ঢাকা , রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫ , ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নগরে ফিরছে মানুষ পথে পথে ভোগান্তি এবারের বাজেট ট্রাম্প ও আইএমএফএ’র দুই পায়ে দাঁড়ানো-আনু মুহাম্মদ প্রধান উপদেষ্টা নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করেছেন-জামায়াত ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠক দেশে স্বস্তি এনেছে বললেন দুদু মামলার আগেই আপস-মধ্যস্থতা বাধ্যতামূলক, বড় পরিবর্তন আসছে আইনে মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা রেমিটেন্সে ধস আয়রন ডোম চুরমার ইসরায়েলি সদর দফতর গুঁড়িয়ে দিল ইরান ইরানের কাছে ধরাশায়ী ইসরায়েল মেসিদের ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াচ্ছে ক্লাব বিশ্বকাপ মাঠে ফেরায় তোড়জোড় গগবার অনিশ্চয়তায় ক্যাবরেরার ভবিষ্যৎ ভারতের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের আয়োজক হওয়ার প্রস্তাবকে আইসিসির ‘না’ বিগব্যাশে ডাক পেলেন বাবর আজম পাকিস্তানের কোচের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করলেন ইউসুফ তারকাবিহীন দল নিয়ে বাংলাদেশ সফরে আসবে পাকিস্তান অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা ইসরায়েলি হামলায় নিন্দার ঝড় ইরানের পাল্টা হামলার শঙ্কায় খাবার ও পানি মজুত করছে ইসরায়েলিরা সবকিছু শেষ হওয়ার আগেই চুক্তি করুন ইরানকে হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সমুদ্রে মাছ আহরণে প্রস্তুত জেলেরা

  • আপলোড সময় : ১৩-০৬-২০২৫ ০৬:৩২:১২ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৩-০৬-২০২৫ ০৬:৩২:১২ অপরাহ্ন
৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সমুদ্রে মাছ আহরণে প্রস্তুত জেলেরা
টেকনাফ উপকূলীয় শাহপরীর দ্বীপ নৌকার ঘাটে যেতেই চোখে পড়ল জেলেদের কর্মব্যস্ততা। কেউ মাছ ধরার ট্রলারে রঙ লেপটে নিচ্ছেন, কেউ জাল প্রস্তুত করছেন। কেউ আবার বরফ কিংবা নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে তুলছেন। সমুদ্র যাত্রায় শেষ সময়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন জেলেরা। মাছের বংশবিস্তার, বেড়ে ওঠা ও টেকসই আহরণের জন্য প্রজনন মৌসুমে বঙ্গোপসাগরে সাগরে মাছ ধরায়ে ৫৮ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা গত বুধবার রাত ১২টায় শেষ হয়েছে। তাই জেলেদের এখন দম ফেলার ফুরসত নেই। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৫ এপ্রিল থেকে দেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ ছিল। এই সময়ের মধ্যে টেকনাফের জেলেরা মাছ ধরা থেকে বিরত ছিলেন। নিষেধাজ্ঞার সময় প্রতি জেলের জন্য চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ ৫৮ দিন পর দক্ষিণাঞ্চলের টেকনাফ উপকূলের বৃহৎ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং শাহপরীর দ্বীপ সমুদ্র উপকূলীয় এলাকার জেলে পল্লীগুলোতে কর্মব্যস্ততা শুরু হয়েছে। বরফ কলগুলোতেও বরফ তৈরির প্রস্তুতি ও বিক্রি শুরু হয়েছে। এখন সাগরে জাল ফেলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন জেলেরা। শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাটের জেলে আবুবকর ছিদ্দিক বলেন, ৫৮ দিন নিষেধাজ্ঞা চলাকালে তিনি সরকারি সহায়তা হিসেবে ৫৮ কেজি চাল পেয়েছেন। কিন্তু আট সদস্যের পরিবারের জন্য এই চাল যথেষ্ট ছিল না। ফলে তাকে ধার করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে হয়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার জেলেরা অনেক খুশি। তিনি বলেন, তার নৌকায় তিনি ছাড়াও আরও ৯ জেলে আছেন। এদের মধ্যে তিন জন জেলে সরকারি চাল পান নাই। জেলে আলী আজগর মাঝি বলছিলেন, “দীর্ঘ ৫৮ দিন একেবারে বেকার ছিলাম। কিছু টাকা ঋণগ্রস্ত হয়েছি। তবে সরকারের নিষেধাজ্ঞা মেনে নেওয়ার কারণে আশা করছি এ বছর ভাল পরিমাণে মাছ পাব।” তিনি বলেন, “১৫ দিন আগেই জাল ও ট্রলার মেরামত শেষ করেছি। মৎস্য উপকরণও বোঝাই করেছি। নিষেধাজ্ঞার সময়ে সরকার বিশেষ প্রণোদনার চাল দিলেও তাতে আমাদের সংসার চলছে না। জেলেদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা দরকার।” শাহপরীর দ্বীপ ট্রলার মালিক সভাপতি গফুর আলম বলছেন, “৫৮ দিন অবরোধের কারণে কষ্টে জীবনযাপন করা জেলেদের মুখে এখন হাসি ফুটেছে। শাহ পরীর দ্বীপ উপকূলের প্রায় ৫ শতাধিক ট্রলার সাগরে মাছ শিকার জন্য যাত্রা শুরু করেছে। “এলাকার মৎস্য মাছের আড়ত গুলোয় নতুন করে ধোয়া-মোছার কাজ চলছে। জেলে পল্লীগুলোও কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছে।” ভারতের সঙ্গে মিল রেখে এবার সাগরে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময় ঠিক করেছিল সরকার। ফলে এ বছর প্রচুর ইলিশ মিলবে বলে প্রত্যাশা জেলেদের। সাধারণত প্রতিবছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মোট ৬৫ দিন বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় মাছ ধরা বন্ধ থাকে। তবে ভারতে প্রতিবছর মাছ ধরা বন্ধ থাকে ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত ৬১ দিন। আর মিয়ানমারে নিষেধাজ্ঞার এই সময় ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত মোট ৯১ দিন। বাংলাদেশের জেলেরা যখন সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধ রাখেন, তখন প্রতিবেশী দেশের জেলেরা এদেশের জলসীমায় ঢ়ুকে মাছ ধরে থাকেন। এই কারণে মৎস্যজীবীরা দীর্ঘদিন ধরে নিষেধাজ্ঞার সময় সমন্বয়ের দাবি করে আসছিলেন। টেকনাফ উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, “সাগরে নিষেধাজ্ঞার ফলে ৪৭৫ প্রজাতির মাছ সুষ্ঠুভাবে প্রজনন করতে পেরেছে বলে আমরা আশা করছি। নিষেধাজ্ঞার চলাকালীন জেলেদের প্রণোদনার চাল সুষ্ঠুভাবে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।” টেকনাফ উপজেলায় ১০ হাজার ৭৭৩ জন জেলেকে ৫৮ কেজি করে ৬ লাখ ২৫ হাজার কেজি চাল বিতরণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, “মূলত দুটি কারণে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। প্রথমত, মাছ নির্বিঘ্নে ডিম ছাড়তে পারে। দ্বিতীয়ত, ছোট মাছকে বড় হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া। এবারের নিষেধাজ্ঞা ফলপ্রসূ হয়েছে। এ বছর সাগরে প্রচুর মাছ ধরা পড়বে বলে আশা করছি।”
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য