ঢাকা , শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫ , ২০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
এক্সপ্রেসওয়েতে অবরোধ যানজট-ভোগান্তি বরিশালে সাবেক মেয়রসহ ১৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তে দুদক ১৪ দিনে সেনাবাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার ৫৬২ ডিএই’র পেঁয়াজ বীজ সরবরাহ করেনি বঙ্গ এগ্রোটেক ঘুষ লেনদেনের ভিডিও ভাইরাল এসআই প্রত্যাহার মুরাদনগরে ২ সন্তানসহ মাকে পিটিয়ে হত্যা স্কুলছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেফতার রাজধানীতে ছুরিকাঘাতে আহত ৩ হাসপাতালের বারান্দায় জন্ম দুই নবজাতকের একজনের মৃত্যু আনুপাতিক ভোট পদ্ধতিতে নেতা তৈরি হবে না- রিজভী দক্ষ শিক্ষক তৈরির ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাবের শঙ্কা সরিষাবাড়ীতে নদী ভাঙনের আতঙ্কে তিন গ্রামের মানুষ ইঞ্জিন সঙ্কটে পূর্বাঞ্চলে রেলযাত্রীদের ভোগান্তি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র গঠনে পরিবর্তনের চেষ্টা করা হচ্ছে-আলী রীয়াজ ভারত-মিয়ানমারের সাথে টানাপোড়েনে বাংলাদেশ দেশ-বিদেশ থেকে ছড়ানো গুজব এক প্রকার অবিরাম বোমাবর্ষণ : ড. ইউনূস ম্যাজিস্ট্রেট তাবাসসুম ঊর্মি বরখাস্ত মধ্যপ্রাচ্যে ঘোষণা দিয়ে মারামারি করে সিলেট ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিদেশিদের বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে নেগোসিয়েশন চলছে-নৌ-উপদেষ্টা বিএনপি জনগণের প্রত্যাশার নির্বাচন চায়-তারেক রহমান

রাখাইনে করিডোর নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করবে- কাদের গনি চৌধুরী

  • আপলোড সময় : ১৯-০৫-২০২৫ ১১:৪১:২৭ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৯-০৫-২০২৫ ১১:৪১:২৭ অপরাহ্ন
রাখাইনে করিডোর নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করবে- কাদের গনি চৌধুরী
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, ‘মানবিক করিডোর’ দেয়ার ব্যাপারে সরকার যে ‘নীতিগত সিদ্ধান্ত’ নিয়েছে তাতে দেশের ‘স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকির’ মুখে পড়বে। তিনি বলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত আসতে হবে জনগণের কাছ থেকে। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত সংসদের কাছ থেকে। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ নয়।
গতকাল সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে মিয়ানমারকে মানবিক করিডোর দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গণশক্তি সভা আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ড. শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদের সভাপতিত্বে সমাবেশে অংশ নেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম মহসিন, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য শাহীন হাসনাত প্রমুখ। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন সাদেকুর রহমান।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, যেসব দেশে মানবিক করিডোর পরিচালিত হয়েছে এমন অনেক জায়গাতেই অভিজ্ঞতা ভালো হয়নি। অনেক জায়গায় নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করেছে। শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন হয়নি এমন জায়গায় বিবদমান কোনো কোনো পক্ষ এ প্যাসেজে আক্রমণ করার নজির আছে। এমনকি অনেক জায়গায় মানবিক করিডোরে হামলায় সিভিলিয়ানের মৃত্যু হয়েছে। আবার কোনো জায়গায় এমন করিডোরে থাকা স্থাপনা উড়িয়ে দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। তাই এমন করিডোরের রাজনৈতিক ও সামরিক অপব্যবহারের ঝুঁকি থাকে। আবার অস্ত্র পাচার এবং দখল করা এলাকায় জ্বালানি চোরাচালানের জন্যও এ করিডোর ব্যবহৃত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
তিনি বলেন, আমাদের বুঝতে হবে মানবিক করিডোরের সফলতা নির্ভর করে অনেকগুলো ফ্যাক্টরের ওপর। যে অঞ্চলে মানবিক করিডোর হবে সেখানকার বিবদমান পক্ষ একমত হলে করিডোর পরিচালনা সহজ হয়। কিন্তু সবাই রাজি না হলে তা ব্যর্থ হয়। আর্মেনিয়া-আজারবাইজান যুদ্ধের (নাগোর্নো-কারাবাখ যুদ্ধ) সময় ১৯৮৯ সালে লাচিন করিডোর স্থাপিত হলেও সেটি দুই বছরের মধ্যেই বন্ধ করে দিয়েছিল আজারবাইজান সরকার। আবার ১৯৯৩ সালে নিরাপত্তা পরিষদের এক প্রস্তাবের মাধ্যমে সেব্রেনিৎসা ছিটমহলকে নিরাপদ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরে ওই বছরেই আরেক প্রস্তাবের মাধ্যমে সারায়েভো, জেপা, গোরাজদে, তুজলা ও বিহাচকেও এর অন্তর্ভুক্ত করে মোট ছয়টি মানবিক করিডোর প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু নিরাপদ এলাকাগুলোকে কীভাবে সুরক্ষিত রাখা হবে তার কোনো রূপরেখা ছিল না। ফলে ১৯৯৫ সাল নাগাদ সেব্রেনিৎসায় গণহত্যার পরিস্থিতি তৈরি হয়। এটি ছিল ইউরোপের ভয়াবহ নৃশংসতার একটি। ইয়েমেনের চলমান যুদ্ধের মধ্যে বারবার এমন করিডোরের আহ্বান জানিয়েও সফল হয়নি জাতিসংঘ। আফ্রিকার কঙ্গোতে ২০০৮ সালে রাষ্ট্রীয় বাহিনী এবং জেনারেল লরেন্ট নকুন্ডার নেতৃত্বাধীন মিলিশিয়া বাহিনীর মধ্যে সশস্ত্র দাঙ্গা চরম আকার ধারণ করলে জাতিসংঘের প্রস্তাবে গোমা অঞ্চলে একটি মানবিক করিডোর খোলার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু সেটি শেষ পর্যন্ত সামরিক নানা বিষয়ে জড়িয়ে ব্যর্থ হয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে করিডোর হলে সেখানে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেখানে আরাকান আর্মি মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে, এখন মিয়ানমার সরকার যদি দেখে এ করিডোরের ফলে আরাকান আর্মি লাভবান হচ্ছে। তখন তারা কি বসে থাকবে? তখনই সমস্যাটা তৈরি হবে। তখন এ করিডোরই আমাদের জন্য বিপদ ডেকে আনবে।
কমরেড সাইফুল হক বলেন, রাখাইন রাজ্যে জাতিসংঘের মানবিক করিডোর মূলত একটি ভূরাজনৈতিক পন্থা। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামরিক হস্তক্ষেপের একটি ভিত্তি গড়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। এতে বাংলাদেশের জন্য দীর্ঘমেয়াদে কৌশলগত ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। তিনি বলেন, রাখাইনে নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার চিন্তা চালু হয়েছে, যেখানে শুধু মানবিক সহায়তা নয়, বরং একটি নিয়ন্ত্রিত এলাকা তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের সামরিক অংশগ্রহণের জন্য আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি হতে পারে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স