ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫ , ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
সরকারি চাকরি আইন বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে বিক্ষোভে কর্মচারীরা ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড ৬ জনের যাবজ্জীবন বহাল কালো টাকা সাদা করার বিধান সংস্কারের সম্পূর্ণ বিপরীত-টিআইবি দূরত্ব ঘুচিয়ে চমৎকার জুলাই সনদ তৈরির প্রত্যাশা প্রধান উপদেষ্টার সারাদেশে একযোগে ২৫২ বিচারককে বদলি টেকসই অর্থনীতির বাজেট এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বঞ্চনার গল্প যেন অরণ্যেরোদন চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলে ৩ উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিলেন কর্মচারীরা রাষ্ট্র সংস্কারে উপেক্ষিত নারী তারেক রহমানসহ সব আসামির খালাসের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি শেখ হাসিনার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু-আইন উপদেষ্টা শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি প্রথমবারের মতো বিটিভির স্টুডিও থেকে হচ্ছে বাজেট ঘোষণা ঘাটতি কমানোর লক্ষ্য নিয়ে নতুন বাজেট আজ দুধ শুধু পণ্য নয় এটি সংস্কৃতির অংশÑ মৎস্য উপদেষ্টা রাঙামাটিতে টানা বৃষ্টি পাহাড় ধসের ঝুঁকি সিলেটে টিলা ধসে একই পরিবারের ৪ জনের মৃত্যু বিজিএমইএ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে ‘ফোরাম’ প্যানেল বাংলাদেশি যুবককে গুলি করে লাশ নিয়ে গেছে বিএসএফ জাপা চেয়ারম্যানসহ ২৮০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টার মামলা
আসন সমঝোতা না হওয়ায় নির্বাচনী রোডম্যাপে বাধা

পর্দার অন্তরালে ত্রিমুখী আলোচনায় নির্বাচন

  • আপলোড সময় : ০১-০৬-২০২৫ ০২:১৩:৫৩ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০১-০৬-২০২৫ ০২:১৩:৫৩ অপরাহ্ন
পর্দার অন্তরালে ত্রিমুখী আলোচনায় নির্বাচন
* নির্বাচন ইস্যুতে অনড় বিএনপি-জামায়াত-এনসিপি * আসন ভাগাভাগির সমঝোতার দাবি ভিত্তিহীন : হাসনাত আবদুল্লাহ * দেশে নির্বাচন নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র বাকযুদ্ধ * আওয়ামী লীগ আমলের ভুয়া নির্বাচনগুলোতে জনগণের ভোটাধিকার বাস্তবায়ন হয়নি এনসিপি * আসন্ন নির্বাচন হতে হবে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন যাতে জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে * একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা প্রয়োজন দেশের রাজনীতি অঙ্গনে সব আলোচনাকে ছাপিয়ে শীর্ষে ত্রয়োদ্বশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ইতোমধ্যে নির্বাচন নিয়ে চলছে তীব্র বাকযুদ্ধ। রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত স্পষ্টতই তিন ভাগে বিভক্ত। একপক্ষ ডিসেম্বরেই জাতীয় নির্বাচন চায়। আরেকপক্ষের দাবি, আগে স্থানীয় নির্বাচন হোক। তবে গণপরিষদ দ্রুততম সময়ে নির্বাচনের দাবি তুলেছে। দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট করে বলেছে আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তবে বিএনপির সঙ্গে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আসন সমঝোতার অভাবেই নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। সংসদের প্রধান বিরোধীদল হতে আসন সমঝোতার জন্য জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি দেশের বৃহত্তম দল বিএনপির সঙ্গে পর্দার অন্তরালে আলোচনাও চালিয়েছে বলে দাবি করেছেন এক সময়ের জামায়াত নেতা ও বর্তমানে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল ইসলাম। সর্বশেষ গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘ঠিকানা’র টকশোতে এমন দাবি করেন তিনি। তবে এবি পার্টির চেয়ারম্যানের এমন বক্তব্যের পর এনসিপি ও জামায়াত নেতারা আসন