরা আমাদের বন্ধু, সহকর্মী ও অনেক ভাই-বোনদের হারিয়েছি। অনেকেই সেই ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছেন বা মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। অপরদিকে তাদের প্রতি একটা দায়বদ্ধতা থেকেও আমরা এখানে উপস্থিত হই। তিনি আরো বলেন, এখানে উপস্থিত হয়ে আলোচনার মাধ্যমে আমরা পরস্পরকে জানছি, বুঝছি। আমরা কাঠামোগুলোর কথা বিবেচনা করছি, সাফল্যের জন্য চেষ্টা করছি। সে কারণেই আমি আশাবাদী যে, আমরা দ্রুত ঐকমত্য গড়ে তুলে এক জায়গায় পৌঁছাতে পারবো। কেননা সেই দায় ও দায়বদ্ধতা আপনারা সকলে প্রাণ দিয়ে অনুভব করেন। তিনি আরও বলেন, আমি আশা করি, আমরা অবশ্যই এ মাসের মধ্যে...জুলাইয়ের মাঝামাঝি অথবা তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে এক জায়গায় পৌঁছাতে পারবো।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, রাষ্ট্রকাঠামো পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, যেন নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষিত হয়, যেন জীবনের অধিকার সুরক্ষিত হয়, যেন গুম, হত্যা, বিচারবহিবর্ভূত হত্যা, বিচারিক হত্যার শিকার কেউ না হয়। তিনি আরও বলেন, এটা আপনাদের (রাজনৈতিক দল) কর্মীদের অবদান, নাগরিকদের অবদান, সব রাজনৈতিক দলের ঊর্ধ্বে উঠে জনগণের সাফল্য। কিন্তু সেই সাফল্য শুধু এক পর্যায়ে থেমে গেলে হবে না। তাকে সুরক্ষিত করতে হবে এবং সেই সুরক্ষার উপায় হিসেবে আমরা যেন সংস্কারের কার্যক্রম এগিয়ে নিতে পারি। সেই চেষ্টায় রাজনৈতিক দলগুলো সহযোগিতা করছে। সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান সম্পর্কে তিনি বলেন, আপনারা দলগতভাবে, জোটগতভাবে, ব্যক্তিগতভাবে গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় কমিশনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক, অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ করেছেন, যেগুলো আমাদেরকে আশাবাদী করছে। আমরা মনে করি যে এই জায়গায় আমরা পৌঁছাতে পারব। কারণ আমাদের সবারই আন্তরিক প্রচেষ্টাটা আছে। তিনি বলেন, কখনও কখনও আমরা অগ্রসর হই, কখনও কখনও আমরা যতটা অগ্রসর হতে চাই, ততটা না পারায় খানিকটা হতাশ হই। কিন্তু তারপরও আমরা চেষ্টা করলে জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে একটা সনদের জায়গায় যেতে পারব। এতে আপনাদের সবার প্রচেষ্টা, সবার আন্তরিক সহযোগিতাটাই সবচেয়ে বড় জিনিস।
প্রতি আদমশুমারির পরে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে একটি সাংবিধানিক বিশেষায়িত কমিটি গঠনের বিষয়ে দেশে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। ডা. তাহের বলেন, আজ সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের সংবিধানের ১১৯ অনুচ্ছেদে এ বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে আগে নির্বাচন কমিশনই একান্তভাবে কাজটি করতো। এখন স্বচ্ছতার জন্য একটু পরিবর্তন আনার কথা বলা হচ্ছে। সেটা হচ্ছে, একটি বিশেষায়িত কমিটি হবে। তিনি বলেন, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে সেই কমিটি নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সহযোগিতা ও সুপারিশ করবে। এটিকে দুভাবে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম হচ্ছে, সামনে যে জাতীয় নির্বাচনটি হবে, এতে আমাদের বা কমিশনের প্রস্তাব ছিল একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করা হবে ইসির অধীনে। সময় কম থাকায় এবার এই কমিটি গঠন সম্ভব নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ত্রয়োদশ নির্বাচনে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করবে ইসি, তাদের সুপারিশক্রমে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ করা হবে। স্বচ্ছ, সুন্দর ও সঠিকভাবে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ করার জন্য এটি খুবই জরুরি বিষয়। কারণ এটার কারণে নির্বাচনের ফল ভিন্ন হয়ে যায় অনেক সময়। ডা. তাহের বলেন, সীমানা নির্ধারণের জন্য অনেকগুলো বিশেষজ্ঞের কাজ করতে হয়। জরিপের কাজ, ভৌগোলিক অঞ্চলকে সমন্বয়, ভোটের আনুপাতিক দিকগুলো আছে এমন অনেক বিষয়ে কাজ করতে হয়। সবকিছু বিবেচনা করে এটি একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি হবে। আর স্থায়ীভাবে আরেকটি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছি, সংবিধানে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির বিষয়ে উল্লেখ থাকবে। আদমশুমারির পরপরই সীমানা নির্ধারণের জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি থাকবে। তারা একটি সাংবিধানিক কমিটি হিসেবে কাজ করবে, সংবিধানে তাদের কথা উল্লেখ থাকবে। তিনি আরও বলেন, এই কমিটি স্বাধীন হবে। বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে এটি গঠিত হবে। কমিশন প্রস্তাব করেছিল এটির নামের শেষে কমিশন হবে। এ নিয়ে অনেকে আবার আপত্তি করেন। যে কারণে, নামের শেষে কমিটি দিয়েই সবাই ঐকমত্য হয়েছি। জামায়াত এটির শেষে কমিশনেই একমত ছিল। কিন্তু বিএনপির পক্ষ থেকে এটিকে সংবিধানে সংযোজন করার বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করা হয়েছে। এটিকে একটি আইনের মাধ্যমে করার কথা বলেছে। পরে দীর্ঘ আলোচনার পর ঐক্যের স্বার্থে বিএনপি তার অবস্থান কিছুটা পরিবর্তন করেছে। তিনি বলেন, স্বাধীন কমিটি হিসেবে সংবিধানে এটি সংযোজিত করার বিষয়েও বিএনপি রাজি হয়েছে। আমরাও এখানে কম্প্রোমাইজ (আপস) করেছি। আমরা কমিশনের জায়গায় কমিটি মেনে নিয়েছি। দুটো প্রধান দলই ছাড় দিয়ে একটি ঐকমত্যে আসার পর বাকিরা রাজি হয়েছেন। ডা. তাহের বলেন, গেল ১৫ বছরে বহু সংসদীয় আসনকে তছনছ করে দেয়া হয়েছে, কিছু ব্যক্তিকে নির্বাচনে সুবিধা করে দেয়ার জন্য। আওয়ামী লীগের সময় এমন বহু পরিবর্তন করা হয়েছে। আবার আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অনেকেই আপিল করেছিলেন।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স