ঢাকা , শনিবার, ৩১ মে ২০২৫ , ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
আমতলীতে শহিদ রাষ্টপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যু বার্ষিকীতে সেচ্ছায় রক্তদান ও আলেচনা সভা মগবাজারে কুপিয়ে ব্যাগ ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেফতার ৩ ২ জুন বাজেট ঘোষণা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিহত বাংলাদেশের জন্য জাপান গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার : প্রেস সচিব বাড়ছে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা সরকারের আশ্বাসে প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ডিসেম্বরের আগেই জাতীয় নির্বাচন দেয়া সম্ভব -তারেক রহমান দেশে গণতন্ত্রের নিরাপদ যাত্রা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে : খালেদা জিয়া নির্বাচন ইস্যুতে এনসিপির সমালোচনায় ববি হাজ্জাজ আনু মুহাম্মদের স্ট্যাটাসে আসিফ নজরুলের বিস্ময় প্রকাশ জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ উত্তাল নগর ভবনে পা রাখলেন ইশরাক আরও উজ্জীবিত আন্দোলনকারীরা সচিবালয়ে কর্মচারীদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা প্রশাসনে ১০ মাসেও ফেরেনি শৃঙ্খলা ভারী বৃষ্টিতে বন্যার শঙ্কা শেখ হাসিনার আমলে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে একসঙ্গে কাজ করবে সরকার, ইসি ও জাতিসংঘ মিডিয়ার হেডলাইন দেখে মন্তব্য করা যায় না-ইশরাক ইস্যুতে সিইসি নানামুখী চাপে দেশের অর্থনীতি
বিচারিক হত্যাকাণ্ডের’ বিচার চাইলেন এটিএম আজহার

ফাঁসির জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম

  • আপলোড সময় : ২৯-০৫-২০২৫ ১০:১০:৪৮ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৯-০৫-২০২৫ ১০:১০:৪৮ অপরাহ্ন
ফাঁসির জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের নামে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ‘সাজানো মামলায় বিচারিক সকল হত্যাকাণ্ডে’ জড়িত সকলের বিচার ও শাস্তি দাবি করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা যেখানে যে পর্যায়ে জড়িত তাদের সবাইকে আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক। তা নাহলে খারাপ সংস্কৃতি চালু থাকবে, এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, ২০১৯ সালে আদেশ হওয়ার পর ফাঁসির জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম। গতকাল বুধবার সকালে ১৪ বছর কারাভোগের পর বেরিয়ে এসে শাহবাগ চত্বরে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এরআগে গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় রাজধানীর মগবাজারের আল ফালাহ মিলনায়তনে তার মুক্তি উপলক্ষ্যে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামী। সেখানে তিনি স্মৃতিচারণা করে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মী ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দদের উদ্দেশ্যে বলেন, আলহামদুলিল্লাহ আমি শারীরিক এবং মানসিকভাবে ভালো আছি। বয়সে বার্ধক্যে উপনীত হলেও আমি চিন্তায় চেতনা এখনো যুবক।
সদ্য কারামুক্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম স্মৃতিচারণা করে বলেছেন, ২০১৯ সালে আদালত যখন ফাঁসির হুকুম দিলেন তখন থেকেই আমি প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম। ফাঁসির মঞ্চে উঠে আল্লাহর কাছে হাজির হব। আর এটাই আমার জন্য সহজ পথ। কোনো ধরনের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছাড়াই আমি সবার কাছ থেকে কিন্তু বিদায় নিয়েছিলাম। আমার কাছে যার যে আমানত ছিল দিয়েও দিয়েছিলাম।
এদিন শাহবাগ চত্বরে আয়োজিত সংবর্ধনা মঞ্চে দেয়া বক্তব্যে আজহারুল ইসলাম আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। বারবার তার কণ্ঠ থেমে যাচ্ছিল। ভারী কণ্ঠে তিনি বলেন, প্রায় ১৪ বছর পর আমি আজ ছাড়া পেলাম। আমি এখন মুক্ত। আমি এখন স্বাধীন, আলহামদুলিল্লাহ। আমি এখন স্বাধীন দেশের একজন স্বাধীন নাগরিক। আল্লাহ যদি তৌফিক দেন, অবশ্যই বাকি জীবন আপনাদের সাথেই থাকবো ইনশাআল্লাহ।
এটিএম আজহার বলেন, স্বৈরাচার আওয়ামী সরকার জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতাদের সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে হত্যা করেছে। তাদের সঙ্গে জুডিশিয়াল কিলিং করা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী সাবেক আমির শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, শহীদ আলী আহসান মোহাম্মদ মোজাহিদ, শহীদ মোহাম্মদ কামরুজ্জামান-আব্দুল কাদের মোল্লাসহ নিরপরাধ নেতৃবৃন্দকে জুডিশিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে। সবচেয়ে দুঃখজনক হলো সর্বশেষ বিশ্ববরেণ্য মোফাস্সেরে কোরআন আল্লামা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদীকেও হত্যা করা হয়েছে। আমি তাদের সবাইকে স্মরণ করছি। সেইসঙ্গে এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িত সকলের বিচার দাবি করছি। আজহারুল ইসলাম বলেন, এতদিন ন্যায়বিচার ছিল না, এখন ন্যায় বিচারের মধ্য দিয়ে সব অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। আমাকে মিথ্যা মামলা, মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসির দণ্ড দেয়া হয়েছিল। শুধু জামায়াতে ইসলামী করার কারণেই আমাকে এই মানবতাবিরোধী মামলার মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়। তিনি বলেন, আমি প্রায় ১৪ বছর কারাগারে থাকার পর আজ সকালে মুক্তি পেলাম। আমি এখন মুক্ত, আমি এখন স্বাধীন। এই স্বাধীন দেশে স্বাধীন নাগরিক এখন।
মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাসের জন্য উচ্চ আদালতকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, তারা (আদালত) ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় একটা অনন্য ভূমিকা পালন করছেন। আদালতকে ব্যবহার করা হয়েছে। আশা করছি, সামনের দিনগুলোতে সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার পাবেন।
এর আগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাস পেয়ে সকাল ৯টা ৫ মিনিটে মুক্তি পান জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম। বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তিরত অবস্থায় কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাকে মুক্তি দেয়া হয়। পরে তাকে হাসপাতাল থেকে একটি কালো রঙের গাড়িতে করে হাসপাতাল থেকে বের করে আনা হয়। এসময় জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আজকে বক্তব্য দেয়ার সময় নয়। আমি শুধু আল্লাহ পাকের শুকরিয়া আদায় করি, যাকে অন্যায়ভাবে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে যার ওপর জুলুম করা হয়েছে, আল্লাহ তাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন, সবাই এই মজলুম ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন। তিনি যেন সুস্থ থেকে জাতির প্রয়োজনে দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখতে পারেন।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স