সমঝোতার কথা অসত্য বলে দাবি করেছেন। মঞ্জুরুল ইসলাম দাবি করেন, রাজনীতির বাইরে কিছু রাজনীতি আছে। বিএনপি কেন নির্বাচনের ব্যাপারে সিরিয়াসলি ফোকাসড? যেহেতু বিএনপি জানে নির্বাচন হলে ক্ষমতায় আসতে পারে। এটা হচ্ছে মূল কথা। আমরা যতই তাত্ত্বিক কথা বলি না কেন, এখানে বাকিদলগুলো, যাদের সাথে বিএনপির ভালো সম্পর্ক তারাও নির্বাচন চায়। আর যারা মনে করে নির্বাচন করলে আমি ভালো করতে পারব না, তারা নির্বাচন বিলম্বিত করতে চায়। তিনি বলেন, এনসিপি কিন্তু পর্দার অন্তরালে বিএনপির সাথে একটা সিট নেগোসিয়েশনের আলোচনা করেছে। সে ৭০ সিট, ৫০ সিট চেয়েছে... ইতোমধ্যে একটা পর্দার অন্তরালে আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়ে গেল, সিট ভাগাভাগি হয়ে গেল, তাহলে দেখবেন সেপ্টেম্বরেই ইলেকশনের জন্য সবাই একমত হয়ে যাবে। এটা অফ দ্য রেকর্ড সবাই জানে। জামায়াত একটা শক্তিশালী দল। জামায়াতেরও ইলেকশনের ব্যাপারে পিছুটান আছে। ইলেকশন বিলম্বিত হলে এতে তাদের অসুবিধা নেই। বিএনপি যদি জামায়াতকে বলে আপনাদের ৫০টি সিট ছেড়ে দেব, জামায়াত অক্টোবরে ইলেকশন হলেও রাজি হবে। তবে মঞ্জুরুল ইসলামের এমন দাবি সরাসরি অস্বীকার করেননি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামছুজ্জামান দুদু। গতকাল শনিবার তিনি বলেন, আমরা রোডম্যাপ চাচ্ছি। রোডম্যাপ ঘোষণার দাবির মধ্যেই আমরা আছি। আগে রোডম্যাপ ঘোষণা করা হোক, তারপর সিট নেগোসিয়েশনের ব্যাপার। তিনি বলেন, এগুলো এখনও ম্যাচিউর্ড পর্যায়ে যায়নি। তবে বিএনপি বা অন্য কোনো দলের সাথে আসন ভাগাভাগির সমঝোতার দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। গতকাল শনিবার দুপুরে এক ফেসবুক স্টাটাসে তিনি বলেন, কোনো দলের সাথেই এনসিপি আসন ভাগাভাগিজনিত কোনো আলোচনায় যায়নি। এনসিপির এই শীর্ষ নেতার ফেসবুক পোস্টটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-সম্প্রতি আমরা লক্ষ্য করেছি, একটি দলের প্রধান এক অনলাইন টকশোতে মন্তব্য করেছেন, এনসিপি কিন্তু পর্দার অন্তরালে বিএনপির সাথে সিট নেগোসিয়েশন করেছে। আমরা হাইপোথেটিকালি ধরে নিলাম, পর্দার অন্তরালে সিট নেগোসিয়েশন হয়ে গেল, একটা আন্ডারস্ট্যাডিং হয়ে গেল, তাহলে দেখবেন, ডিসেম্বর না, সবাই সেপ্টেম্বরে নির্বাচনের ব্যাপারে রাজি হয়ে যাবে। আমরা উল্লেখিত রাজনীতিবিদের প্রতি আমাদের সম্মান ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে বলতে চাই, বিএনপি বা অন্য কোনো দলের সাথে আসন ভাগাভাগির সমঝোতার দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কোনো দলের সাথেই এনসিপি আসন ভাগাভাগিজনিত কোনো আলোচনায় যায়নি। কাজেই সম্মানিত ওই রাজনীতিবিদের বক্তব্য অসত্য ও বিভ্রান্তিকর। দল হিসেবে এনসিপি সারাদেশে সাংগঠনিক বিস্তৃতিকে প্রধান লক্ষ্য রেখে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা আরও লক্ষ্য করেছি, উল্লেখিত আলোচনায় এবং অন্যত্র এনসিপি সম্পর্কে ভিত্তিহীন এক ইম্প্রেশন তৈরির চেষ্টা হয় যে, দল গোছানোর স্বার্থে এনসিপি নির্বাচন পেছাতে চায়। আত্মপ্রকাশের পর থেকেই এনসিপি বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ চেয়ে আসছে। এনসিপি বলে এসেছে, যেহেতু আওয়ামী লীগ আমলের ভুয়া নির্বাচনগুলোতে জনগণের ভোটাধিকার বাস্তবায়ন হয়নি, কাজেই আসন্ন নির্বাচন হতে হবে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন যাতে জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনিক সংস্কারগুলো সম্পন্ন করতে হবে। এনসিপি মনে করে, প্রশাসনিক সংস্কারসহ অন্যান্য মৌলিক সংস্কার সম্পন্ন করে নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব। তবে সংস্কার ব্যতীত আয়োজিত নির্বাচন একচেটিয়া ও একপেশে হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। জনগণের ভোটাধিকার আদায়ের লক্ষ্যে এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে জুলাই চার্টারের ভিত্তিতে সংস্কার কার্যক্রমের মধ্যে দিয়ে সুষ্ঠু গণপরিষদ ও আইনসভার নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। পাশাপাশি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক প্রতিশ্রুত জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে। যেনতেন ও প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন যেন স্রেফ ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি না হয়, বরং মৌলিক সংস্কারের মাধ্যমে অর্থবহ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক উত্তরণ ঘটুক, এনসিপি সেই প্রত্যাশা করে। সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে বিভ্রান্তি এড়িয়ে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রশ্নে এনসিপি ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানায়। একইসুরে কথা বলেছেন এনসিপিরি যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক খান মোহাম্মদ মুরসালিন। তিনি বলেন, বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতার প্রশ্নই আসে না। আমরা এখন সংগঠনকে গোছাতে কাজ করছি। সারা দেশে আমাদের সংগঠন গোছানোর কর্মসূচি চলছে। তাহলে আপানারা নির্বাচন চান কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের দাবি আগে জুলাই ঘোষণাপত্র। এরপর নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হলেও বিচার, সংস্কারেরও সুস্পষ্ট ঘোষণা থাকবে হবে। সংস্কার বাস্তবায়নের জন্যও আমাদের দাবি গণপরিষদ। যাতে এই সংস্কার পরে কেউ বাতিল করতে না পারে। এ বিষয়ে জামায়াতের ঢাকা মহানগরের একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জামায়াতের সাফল্যে ঈর্ষান্বিত একজন দলছুট ব্যক্তি হতাশা থেকে অনেক কিছুই দাবি করতে পারেন। আমরা ব্যক্তির সমালোচনা করছি না। তবে, দল ছোট বা বড় যেমনই হোক এর প্রধানের কাছ থেকে জনগণ আরও ম্যাচিউর্ড বক্তব্য প্রত্যাশা করে। এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। তিনি বলেন, নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে অবশ্যই হতে হবে। দেশে কেউ বিনিয়োগ করতে আসলে তারা জিজ্ঞেস করে নির্বাচন কবে। আমি একটি নির্বাচিত সরকার দেখতে চাই। নির্বাচিত বিরোধী দল, নির্বাচিত সংসদ দেখতে চাই। তিনি আরও বলেন, যদি কেউ বলে শুধু একটি দল নির্বাচন চায়, এটা কী সত্য? ইতোমধ্যে আমাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে যারা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে, এমন ৫২টা রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়। এই রকম একটা বক্তব্য আমাদের জন্য বিব্রতকর, জাতি বিভ্রান্ত হচ্ছে। হাতেগোনা কয়েকটি দল নির্বাচন চায় না উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ৪ থেকে ৫টি দল, এরা কোনো নিবন্ধিত দলও না, বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে যাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই, তারা নির্বাচন চায় না। ওয়ান-ইলেভেনের সময়ও এমন কিংস পার্টি হয়েছিল। কথাগুলো বলতে চাই না এই কারণে, এসব বললে জাতির মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মনিরুল ইসলাম মিলন বলেন, ২০০৯ সালের পর বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে জোর করে নির্বাচনের বাইরে রেখেছে। আবার জাতীয় পার্টিকে জোর করে নির্বাচনের ফ্রেমে রেখেছে। জাতীয় পার্টির সাবেক চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ও বর্তমান চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে আত্মগোপনে পর্যন্ত থাকতে হয়েছে। ওই সময় আওয়ামী লীগ যেভাবে ফ্যাসিবাদী কায়দায় কিছু দলকে নির্বাচনে জোর করে রেখেছে, এখনও কিছুদল ফ্যাসিবাদী কায়দায় কিছু দলকে নির্বাচনের বাইরে রাখতে চাইছে। তাহলে