বরিশাল প্রতিনিধি
প্রায় ৫শ’ বছরের একটি শিমুল গাছকে ঘিরে রয়েছে নানান অলৌকিক ঘটনা। গাছটির নিচে অনেকেই মনের বাসনা পূরণের জন্য মোমবাতি ও আগরবাতি জ্বালিয়ে পূজা আর্চনা করেন। আবার অনেকেই অলৌকিক এ গাছটি দেখতে এসে গাছে তাদের প্রিয়জনের নাম লিখে রাখেন। আগত ভক্তদের উদ্দেশ্য একটাই সৃষ্টিকর্তা যেন তাদের মনবাসনা পূরন করেন। অলৌকিক এ গাছটির অবস্থান বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলা শহর থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার দুরত্বের ব্রাহ্মণবাড়ি গ্রামে। বরিশাল জেলার মধ্যে সবচেয়ে বৃহত্তম এ শিমুল গাছটি ঘিরে রয়েছে নানা কল্পকাহিনী। তেমনি এ গাছটি বহন করছে নানা ঐতিহ্য। স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, গাছটির বয়স পাঁচ থেকে ছয়শ’ বছর। আর এই গাছটির রয়েছে নানা অলৌকিক ঘটনা। প্রায় ২৫ শতক জমির ওপর দাঁড়িয়ে থাকা আনুমানিক ১৫০ ফুট লম্বা শিমুল গাছটির গোড়ার পরিধি প্রায় ৫৫ গজ। গাছটির গোড়ায় দাঁড়িয়ে কখনো মনে হয় পাহাড়ের পাদদেশে দাঁড়িয়ে থাকার অনুভূতি। আলোচিত এই গাছটি দেখতে প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও পাশ্ববর্তী জেলা থেকে ছুটে আসেন অনেক দর্শনার্থীরা। গাছটিকে ঘিরে প্রচলিত রয়েছে নানান কল্পকাহিনী। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বিভিন্ন এলাকার লোকজন গাছটি একনজর দেখার জন্য প্রতিনিয়ত এসে ভিড় করেন।
তারা মনে করেন এ গাছে অলৌকিক কোন কিছু আছে। তাই মনের বাসনা পুরন করার জন্য দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন দর্শনার্থীরা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই শিমুল গাছটি কাটার জন্য অনেকেই চেষ্টা করেছেন কিন্তু কোন অবস্থাতেই গাছটি কাটা সম্ভব হয়নি। যারা গাছটি কাটতে এসেছিলো তারাই অসুস্থ হয়েছেন। স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, তাদের বাবা ও দাদার কাছ থেকে তারা শুনেছেন এই শিমুল গাছটির বয়স কমপক্ষে ৫শ’ বছর। প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো গাছটি বেড়ে উঠেছে প্রাকৃতিকভাবেই। একসময় বড় শিমুল গাছটি পত্র-পল্লবে এতোটাই ঘণ ছিল যে, এর নীচে রোদ, বৃষ্টি ও কুয়াশা পড়তো না। প্রচন্ড গরমের সময়ও গাছের নীচে পাওয়া যেত হিমেল শান্তির পরশ। পথিক ও কৃষক থেকে শুরু করে নানা পেশা ও শ্রেণির লোকজন গাছের নিচে বিশ্রাম নিতেন। এখন গাছের পত্র-পল্লব আগের চেয়ে অনেকটা কমে গেছে। তবে নিচের অংশের (গাছের গোড়া) পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে। গাছটি যার জমিতে রয়েছে তিনি তার পৈত্রিক সম্পত্তি হিসেবে পেয়েছেন। তিনি আবার তার বাবার কাছ থেকে ওই জমি পেয়েছেন। এভাবেই চলে আসছে শতাব্দী থেকে শতাব্দী ধরে। কিন্তু সঠিকভাবে কেউ বলতে পারছেন না এ শিমুল গাছটির জন্মলগ্নের সঠিক ইতিহাস। দর্শনার্থী সৈকত বাড়ৈ বলেন, আমি লোকমুখে এ গাছের কথাশুনে আগৈলঝাড়া উপজেলা থেকে একনজর গাছটি দেখতে এসেছি। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের গাছ আমি অতীতে কখনও দেখিনি। কল্পকাহিনী ও অলৌকিক ঘটনা যাহাই হোক না কেন এ গাছটি বরিশাল অঞ্চলের সবচেয়ে পুরাতন একটি গাছ। যা গোটা বরিশালের ঐতিহ্য বহন করে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
