ঢাকা , সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫ , ৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
নগর ভবন খুলে দেবেন ইশরাকের সমর্থকরা এভাবে চলতে থাকলে কিয়ামত পর্যন্ত শতভাগ ঐকমত্য হবে না : নুর কিছু বিষয় ‘অমীমাংসিত’ সব দলকে ছাড় দেয়ার আহ্বান আলী রিয়াজের প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নিয়ে একমত জামায়াত-এনসিপি সায় নেই বিএনপির সর্বোচ্চ ১০ বছর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন প্রধানমন্ত্রী সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়ল ১০ হাজার কোটি টাকা ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন যুক্তরাষ্ট্র কি ইরাকের ভুল এবার ইরানে করছে-প্রশ্ন চীনের আমরা ইসরায়েলের জন্য সব হুমকি গুঁড়িয়ে দিয়েছি-ট্রাম্প পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রশ্ন তুললেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা যুক্তরাষ্ট্রের নির্লজ্জ আগ্রাসন এর নিন্দা জানিয়েছে হামাস যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় সংঘাতের তীব্রতা বাড়ার শঙ্কা জাতিসংঘের চট্টগ্রামে করোনায় ২ জনের মৃত্যু কুমিল্লায় কোভিড ও ডেঙ্গুতে ঝরলো ২ প্রাণ সড়কে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল এইচএসসি পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে ঢাকা বোর্ডের সামনে বিক্ষোভ ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের তারিখ নিয়ে সবার মধ্যে স্বস্তি এসেছে- আমির খসরু ভারতীয় ‘রিপাবলিক বাংলা’ টিভির সম্প্রচার বন্ধে হাইকোর্টের রুল ১৮ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করলো বিএসএফ
ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স

রংপুরে ২৯ হাজার গ্রাহকের ১২১ কোটি টাকা লোপাট

  • আপলোড সময় : ১২-০৫-২০২৫ ০৪:২৭:১৮ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১২-০৫-২০২৫ ০৪:২৭:১৮ অপরাহ্ন
রংপুরে ২৯ হাজার গ্রাহকের ১২১ কোটি টাকা লোপাট
ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে জমা করা রংপুর জোনের প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহকের ১২১ কোটি টাকার হদিস মিলছে না। বছরের পর বছর সংশ্লিষ্টদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেও মেয়াদোত্তীর্ণ বিমার টাকা না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন গ্রাহকরা। সম্প্রতি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া বিমার টাকা লভ্যাংশসহ পেতে রংপুর বিভাগীয় অফিসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনাও ঘটে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিদিনই গ্রাহকরা তাদের মূলধন ও লভ্যাংশ তুলতে কার্যালয়ে আসছেন। কিন্তু পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় তাদের পাওনা পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। শুধু রংপুর নয়, সারাদেশে দুই লাখ ৪৩ হাজার ৯৫৩ গ্রাহকের জমা করা প্রায় এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা গত ৫ আগস্টের আগে লোপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত একক ও সর্বজনীন বীমার ডিভিশনভিত্তিক অপরিশোধিত বিমা দাবির এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সারাদেশে ফারইস্টের লোপাট হওয়া টাকার পরিমাণ এক হাজার ৫৭৯ কোটি ৭৯ লাখ ৯৪ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা। এরমধ্যে রংপুর জোনে ২৯ হাজার ৫৯৬ গ্রাহকের রয়েছে ১২১ কোটি ৯১ লাখ ১১ হাজার ৪০৩ টাকা। ২০২২ সালে ১২ বছর মেয়াদি বিমার মেয়াদ শেষ হয়েছে গঙ্গাচড়া উপজেলার রাশেদা বেগমের। তিন বছর ঘুরে আজ পর্যন্ত টাকা পাননি। সেই টাকার খোঁজে ছেলে রাশেদুজ্জামানকে নিয়ে বিমা কোম্পানিটির বিভাগীয় কার্যালয়ে গেলে ঢাকায় যাওয়ার সুপারিশপত্র হাতে ধরিয়ে দেন কর্মকর্তারা। রাশেদুজ্জামান বলেন, মা অনেক কষ্ট করে এখানে টাকা জমিয়েছেন, যাতে জমানো টাকা তুলে কোনো কিছু করতে পারেন। কিন্তু তিন বছর ধরে টাকা দিচ্ছে না। শুধু আশ্বাস দিচ্ছে, টাকা পাবো বলে। কিন্তু কবে পাবো তা বলে না। কিছুদিন আগে জমি বিক্রি করে টাকা দিতে চেয়েছিল। এখন ঢাকায় যেতে বলছে। আমরা কী করবো বুঝতে পারছি না। ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের গ্রাহক মুদিদোকানি মো. আলম বলেন, আগে দোকান করে খেতাম। এখন বয়স হয়েছে, কিছু করতে পারি না। বৃদ্ধ বয়সে যাতে ভালো করে চলতে পারি, তাই বিমা করেছিলাম। কষ্ট করে না খেয়ে ১০ হাজার করে টাকা দিতাম। কিন্তু তিন বছর আগে মেয়াদ শেষ হয়েছে। তখন থেকে টাকার জন্য ঘুরছি। টাকা দিচ্ছে না। রংপুর শহরের কেরানীপাড়ার সেতারা বসুনিয়ার বিমার মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২৩ সালে। দুই বছর ধরে ঘুরেও টাকা ফেরত পাচ্ছেন না বলে জানান তিনি। বিমা কোম্পানিটির একাধিক শাখা ব্যবস্থাপক জানান, তাদের অধীন পলিসি উত্তীর্ণ হওয়ায় গ্রাহক যে হারে টাকা উত্তোলন করতে চাচ্ছেন, তা পুরোটাই একসঙ্গে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। নতুন ম্যানেজমেন্ট আসার পর গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। সে কারণে অল্পসংখ্যক হারে (কালেকশন হওয়ার ওপর নির্ভর) গ্রাহকের টাকা ফেরত দেয়া হচ্ছে। তবে কবে এই সংকট দূর হবে, তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। কোম্পানির রংপুর ডিভিশনাল অফিসের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আব্দুল কাদের বীর বলেন, সংকট আমার ব্রাঞ্চেই বেশি। গত সরকারের আমলে থাকা ম্যানেজমেন্টের সময় টাকার সমস্যা হয়েছে। নতুন ম্যানেজমেন্ট এসে কিছু সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করছে। যেসব গ্রাহকের টাকা কম, তাদের টাকা দেয়ার ব্যবস্থা করছি। তিনি আরও বলেন, ব্যাংকে যে ডিপোজিট, এফডিআর ছিল সেগুলো বন্ধক রেখে ঋণ নিয়ে পরিশোধ করেনি। জমি বেচাকেনাসহ নানা দুর্নীতি করেছেন আগের মালিকেরা। সেই দুর্নীতির ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে গ্রাহকদের। গ্রাহকদের চাপ বাড়ায় আমরা ঢাকায় যোগাযোগ করেছি। মালিকপক্ষ বলেছে, কারও টাকা মার যাবে না। সময় লাগবে দুই বছর। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গ্রাহকদের টাকা পরিশোধে বিমা কোম্পানিটির দেশের বিভিন্ন জায়গায় থাকা সম্পত্তি বিক্রির জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও তা কেউ কিনতে সাড়া দেননি। তাই গ্রাহকদের টাকা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। শুধু রংপুর নয়, সারাদেশে দুই লাখ ৪৩ হাজার গ্রাহকের এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা পাওনা আছে। কোম্পানির ভারপ্রাপ্ত মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শহিদুল ইসলাম বলেন, গত ১২ বছর কোম্পানি লোপাট হয়েছে। ফলে গ্রাহকের বিমা দাবি দেয়া সম্ভব হয়নি। আমি কিছুদিন হলো দায়িত্ব নিয়েছি। তারপর থেকে ২০০ কোটি টাকা বিমা দাবি পরিশোধ করা হয়েছে। গ্রাহকের টাকা পরিশোধের জন্য পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। ধীরে ধীরে পরিশোধ করা হবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স