ফ্যাসিবাদী আওয়াম লীগ আর এদের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? তিনি বলেন, সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসন ভাগাভাগির খবর শুনছি। আমরা তো আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনেই যেতে চাইনি। বিরোধী দল হওয়ার ইচ্ছা তো দূরের কথা। আওয়ামী জোর করে আমাদের নির্বাচনে নিয়ে বিরোধী দল বানিয়েছে। আর এখন বিরোধী দল হওয়ার জন্য কিছু দলের নেতা পাগল হয়ে গেছেন। মনিরুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগের মতো আসন ভাগাভাগির রাজনীতি না করে, দেশে সকল দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার। দেশের জনগণ নির্ধারণ করুক কারা সংসদে যাবে আর কারা বাইরে থাকবে। ষড়যন্ত্র করে জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনের বাইরে রেখে বানরের রুটি ভাগের নির্বাচন হলে এদেশের মানুষের কাছে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। যেভাবে গ্রহণযোগ্য হয়নি শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন। এ বিষয়ে কথা হয় ঢাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. নুরুল আমিন ব্যাপারী এর সঙ্গে। তিনি বলেন, এনসিপির দুর্নীতির খবরে দলটি বিপাকে পড়ে গেছে। তাদের নিজেদের দলেরও তেমন শক্তিশালী প্রার্থী নেই। এজন্য হয়তো বা যারা বিএনপির মনোনয়ন পাবে না, এমন লোকদের প্রার্থী করে বিরোধী দল হতে চাইবে। তবে নির্বাচন হলে তাদের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা কম। বিএনপি ক্ষমতায় চলে আসবে। অ্যাবসোলিউট মেজরিটি পাবে। এজন্য হয়তো বা সমঝোতায় বিরোধী দল হতে চাইবে জামায়াত-এনসিপি। এ বিষয়ে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, আসন ভাগাভাগি নিয়ে সমঝোতার বিষয়টি ধারণা প্রসূত ও অসত্য। কে কী বলল, তাতে কিছু আসে যায় না। জামায়াতে ইসলামী আগামী ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলে নিবার্চন অনুষ্ঠান ও রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের। বল সরকারের কোর্টে। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে কয়েকটা মৌলিক সংস্কার জরুরি শেখ হাসিনাসহ তার সব দোসরের বিচার, সংবিধান সংস্কার ও বিচার বিভাগের সংস্কার। তিনি বলেন, সংস্কার নিয়ে বিএনপি, এনসিপি ও জামায়াতের সঙ্গে বেশিরভাগই মিল রয়েছে। ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত সংস্কারের ১৬৬টির মধ্যে ১৩৩টিই একমত সবাই। জুনে সংস্কার বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে আবারও সব দলের সঙ্গে সরকারের বৈঠক করার কথা রয়েছে। সেখানে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হবে। বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে গণভোট, গণপরিষদ ভোট, সরাসরি পার্লামেন্ট ভোট। তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী চাচ্ছে গণভোটের মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাবগুলো গৃহীত হোক। এনসিপি চাচ্ছে আগে গণপরিষদ গঠনের জন্য ভোট হোক। সেই গণপরিষদ সংস্কার প্রস্তাব পাস করুক। তিনি বলেন, প্রধানত দুটি বিষয়ে একমত হতে পারেনি। সেটা হচ্ছে পর পর দুই বারের বেশি একজন ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না এই প্রস্তাবে এনসিপিও আমাদের সাথে একমত। তবে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, জনগণের আকাঙ্ক্ষাই হলো স্থানীয় নির্বাচন আগে হোক। আমরা জনগণের এ আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে একাত্বতা প্রকাশ করেছি। এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, আমরা চাই, গণপরিষদ নির্বাচন হোক। প্রথমে গণপরিষদ নির্বাচন হতে হবে। প্রকাশ্যে যে যাই বলুক, পর্দার আড়ালে জোর কদমে শুরু হয়েছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স