আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নিরবচ্ছিন্ন ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করতে একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত বৃহস্পতিবার এক সার্কুলারের মাধ্যমে এই নির্দেশনা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সার্কুলারে বলা হয়েছে, ঈদের ছুটির সময় গ্রাহকসেবা অব্যাহত রাখতে প্রতিটি ব্যাংকের এটিএম বুথে পর্যাপ্ত নগদ অর্থ সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে এটিএম বুথগুলোতে ত্রুটি দেখা দিলে দ্রুত সমাধান এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বুথ পরিদর্শনে যেতে হবে। এছাড়া, ক্রেতা-বিক্রেতার লেনদেনের সুবিধার্থে পয়েন্ট অব সেল (পিওএস) সার্ভিস চালু রাখতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি কিউআর কোড পেমেন্ট, ইন্টারনেট ব্যাংকিং এবং মোবাইল ব্যাংকিং সেবাও সার্বক্ষণিকভাবে সচল রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানিয়েছে, মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টদের কাছে পর্যাপ্ত নগদ টাকার সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে, কারণ ঈদ মৌসুমে এই সেবার ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। একইসঙ্গে সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করতে এবং যেকোনও ধরনের জালিয়াতির তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে গ্রাহকদের জানাতে বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ঈদে ব্যাংকিং সেবা যাতে বিঘ্ন না ঘটে, তা নিশ্চিত করতেই এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই, নগদ অর্থ উত্তোলন থেকে শুরু করে সব ধরনের ডিজিটাল লেনদেন নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হোক। দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় গত কয়েক বছর ধরে ডিজিটাল লেনদেনের উপর নির্ভরতা বাড়ছে। তাই ঈদের মতো উৎসবমুখর সময়ে গ্রাহকদের সুবিধা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ ধরনের উদ্যোগকে সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
কোরবানির হাট এলাকায় ব্যাংক খোলা থাকবে রাত ১০টা পর্যন্ত: পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয়ের নিরাপদ আর্থিক লেনদেন নিশ্চিত করতে রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরের পশুর হাট সংলগ্ন এলাকায় ব্যাংকের শাখা ও উপশাখা খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একইসঙ্গে এসব শাখায় সান্ধ্য ব্যাংকিং কার্যক্রম চালুর নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে। সার্কুলারে বলা হয়েছে, আগামী ৩ জুন থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোর ব্যাংক শাখা ও উপশাখাগুলো খোলা রাখতে হবে। এর আওতায় থাকবে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অধীন পশুর হাটসংলগ্ন এলাকা। নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, এসব এলাকায় অস্থায়ী ব্যাংক বুথও স্থাপন করতে হবে, যেখানে নগদ অর্থ জমা ও উত্তোলনের পাশাপাশি নতুন হিসাব খোলার সুযোগও থাকবে। সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের জন্য বিশেষ ভাতা দেওয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ভাষ্য, এ পদক্ষেপের ফলে কোরবানির পশুর হাটে নগদ অর্থ ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। ফলে ক্রেতা-বিক্রেতারা ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশে নির্বিঘ্নে লেনদেন করতে পারবেন। সান্ধ্য ব্যাংকিং চালু রাখার নির্দেশ পাওয়া এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে- রাজধানীর উত্তরা, দিয়াবাড়ি, ভাটারা সুতিভোলা, খিলক্ষেত মাস্তুল, মোহাম্মদপুর বছিলা, গাবতলী, মিরপুর-৬, বনরূপা আবাসিক এলাকা, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সংলগ্ন মাঠ, খিলগাঁও রেলগেট, পোস্তগোলা, ধোলাইখাল, রহমতগঞ্জ, শ্যামপুর কদমতলী, কমলাপুর, আমুলিয়া এবং চট্টগ্রামের সাগরিকা এলাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, ঈদকেন্দ্রিক বিপুল পরিমাণ নগদ লেনদেন নির্বিঘ্ন ও সুরক্ষিত করতে এ উদ্যোগ কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

ঈদের ছুটিতে নিরবচ্ছিন্ন ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিতে একগুচ্ছ নির্দেশনা
- আপলোড সময় : ৩১-০৫-২০২৫ ০৫:৫২:৪৯ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ৩১-০৫-২০২৫ ০৫:৫২:৪৯ অপরাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